বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের ফলে উপকূলীয় জনমনে আতঙ্ক বাড়ছে। সদরসহ জেলার নয়টি উপজেলায় রোববার সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, শক্তি বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপটি সোমবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হচ্ছে। মঙ্গলবার ভোরের দিকে এটি উপকূল অতিক্রম করবে। এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়া হয়েছে ‘সিত্রাং’।
মোংলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ অমরেশ চন্দ্র ঢালী বলেন, ‘সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি আরও শক্তিশালী হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। এটি আরও শক্তিশালী হলে জেলা জুড়ে ২৪ ও ২৫ অক্টোবর ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
‘মোংলা সমুদ্র বন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি দেখে তখন সংকেত বাড়ানো হবে।’
এদিকে বাগেরহাটে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩৪৪টি আশ্রয় কেন্দ্রসহ স্বেচ্ছাসেক ও মেডিক্যাল টিম। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় রোববার বিকেলে প্রস্তুতি সভা করেছে জেলা প্রশাসন।
সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঘড় সিত্রাং মোকাবেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩৪৪টি আশ্রয় কেন্দ্র। দুর্যোগের সময়ে এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ২ লাখ ৮ হাজার ৪৩০ জন আশ্রয় নিতে পারবে। প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে নগদ ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও ২৯৮ টন চাল মজুদ রয়েছে।
অপরদিকে বাগেরহাটের উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসার খবরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সাগর উত্তাল থাকার পাশাপাশি সকাল থেকে টানা বৃষ্টি হওয়ায় উপকূলীয় এলাকার মানুষ পড়েছে ভোগান্তির মধ্যে। বেশি কষ্টে আছে খেটে খাওয়া মানুষ।
সুন্দরবন সংলগ্ন চিলা ইউনিয়নের বাসিন্দা আলী আজম বলেন, ‘সকাল থেকে মোংলায় বৃষ্টি হচ্ছে। বিভিন্ন খবরে জানতে পারলাম সিত্রাং নামের একটি ঝড় আসছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সাইক্লোন শেল্টারে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।’
শরণখোলা উপজেলার বাসিন্দা শাহিন হাওলাদার বলেন, ‘সিডর ও আইলার মতো ঝড়ে বার বার আক্রান্ত হয়েছে বলেশ্বর নদী সংলগ্ন এই জনপথের মানুষ। তাই নতুন করে সিত্রাং নামের ঘূর্ণিঝড় আসার খবরে এ উপজেলার সাধারণ মানুষ আতঙ্কে রয়েছে।’
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘গভীর নিম্নচাপ ও আমাবস্যার প্রভাবের কারণে সাগরে তিন থেকে পাঁচ ফুট পানি বৃদ্ধি পাবে। এজন্য জেলার উপকূল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ বলেন, ‘আবহওয়া অধিদপ্তরের সিগনাল বৃদ্ধি ও পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। বর্তমানে বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত বন্দরে ১৪টি বাণিজ্যিক জাহাজ ছিল। সব জাহাজের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।