খুলনায় বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে মাগুরায় সকাল থেকে খুলনাগামী কোনো বাস চলাচল করছে না, তবে অন্য রুটে বাস চলছে। যশোর রুটে বাস চলাচল করলেও তা সীমিত। এই পরিস্থিতে যাত্রীরা পড়েছে ভোগান্তিতে। সেই সঙ্গে পরিবহনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, যাত্রীর উপস্থিতিও তুলনামূলক কম।
নৌবাহিনীতে একটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে মাগুরার আঠারখাদা গ্রাম থেকে এসেছেন ২২ বছর বয়সী শৈশক মণ্ডল। মাগুরা ঢাকা রোড এলাকায় খুলনাগামী বাসস্ট্যান্ডে বসে আছেন সকাল ৯টা থেকে।
দুপুর ১২টা পর্যন্ত কোনো বাস নেই দেখে হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমার প্রস্তুতি ভালো আছে। কিন্তু বাস যে বন্ধ, খুলনা যাওয়া যাচ্ছে না। এসবে মন খারাপ হতে শুরু করেছে।’
তিনি জানান, যশোরে যাওয়া যাচ্ছে। তবে খুলনা যেতে হলে তাকে ভেঙে ভেঙে নানা পথে যেতে হবে বলে বলেছেন কাউন্টার মালিকরা।
বেলা ১১টার দিকে মাগুরার ভায়না এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, যশোরগামী বাস সচল রয়েছে। সকাল ৭টা থেকে প্রতি ঘণ্টায় একটি করে বাস যাচ্ছে বলে জানান কাউন্টার মাস্টার নবাব আলী।
তবে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘বাস চললেও যাত্রী নেই বললেই চলে। কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশে লোকজন যাচ্ছে, সে জন্য সাধারণ যাত্রীরা খুলনা রুটে কম যেতে পারে।’
মাগুরা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, কিছু যাত্রী ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশে অপেক্ষায় রয়েছে। কয়েকটি পরিবহন এসেছে যশোর, মণিরামপুর, সাতক্ষীরা ও কৃষ্টিয়া থেকে। তবে নিয়মিত যাতায়াতকারী খুলনা থেকে কোনো পরিবহন আসেনি বলে জানান হানিফ পরিবহনের ম্যানেজার বাদশা মিয়া।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘খুলনা থেকে ঢাকাগামী বাস আপাতত মালিকপক্ষ বন্ধ রেখেছে। তাই যশোরের নওয়াপাড়া থেকে বাস মাগুরা হয়ে ঢাকা যাচ্ছে।’
অন্য পরিবহনগুলোর কাউন্টারগুলো থেকে জানা যায়, ঢাকা থেকে যে বাসগুলো খুলনায় যাবে, সেগুলো আপাতত বন্ধ রয়েছে। কখন ছাড়বে তাও তারা স্পষ্ট কিছু বলতে পারেননি।
মাগুরা বিএনপির নেতা-কর্মীরা সড়ক ও নদীপথে খুলনা যাতায়াত শুরু করেছেন।
জেলা বিএনপির একাধিক নেতা জানান, মাগুরা থেকে প্রায় ৫ হাজার নেতা-কর্মী খুলনা যাচ্ছেন।
বিএনপি নেতারা অভিযোগ করে জানান, পথে পথে গোয়েন্দা পুলিশের নজরদারি রয়েছে। গতকাল খুলনা যাওয়ার পথে কিছু নেতা-কর্মীকে আটক করেছে বলে তারা দাবি করছেন।
এ বিষয়ে পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুলিশের রুটিন কাজের অংশ হিসেবে বাসগুলোতে নজর বাড়ানো হয়েছে। বিএনপির সমাবেশে যেতে পুলিশ কোনো বাধা দিচ্ছে না।
সমাবেশে যাওয়া নিয়ে জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি আরমান হোসেন নিউজবাংলাকে জানান, সমাবেশে যেতে নেতা-কর্মীরা যার যার ব্যক্তিগত ইচ্ছায় পৌঁছে যাচ্ছেন। যেহেতু কোনো বাস বা মিনিবাস মালিকরা তাদের খুলনায় নিতে চাইছে না, তাই বিকল্প নানা উপায়ে তারা সমাবেশে যোগ দিতে কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন।