বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কুরিয়ারে করে সারা দেশে জাল নোট বিক্রি

  •    
  • ২৩ অক্টোবর, ২০২২ ১৫:৪৮

ফেসবুক মেসেঞ্জারে ক্লায়েন্ট বাছাই করে তাদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিত চক্রটি। তারপর কুরিয়ারে পাঠিয়ে দেয়া হতো জাল নোট। প্রতি ১ লাখ টাকা মূল্যের জাল নোটের দাম ১৫-২০ হাজার টাকা।

জাল টাকা কিনতে গিয়ে প্রতারিত হন। সেই জেদে ফেসবুক, ইউটিউব ও গুগল ঘেঁটে শেখেন জাল টাকা তৈরির পদ্ধতি। নিজের তৈরি করা জাল টাকা ঢাকা থেকে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যেমে পাঠাতেন দেশের বিভিন্ন জায়গায়।

এ চক্রের হোতাসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তাদের কাছ থেকে প্রায় ১ কোটি টাকা সমমূল্যের জাল নোট জব্দ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মাউন হোসেন সাব্বির, মো. পারভেজ, মো. তারেক ও শিহাব উদ্দিন।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার রাজধানীর চকবাজার মিটফোর্ড এলাকা, সিরাজগঞ্জ সদর ও খুলনার খালিশপুর এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৪।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ১০০০, ৫০০, এবং ১০০ টাকার জাল নোট এবং বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানান এটির মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা পরস্পর যোগসাজশে প্রায় এক বছর ধরে ঢাকা, সিরাজগঞ্জ, খুলনা ও যশোরসহ বিভিন্ন এলাকায় জাল নোট তৈরি করে কম দামে বিক্রি করত। এই জাল টাকা কুরিয়ারের মাধ্যমে ঢাকা থেকে পাঠানো হতো। এ ছাড়া এ চক্রের সদস্যরা নিজেরাও বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং দোকান, মাছের আড়তসহ জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় জাল নোট ব্যবহার করত। সাব্বির ছাড়াও এই চক্রের সঙ্গে আরও ১৫-২০ জন জড়িত বলে জানা যায়।

জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাব আরও জানতে পারে, ইউটিউব এবং ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে এই ধরনের জাল টাকা তৈরি ও ব্যবসার প্রতি তারা আকৃষ্ট হয়।

‘জাল টাকা প্রতারক চক্রবিরোধী পোস্ট’ নামে একটি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে সাব্বিরের সঙ্গে এ চক্রের অন্যদের পরিচয় হয়।

পরবর্তীতে তারা জাল নোটের খুচরা ব্যবসা করার পরিকল্পনা নেয়। ফেসবুকে অপর একটি জাল নোট তৈরি চক্রের সঙ্গে সাব্বিরের পরিচয় হয়। চক্রটির কাছ থেকে সাব্বির তিন লাখ টাকার জাল নোট কিনতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এক ব্যক্তিকে ৩৫ হাজার টাকা পাঠায়। কিন্তু চক্রটি তাকে কোনো জাল নোট দেয়নি। প্রতারিত হয়ে সাব্বির নিজেই জাল নোট তৈরির জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়।

মঈন বলেন, “পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারা প্রথমে মেসেঞ্জারে ‘এক্স-ম্যান’ নামে একটি গ্রুপ খুলে জাল টাকা তৈরি-ব্যবসার বিষয়ে তথ্য আদান-প্রদান করে। এই গ্রুপের অ্যাডমিন হিসেবে কাজ করতেন শিহাব। তার মাধ্যমে গ্রেপ্তারকৃত অপর দুই সদস্য পারভেজ এবং তারেকের সঙ্গে সাব্বিরের পরিচয় হয়। পরবর্তীতে তিনি ইউটিউব, ফেসবুক এবং গুগল ঘেঁটে জাল নোট তৈরির বিভিন্ন বিষয়ে কারিগরি জ্ঞান অর্জন করে এবং বিভিন্ন সময়ে জমানো টাকা দিয়ে জাল নোট তৈরির জন্য ল্যাপটপ, প্রিন্টারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম কেনেন।”

র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, “গ্রেপ্তারকৃত সাব্বির জালনোট তৈরির সার্বিক বিষয়ে দক্ষ হওয়ায় সব কিছু তিনি নিজেই পরিচালনা করতেন। যখন জাল নোটের ব্যবসা রমরমা থাকে, তখন চক্রটি দৈনিক ২ লাখের বেশি টাকা মূল্যমানের জাল নোট তৈরি করত। তারা তাদের পূর্বের ফেসবুক গ্রুপ ‘জাল টাকা প্রতারক চক্রবিরোধী পোস্ট’ থেকে কমেন্টস দেখে তাদের সঙ্গে মেসেঞ্জারে চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে ক্লায়েন্ট তৈরি করে জাল টাকার ব্যবসা করতেন।”

র‌্যাবের মুখপাত্র জানান, পরে চক্রের সদস্যেদের মাধ্যমে ঢাকাসহ সিরাজগঞ্জ, খুলনা, যশোর এলাকায় এসব জাল নোট সরবরাহ করতেন চক্রের সদস্যরা। তারা কখনও সরাসরি জাল নোটগুলো তাদের ‘ক্লায়েন্টদের’ দেখাতেন না। গ্রুপ থেকে ক্লায়েন্ট বাছাই করে তাদের সঙ্গে ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে কথাবার্তা বলে তাদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিতেন তারা। তারা প্রতি ১ লাখ টাকা মূল্যের জাল নোট ১৫-২০ হাজার টাকায় বিক্রি হতো। এ পর্যন্ত চক্রটি বিভিন্ন সময়ে প্রায় ২ কোটি মূল্যমানের জাল নোটের ব্যবসা করেছে বলে জানা যায়।

এ বিভাগের আরো খবর