বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সিত্রাংয়ে দুর্ভোগে নিম্ন আয়ের মানুষ

  •    
  • ২৪ অক্টোবর, ২০২২ ১৩:৩৪

সোমবার সকাল ৮টায় নগরীর কান্দিরপাড় গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির মধ্যেই কোদাল-টুকরি নিয়ে বসে আছেন জনা বিশেক দিনমজুর। তাদের কেউ কাজ পাননি। শার্ট-প্যান্ট পরা কাউকে দেখলেই এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করছেন, ‘ভাই লোক লাগবো নি?’ এমন প্রশ্নের উত্তরে যখন লাগবে না বলেন, তখন মন খারাপ করে এদিক-ওদিক তাকিয়ে থাকেন দিনমজুরেরা।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে কুমিল্লায় রোববার বিকেল থেকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। সোমবার সকালে শুরু হয়েছে মাঝারি বৃষ্টি। এমন বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন জেলার নিম্ন আয়ের মানুষজন।

বৃষ্টি উপলক্ষে যেখানে খিচুড়ি-ডিম ভাজি কিংবা ভুনা মাংসের ছবিতে সয়লাব সোশাল মিডিয়া সেখানে কুমিল্লা নগরীর নিম্ন আয়ের মানুষজন প্রাণন্তর চেষ্টা করছেন শুধু ভাত-তরকারির জন্য।

বৃষ্টি উপেক্ষা কেউ সবজি বিক্রির ভ্যান নিয়ে বেড়িয়েছেন, দিনমজুররা বেড়িয়েছেন কোদাল ও টুকরি নিয়ে। তবে বৃষ্টির কারণে কেউ আসেন অর্থের বিনিময়ে তাদের শ্রম কিনতে। তাই জুটেনি কাজ। এতে না খেয়েই দিন পার করতে হবে অনেককে। অনেকেই হতাশা প্রকাশ করেছেন।

সোমবার সকাল ৮টায় নগরীর কান্দিরপাড় গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির মধ্যেই কোদাল-টুকরি নিয়ে বসে আছেন জনা বিশেক দিনমজুর। তাদের কেউ কাজ পাননি। শার্ট-প্যান্ট পরা কাউকে দেখলেই এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করছেন, ‘ভাই লোক লাগবো নি?’

বৃষ্টির তোড়ে নিজেদের ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো পলিথিন মুড়িয়ে রেখেছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন। ছবিগুলো কুমিল্লা ইপিজেডের সামনে থেকে তোলা। ছবি: নিউজবাংলা

এমন প্রশ্নের উত্তরে যখন লাগবে না বলেন, তখন মন খারাপ করে এদিক ওদিক তাকিয়ে থাকেন দিনমজুরেরা। তাদের এমন অসহায় চোখ খুঁজে ফিরে সেই সব লোকজনদের যারা তাদেরকে দৈনিক চুক্তি ভিত্তিতে শ্রমিক হিসেবে নিয়ে যাবেন।

নগরীর ধর্মপুরে থাকেন নীলফামারীর তোহাব মিয়া। দিনমজুরের কাজ করেন। সকালে কান্দিরপাড় এসেছেন। একপাশে কোদাল ও টুকরি রেখে বসে আছেন। একদিন কাজ করলে যা আয় করেন তা থেকে খাবার ও ভাড়া দেয়া শেষে ২ শ টাকা থাকে। এই টাকা জমিয়ে বাড়িতে পাঠান।

তোহাব বলেন, ‘মোর কোন জমি জিরাত নেই। সক্কাল থেকে বসে আছি। কেউতো হামোক নিলো না। আইজ গা কি বেচি খামো তার কোন উপায় নেই।’

তোহাব মিয়ার মতই অবস্থা তাইজুল ইসলাম, মানিক বেওয়াসহ আরও দশ-পনের জনের। তারা আঞ্চলিক ভাষায় জানালেন, এমনি কার্তিকের সময়টা অভাবের। এই সময় রংপুর দিনাজপুর, নীলফামারীসহ উত্তরবঙ্গের বহু জেলা থেকে কুমিল্লাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আসেন কাজের খোঁজে। এ সময় কাজ না পেলে না খেয়েই কাটে তাদের দিন।

সোমবার সকাল ১০টায় নগরীর চর্থা ইপিজেড এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রিকশাভ্যানে কেউবা সবজি, কেউবা বাদাম বুট, শিশুদের কাপড় নিয়ে এসেছিলেন। বৃষ্টির তোড়ে পলিথিন মুড়িয়ে দোকানের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন।

ফেরিওয়ালা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘খবরে দেখলাম কাইলও বৃষ্টি অইবো। আমডার মতো গরিব মানুষডির হইছে জ্বালা। আইজ বেচা হইতো না। কাইলও হইতো না। পুঁজি ভাইঙ্গা খাওন লাগবো।’

জমার টাকা তোলা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় সাত্তার মিয়া বলেন, ‘১৫০ টাকা জমা। তারপর যা আয় হয় তা দিয়া চাউল-ডাউল কিনতে হইবো। সহালে বাইর অইছি। অহনো জমা টেহাডাও তুলতাম পারছি না। রাস্তাঘাডো মানুষ নাই। আল্লায় জানে দিনডা কেমনে যাইবো।’

সকাল সকাল শাক সবজি নিয়ে বসে থেকেও ক্রেতার দেখা পাননি সাইদুল ইসলাম। আক্ষেপ নিয়ে সাইদুল বলেন, ‘রইদ হউক আর মেঘ। আমডার মত গরিবডির অইছে মরণ। বেচা না অইলে তরকারিডি পচবো। কত টেকা লস অইবো কেউ কি আর খোঁজ খবর রাখবো।’

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং নিয়ে কুমিল্লায় দুঃশ্চিন্তার কিছু নেই নেই বলে জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান। তিনি বলেন, ‘আবহাওয়ার খবর রাখছি প্রতিনিয়ত। আমরা ৬০০ প্যাকেট শুকনো খাবার মজুদ করে রেখেছি। প্রয়োজনে আমরা বিতরণ করবো।’

এ বিভাগের আরো খবর