কখনও রাজমিস্ত্রির সহকারী, কখনও বালুঘাটের পাহারাদার, আবার কখনও ডেলিভারিম্যান পরিচয়ে পালিয়ে ছিলেন। আসলে তিনি হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি।
পলাতক অবস্থায় দুটি বিয়েও করেছেন। স্ত্রীর মামলায় জেলও খেটেছেন। ধুরন্ধর এই আসামির নাম রাকিবুল ইসলাম আসাদ।
৩৬ বছর বয়সী রাকিবুল কুষ্টিয়া সদরের আলামপুর দত্তপাড়ার খন্দকার ইউনুস আলীর ছেলে। সাভারের বিরুলিয়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব কুষ্টিয়ার একটি দল।
রোববার রাকিবুলকে গ্রেপ্তারের খবর জানাতে বেলা ১১টায় কুষ্টিয়া কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব। সিরাজগঞ্জ থেকে আসা র্যাব-১২ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মারুফ হোসেন এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। উপস্থিত ছিলেন র্যাব কুষ্টিয়ার কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার ইলিয়াস খানও।
র্যাব জানায়, ২০১৬ সালের ২৯ মার্চ কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জগতি এলাকার অটোরিকশাচালক সুজন সিকদারের মরদেহ পাওয়া যায় ভেড়ামারা উপজেলার সাতবাড়িয়া এলাকার একটি লিচুবাগানে। এ ঘটনায় ওইদিনই একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের ভাই।
এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা তিনজনকে অভিযুক্ত করে ২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দেন।
মামলার বিচারকাজ শেষে গত ৪ অক্টোবর কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালত পলাতক আসামি রাকিবুল ইসলাম আসাদকে মৃত্যুদণ্ড ও অপর দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। পরে আসামিদের গ্রেপ্তারে র্যাবের গোয়েন্দা শাখা নজরদারি শুরু করে।
এরই ধারাবাহিকতায় সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় কুষ্টিয়া র্যাব শনিবার রাতে ঢাকার সাভার উপজেলার বিরুলিয়া এলাকা থেকে রাকিবুলকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব জানায়, সুজন হত্যা মামলায় একবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন রাকিবুল। দেড় বছর জেল খাটার পর জামিনে বেরিয়ে তিনি সাভারের বিরুলিয়ায় আত্মগোপন করেন। সেখানে রাজমিস্ত্রীর সহকারী, বালুঘাটের পাহারাদার এবং সবশেষ কোমল পানীয় কোম্পানির ডেলিভারিম্যান হিসেবে কাজ করতেন।
বিরুলিয়ায় থাকা অবস্থায়ই দুটি বিয়ে করেন রাকিবুল। দ্বিতীয় স্ত্রীর করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় প্রায় ১৩ মাস জেলও খাটেন তিনি।
গ্রেপ্তারের পর তাকে আবারও আদালতে পাঠিয়েছে র্যাব।