কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের রামমোহন থেকে আদমপুর বাজার রোড পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়কের সংস্কার নেই তিন বছর ধরে। চলাচলকারী বাহনের চালক ও সাধারণ মানুষজনের ভোগান্তির শেষ নেই। কবে নাগাদ সংস্কার হবে, তার কোনো ইঙ্গিতও নেই।
খানাখন্দে ও পানিতে ডুবে থাকা এই সড়কটির বিকল্পপথও নেই। প্রতিদিনই সড়কটির গর্তে পড়ে যানবাহন বিকল হওয়ার চিত্র ধরা পড়ছে পথচারীদের মোবাইল ফোনে।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কটিতে হাঁটুসম পানি। দুপাশে দোকানপাট ও সীমানাপ্রাচীর। সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেট কার মাইক্রো ও মোটরবাইক চালকরা অতি ধীরে সড়কটি পার হন। কাদায় চাকা আটকে গিয়ে গাড়ি বিকল হয়ে যাচ্ছে। যাত্রী ও পথচারীদের সহায়তায় বিকল বাহনকে টেনে তুলতে দেখা গেছে। সড়কটিতে এমন অবর্ণনীয় কষ্ট বছরজুড়েই থাকে।
অটোরিকশাচালক মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘এলাকায় যাত্রী পারাপার করি। সড়কটির এই অংশে এলে যাত্রীরা নেমে পড়ে। খালি অটোরিকশাটি নিয়ে যাওয়ার সময় কাত হয়ে পড়ে যায়।’
পথচারী আবদুস সামাদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এত বাজে রাস্তা সারা বাংলাদেশে আর নেই।’
ঢাকা থেকে ভাড়ায় আসা প্রাইভেট কার চালক আলিম উদ্দিন বলেন, ‘ঢাকা থাইক্কা চান্দিনা দিয়া আইলাম। এহানে আইয়া দেহি রাস্তার মইধ্যে পুকুরের মতন। এমন জানলে ভাড়ায় আসতাম না।’
তরকারি ব্যবসায়ী মতি মিয়া বলেন, ‘এমপি আছে, উপজেলা চেয়ারম্যান আছে, আমডার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান-মেম্বরও আছে। এরপরেও কেউ দেহেনা রাস্তাডা। এডি কোনো কথা। এমুন রাস্তা দিয়া কেমনে চলি আমডা?’
সড়কটির পাশেই রামমোহন তমিজিয়া উচ্চবিদ্যালয়। সড়কটি দিয়ে কাদাপানি মাড়িয়ে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী স্কুলে আসে।
স্কুলটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াহেদ উল্ল্যা সরকার বলেন, ‘সড়কটির তিন কিলোমিটার ভাঙাচোরা। তার মাঝে এক কিলোমিটারজুড়ে বড় বড় গর্ত হয়ে আছে। এমপি সাহেব ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে বলেছি। তবু সড়কটি সংস্কার হচ্ছে না।’
বিষয়টি নিয়ে কুমিল্লা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর্জা ইফতেখারুল আলম বলেন, ‘সড়কের এ অবস্থা আমরা অবগত আছি। খুব শিগগিরই দরপত্র আহ্বান করা হবে। আশা করছি মাস দেড়েকের মধ্যে সড়কটির সংস্কারকাজ শুরু হবে।’