ঘূর্ণিঝড় 'সিত্রাং'-এর কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বরিশাল বিমানবন্দরে সোমবার সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ থাকবে।
সোমবার দুপুরে এমন নির্দেশ দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় রানওয়ে ও ফ্লাইট বন্ধের এমন নির্দেশনার সময়সীমা আরও বাড়ানো হতে পারে।
বেবিচকের এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষগুলোকে এরই মধ্যে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
নির্দেশনায় জানানো হয়েছে, ‘আবহাওয়া পূর্বাভাসের প্রেক্ষিতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের সম্ভাব্য প্রভাবের বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে উপকূলীয় অঞ্চলের তিনটি বিমানবন্দরে (শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম; কক্সবাজার ও বরিশাল বিমানবন্দর) উড্ডয়ন এবং সার্বিক নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে উড্ডয়ন/অবতরণ কার্যক্রম রোববার ৩টা হতে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত বন্ধ রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
‘আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনা সাপেক্ষে পরবর্তিতে উড্ডয়ন কার্যক্রম পুনরায় চালু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’
এর আগে সিত্রাংয়ের প্রভাবে বরিশাল ও ভোলায় সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক এবং ভোলা নদীবন্দর কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম সোমবার সকালে নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘সিত্রাংয়ের প্রভাবে সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। দমকা হাওয়াও রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত সব রুটের লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।’
সেই সঙ্গে সিত্রাং মোকাবিলায় সব পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে বিআইডব্লিউটিএ।
সোমবার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মোবারক হোসেন বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ মোকাবিলায় প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সাগর এখন উত্তাল। কক্সবাজার উপকূলে ঝড়ো বৃষ্টি হচ্ছে, সঙ্গে বাড়ছে বাতাসের গতিও। পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারের দিকে আরও এগিয়ে এসেছে।
ইতোমধ্যে সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র, মেডিক্যাল টিম ও স্বেচ্ছাসেবক টিম।
জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব মোকাবেলায় জেলায় ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেখানে পাঁচ লক্ষাধিক লোকের ধারণক্ষমতা রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ মুহুর্তে উপকূলের লোকজনকে সরিয়ে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা হাতে রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে দশ হাজার স্বেচ্ছাসেবক এবং ৮৫টি মেডিক্যাল টিম। সার্বক্ষণিক মোবাইল টিম আগে থেকেই প্রস্তুত। মজুদ রাখা হয়েছে শুকনো খাবারও।’