খুলনায় বিভাগীয় সমাবেশের লোকসমাগম নিয়ে বিএনপি উচ্ছ্বাস দেখালেও এ নিয়ে কটাক্ষ করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘এই সমাবেশ দেখে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের কাতুকুতু লেগেছে।’
গত শনিবারের সমাবেশ নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন হাছান মাহমুদ।
এই সমাবেশের আগে খুলনা ও আশপাশের জেলাগুলোতে পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করা হয়, যা সমাবেশ শেষে তুলে নেয়া হয়। বিএনপির অভিযোগ, তাদের সমাবেশ ঘিরে সরকারের নির্দেশে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে।
সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ছবি: নিউজবাংলা
২০০৫ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে ছিল, তখনও এই বিষয়টি দেখা গেছে। তখন সরকারে থাকা বিএনপির পক্ষ থেকে এ ধরনের বক্তব্যগুলো আসত।
ধর্মঘট নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতারা বলেছেন বাস-লঞ্চ বন্ধ করেছে সরকার। বাস-লঞ্চের মালিকরাই কিন্তু ধর্মঘট করেছে, এখানে সরকার বা সরকারি দলের কোনো হাত নেই।
‘বাস মালিকরা ধর্মঘটের কারণ হচ্ছে তারা (বিএনপি) ১৩-১৪ সালে যেভাবে বাসে আগুন দিয়েছিলেন, জীবন্ত শ্রমিক পুড়িয়ে হত্যা করেছেন এ জন্য মালিকরা উদ্বিগ্ন ছিলেন। এ কারণেই তারা ধর্মঘট ডেকেছেন।’
বিএনপি বলছে, সরকার বাধা দিয়েও খুলনায় জনস্রোত ঠেকাতে পারেনি। লাখো মানুষ উপস্থিত হয়ে এই সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে।
তবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে ওনারা দুই হাজার মানুষের সমাবেশ করেন তো। যখন ১০-১৫ হাজার মানুষ দেখেছে তখন একটু খেই হারিয়ে ফেলেছে, এটিই হলো ঘটনা।
‘বিএনপি নেতারা বলছেন যে তাদের সমাবেশ দেখে এই হয়েছে সেই হয়েছে। আমাদের কর্মীরা বলছেন, আমাদের একটু কাতুকুতু লেগেছে। ভয় লাগা তো দূরের কথা আমাদের একটু কাতুকুতু লেগেছে।’
এই সমাবেশ ঘিরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার যে অভিযোগ এনেছে দলটি, তারও জবাবে উল্টো অভিযোগ আনেন মন্ত্রী। বলেন, ‘বিএনপি খুলনায় সমাবেশ করেছে। এটি করতে গিয়ে তারা রেলস্টেশন ভাঙচুর করেছে, দৌলতপুরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা করেছে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে জাতীয় সংসদে ১০টি আসনও আওয়ামী লীগ পাবে না বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটিরও জবাব দেন হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সেখানে বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে নাকি আওয়ামী লীগ ১০টি আসনও পাবে না। এ আশঙ্কা যেন বিএনপির বেলাত না ঘটে। সেটিই আমার প্রত্যাশা।
‘কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস হচ্ছে অতীতে তারা যেটা বলেছিল, তাদের ক্ষেত্রেই সেটি ঘটেছে। আওয়ামী লীগের বেলায় নয়।’
দিনের বেলায় বিদ্যুৎ ব্যবহার বন্ধ রাখার বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী যে বক্তব্য রেখেছেন, তার জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘তৌফিক-ই-ইলাহী সাহেব যেটা বলেছেন, এটি তার ব্যক্তিগত কথা। সরকার এমন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। তিনি কেন বলেছেন এটি তিনিই বলতে পারবেন।’