ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া মালবাহী কনটেইনার ট্রেন বেলা ৩টা ৫ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুনিয়াউট লেভেল ক্রসিং এলাকা অতিক্রম করে। সে সময় দুইপাশে লেভেল ক্রসিং ছিল উন্মুক্ত। সেখানে কোনো গেটম্যানকে পাওয়া যায়নি।
লেভেল ক্রসিং উন্মুক্ত থাকার কারণ, অস্থায়ীভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া গেটম্যানরা চাকরি স্থায়ী করতে ও বকেয়া বেতনের দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে কর্মবিরতি শুরু করে। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া লেভেল ক্রসিং এলাকা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন।
আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনের প্রকৌশল শাখা সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া থেকে আশুগঞ্জ পর্যন্ত ১৭টি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। এর মধ্যে শহরের কলেজপাড়া ও পুনিয়াউটের লেভেল ক্রসিংয়ের দুটি গেট রেলওয়ের ট্রাফিক বিভাগের অধীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেল স্টেশন মাস্টারের আওতায় রয়েছে। বাকি ১৫টি লেভেল ক্রসিং রেলের প্রকৌশল বিভাগ দেখাশোনা করে।
এসব লেভেল ক্রসিং এলাকায় রেলবিভাগ প্রকল্প ও অস্থায়ীভিত্তিতে গেটম্যান নিয়োগ দিয়েছে। রেল বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্প ও অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া গেটম্যানরা গত চার মাস ধরে কোনো ধরনের বেতন পাচ্ছেন না। তাই অস্থায়ী ও প্রকল্পের ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া গেটম্যানরা তাদের চাকরি স্থায়ীর দাবিতে কর্মবিরতি পালন শুরু করে। মঙ্গলবার দুপুর থেকে তারা এই কর্মবিরতি শুরু করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩০ থেকে ৩২ জন গেটম্যান রয়েছে। তাদের মধ্যে ১২ থেকে ১৩ জনের চাকরি স্থায়ী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, শহরের কলেজপাড়া লেভেল ক্রসিং গেটে ছয়জন গেটম্যান রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র একজন রেলের স্থায়ী কর্মী। অন্যরা প্রকল্প ও অস্থায়ীভিত্তিতে নিয়োগ পেয়েছেন। পুনিয়াউট লেভেল ক্রসিংয়ে দুইজন স্থায়ী গেটম্যান রয়েছে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে পুনিয়াউট লেভেল ক্রসিং গেটের দুইজন গেটম্যানকে কলেজপাড়ার লেভেল ক্রসিং রেলগেটে নেয়া হয়েছে। এতে মঙ্গলবার দুপুর থেকে পুনিয়াউট লেভেল ক্রসিং থাকছে খোলা ও অরক্ষিত অবস্থায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে সেন্টশনের আওতায় দুটি লেভেল ক্রসিং গেট রয়েছে। জনবল সংকট থাকায় পুনিয়াউটের লেভেল ক্রসিং গেট থেকে দুইজন গেটম্যানকে কলেজপাড়ার গেটে নেয়া হয়েছে। পুনিয়াউট লেভেল ক্রসিং গেট দিনভর খোলা থাকবে।’
জ্যেষ্ঠ উপসহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আখাউড়া থেকে আশুগঞ্জ পর্যন্ত ১৭টি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। এর মধ্যে দুটি লেভেল ক্রসিং গেট রেলের ট্রাফিক বিভাগের আওতায়। যা রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টারের দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে। বাকি ১৫টি লেভেল ক্রসিং গেট রেলওয়ের প্রকল্প ও অস্থায়ী কর্মসূচির আওয়ায় রয়েছে।’