শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয় হবে না এবং বাংলাদেশ নিয়ে এভাবে জ্যোতিষীদের মতো কথা না বলার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান।
‘অদম্য বাংলাদেশ-অর্জন, সম্ভাবনা ও করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে মূল আলোচক হিসেবে দেওয়া বক্তব্যে শুক্রবার তিনি এ কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ‘এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি)’ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে বিকেলে এই সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) চেয়ে ঋণের হার ১০৯ শতাংশের বেশি। আর বাংলাদেশে জিডিপির তুলনায় ঋণের হার মাত্র ৩৮ শতাংশ। অর্থাৎ বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ তুলনামূলক কম।’
তিনি আরো বলেন, ‘আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের মতে বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ জিডিপির তুলনায় নিরাপদ ও শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।’
দেশকে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তুলনাকারীদের সমালোচনা করে সাবেক গভর্নর বলেন, ‘জ্যোতিষীদের মতো বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে এমন মন্তব্য না করে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে বাংলাদেশের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরুন।’
তিনি সরকারকে অবকাঠামো উন্নয়নের ধারাবহিকতা বজায় রাখা, আমদানি-রপ্তানি ব্যয়ের ব্যবধান কমানো এবং বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতায় উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে নতুন করে আঞ্চলিকতাবাদ ও অর্থনৈতিক সংরক্ষণবাদ মাথাচাড়া দিতে পারে। নয়া এ মেরুকরণের সুফল পেতে পারে বাংলাদেশ।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান।
আখতারুজ্জামান বলেন, সরকারের অর্জন টেকসই করতে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণা ও উদ্ভাবনে আরও গুরুত্ব দিতে হবে এবং সময়বদ্ধ ও বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। এ ছাড়া তিনি চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুযোগ কাজে লাগানো এবং শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থার উপযোগী করে গড়ে তোলার পরামর্শ দেন।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ও ইআরডিএফবি সভাপতি অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সেলিনা আখতার, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. হাকিম আরিফ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান বক্তব্য রাখেন।