বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিয়ের অনুষ্ঠান রইল পড়ে, লঞ্চ দুর্ঘটনায় গেল তানজিলের প্রাণ

  •    
  • ২৩ অক্টোবর, ২০২২ ১১:২৯

গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফী বিন কবির বলেন, ‘তানজিলের বিয়ে হয়েছে এক মাস আগে। তবে তার বিয়ের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল সোমবার। বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তানজিলের সঙ্গে তার দুই বন্ধু সাগর ও শাকিলও গোসাইরহাট ফিরছিলেন। তানজিলের পরিবারের সদস্যরাও ওই লঞ্চে ছিলেন।’

শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে সেতুতে লঞ্চের ধাক্কায় যে তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে একজনের বিয়ের আনুষ্ঠান ছিল সোমবার। পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের নিয়ে তিনি ঢাকা থেকে গোসাইরহাট যাচ্ছিলেন।

রোববার ভোর ৪টার দিকে উপজেলার কুচাইপট্টি ইউনিয়নের সাইক্ষ্যায় জয়ন্তিয়া নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন গোসাইরহাটের শাহ আলী মোল্লার ছেলে তানজিল মোল্লা এবং তার বন্ধু জামালপুরের বোরহান আলীর ছেলে সাগর আলী ও টাঙ্গাইলের নাজিম উদ্দিনের ছেলে শাকিল আহমেদ।

সোমবার তানজিলেরর বিয়ের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল।

গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফী বিন কবির জানান, শনিবার রাতে ঢাকার সদরঘাট থেকে স্বর্ণদ্বীপ প্লাস লঞ্চটি ডামুড্যার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। ভোরে লঞ্চটি মেঘনা নদী থেকে জয়ন্তিয়া নদীতে প্রবেশ করে। গোসাইরহাটে পৌঁছানোর পর সাইক্ষ্যা সেতুর সঙ্গে লঞ্চের তৃতীয় তলায় থাকা পানির ট্যাংকের ধাক্কা লাগে। ট্যাংকটি ছিটকে ঘুমন্ত যাত্রীদের ওপর পড়ে। ট্যাংক চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই তিন যাত্রী মারা যান এবং দুজন আহত হন।

তিনি বলেন, ‘তানজিলের বিয়ে হয়েছে এক মাস আগে। তবে তার বিয়ের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল সোমবার। বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তানজিলের সঙ্গে তার দুই বন্ধু সাগর ও শাকিলও গোসাইরহাট ফিরছিলেন। তানজিলের পরিবারের সদস্যরাও ওই লঞ্চে ছিলেন।’

নিহত তানজিলের দাদা রতন মিয়া বলেন, ‘কাল বিয়ার জন্য বাড়িতে অনেক মেহমান। আজ সন্ধ্যায় ওর গায়ে হলুদের কথা ছিল। রাতে ঢাকা থেকে আসার সময় লঞ্চ দুর্ঘটনায় সব শেষ করে দিল। বিয়ের উৎসবের বদলে এখন আমাদের লাশ নিয়ে দৌড়াতে হচ্ছে।’

দুর্ঘটনার সময় লঞ্চে অবস্থান করা ও নিহত তানজিলের ফুপু হাসনা বানু বলেন, ‘রাতে ঘুমের ঘোরে হঠাৎ বিকট শব্দ শুনি। পরে খবর পাই ভাইপো তানজিল সহ ৩ জন মরে গেছে। লঞ্চে যাত্রী বেশি ছিল তাই নিচে জায়গা পায়নি ওরা। ছাদে গিয়া ঘুমাইছিল। আগে জানলে মানিকরে আমার বুকে লইয়া ঘুমাইতাম।’

গোসাইরহাট লঞ্চ ঘাটের ইজারাদার মোজাম্মেল হক জানান, শনিবার ঢাকা থেকে ২টি লঞ্চ ছেড়ে আসার কথা থাকলেও একটির যাত্রা বাতিল হয়। তাই দুই লঞ্চের যাত্রী এক লঞ্চে চড়েই গন্তব্যে যাচ্ছিলেন। এতে ভিড় বেশি হওয়ায় ডেকে জায়গা না পেয়ে ছাদে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন অনেকেই।

গোসাইরহাট থানার এসআই মতিউর রহমান জানান, দুর্ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লঞ্চটির ২ কর্মীকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া নিহতদের সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পন্ন করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠিনো হয়েছে।

ইউএনও কাফী বিন‌ কবির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পেয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ২৫ হাজার করে মোট ৭৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে তদন্তকারী দলকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর