কুড়িগ্রামের চররাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ওঠা মেসেঞ্জারে অশোভনীয় চ্যাটিং প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ‘তিরস্কারের দণ্ড’ দিয়েছে সরকার।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে সম্প্রতি এ তথ্য জানানো হয়।
অমিত চক্রবর্তী নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার ইউএনও হিসেবে কর্মরত থাকার সময় এক নারী এসিল্যান্ডের সঙ্গে এ আচরণ করেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অমিত চক্রবর্তী ২০২১ সালের ২৫ জুলাই থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে কর্মরত থাকাকালে তার অধীন কর্মরত একজন সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগ পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে ফেসবুক-মেসেঞ্জারে অশোভন কথোপকথন, ওই নারী কর্মকর্তার স্বামী যেন বদলি হয়ে নীলফামারী জেলায় না আসেন সে বিষয়ে চাপ প্রয়োগসহ নানা অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় মামলা করে কৈফিয়ত তলব করা হয়। একই সঙ্গে তিনি ব্যক্তিগত শুনানি চান কি না তা জানতে চাওয়া হয়।
অমিত চক্রবর্তী ২০২১ সালের ২৩ নভেম্বর লিখিত জবাব জমা দেন। তিনি ব্যক্তিগত শুনানির জন্য আবেদন করলে চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি তার ব্যক্তিগত শুনানি গ্রহণ করা হয়।
ব্যক্তিগত শুনানিকালে সরকারপক্ষের নথি উপস্থাপনকারী কর্মকর্তা নীলফামারী জেলা প্রশাসনের উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) মো. আব্দুর রহমান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অভিযোগ বিবরণীর বক্তব্য সমর্থন করে বলেন, ‘একজন নারী জুনিয়র সহকর্মীর সঙ্গে এমন অশালীন ও দৃষ্টিকটু আচরণ কাঙ্ক্ষিত নয়।’
অন্যপক্ষে অভিযুক্ত অমিত চক্রবর্তী তার লিখিত জবাব সমৰ্থন করে অভিযোগ অস্বীকার করেন। বিভাগীয় মামলার দায় থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘গত ২৭ সেপ্টেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন জমা দেন। জমা দেয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’ করার অভিযোগে করা বিভাগীয় মামলার অভিযোগনামায় বর্ণিত ‘অসদাচরণ’ এর পর্যায়ভুক্ত অভিযোগগুলোর মধ্যে অভিযোগকারীর সঙ্গে ফেসবুক-মেসেঞ্জারে অশোভনীয় কথোপকথন/চ্যাটিং করার মাধ্যমে অভিযুক্ত কর্মকর্তার অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
‘বিধিমালা অনুযায়ী এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই অমিত চক্রবর্তীকে তিরস্কারসূচক লঘুদণ্ড দেয়া হলো।’