মৌলভীবাজারে অবস্থানরত বাবাকে ফোনকলে রেখে ফ্রান্সে কয়েক যুবক তার ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এমন অভিযোগ করেছেন কাওছার হামিদ আলী নামের ওই যুবকের বাবা আবুল হোসেন।
১৩ অক্টোবর ফ্রান্সের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাওছার হামিদ আলী নামে ওই যুবকের মৃত্যু হয়।
কাওছার মৌলভীবাজারের বড়লেখা পৌরসভার পানিধার গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। তার বাবার অভিযোগ তাকে ফোনকলে রেখেই বড়লেখা ও কুলাউড়ার কিছু যুবক তার ছেলেকে অমানুষিক নির্যাতন করে হত্যা করেছে।
আবুল হোসেন বলেন, 'গত ২০ সেপ্টেম্বর ভোরে ফ্রান্স থেকে আমার কাছে সামাদ আহমদ তানিম নামের এক যুবক টেলিফোন করেন। তিনি ফোন করে আমার কাছে কাওছারের পরিচয় জানতে চান। কাওছার আমার ছেলে হয় তাকে জানালে তিনি জানান বড়লেখা ও কুলাউড়ার কিছু যুবক আমার ছেলের কাছে ঘরভাড়ার টাকা পান। কিন্তু সে নাকি টাকাগুলো দিচ্ছে না। সে (কাওছার) কেন এমন করছে। তখন আমি তাকে বলি বাবা এ বিষয়ে তো আমি কিছুই জানি না। এ সময় আমাকে ফোনকলে রেখেই আমার ছেলেকে মারার জন্য ওই যুবককে বাকিদের নির্দেশ দিতে শুনি। তাকে আঘাত করার শব্দ পাই। একজন আমার ছেলেকে উদ্দেশ করে বলেন তোর বাবার সঙ্গে কথা বলবি, তখন আমার ছেলের কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। ওদের আঘাতেই আমার ছেলে হয়তো তখন জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। ওরা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে।’
কাওছারের পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, ১২ বছর আগে স্টুডেন্ট ভিসায় লন্ডন পাড়ি জমান কাওছার হামিদ আলী। সেখানে ৭ বছর থাকার পর বৈধতা না পাওয়ায় ৫ বছর আগে পাড়ি জমান ফ্রান্সে। এরপর থেকে সেখানেই তিনি বসবাস করে আসছেন। তিনি খাবার ডেলিভারির কাজ করতেন। এক যুগেরও বেশি সময় প্রবাসে থাকা কাওছার অবিবাহিত ছিলেন।
এ বিষয়ে ফ্রান্সপ্রবাসী সাংবাদিক নূরুল ওয়াহিদ জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় কাওছার হামিদ আলীকে সেখানকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৩ দিন তিনি কোমাতে ছিলেন। এরপর ১৩ অক্টোবর মারা যান।
তিনি আরও বলেন, '৩৮০ ইউরোর জন্য ফ্রান্সে প্রাণ দিতে হয়েছে কাওছার হামিদ আলীকে। ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের সচিব শারহাদ শাকিল আমাকে নিশ্চিত করেছেন যে ফ্রান্সের পুলিশ তাকে জানিয়েছে, কাওছার হামিদ আলী দুর্ঘটনায় মারা যায়নি; তাকে হত্যা করা হয়েছে।'
তিনি জানান, হত্যাকারীরা আলীর নিজ এলাকা বড়লেখা ও কুলাউড়ার বলে তিনি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানতে পেরেছেন। তাদের নাম-পরিচয়ও তিনি জেনেছেন।