বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হোটেল-রিসোর্টের নিবন্ধন দেয়ার ক্ষমতা পাচ্ছে বিটিবি

  •    
  • ২১ অক্টোবর, ২০২২ ১১:১৫

হোটেল রিসোর্টে পর্যটকদের সেবার মান নিশ্চিত করা হচ্ছে কিনা তা দেখার দায়িত্বও পর্যটন মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের। কিন্তু লোকবলের অভাবে এসব নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। ফলে হোটেল রিসোর্টগুলোর স্বেচ্ছাচারি আচরণের কারণে ঠকতে হচ্ছে পর্যটকদের।

দেশের প্রচলিত আইনে তারকা মানের হোটেল ও রিসোর্টগুলোকে নিবন্ধন দেয় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। আর তারকা মানের নয় এমন হোটেলগুলো নিবন্ধনের ক্ষমতা দেয়া আছে জেলা প্রশাসনকে।

দেশে বর্তমানে তারকা মানের হোটেল-রিসোর্ট রয়েছে ৪১টি। এর বাইরে তারকা মানের নয় এমন হোটেলের সংখ্যা হাজারখানেক।

আইন অনুযায়ী, এসব হোটেল রিসোর্টে পর্যটকদের সেবার মান নিশ্চিত করা হচ্ছে কি না তা দেখার দায়িত্বও পর্যটন মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের। কিন্তু লোকবলের অভাবে এসব নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। ফলে হোটেল রিসোর্টগুলোর স্বেচ্ছাচারি আচরণের কারণে ঠকতে হচ্ছে পর্যটকদের।

পর্যটকদের অভিযোগ, পার্শ্ববর্তী অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে হোটেলের ভাড়া অনেক বেশি। সেবার মানও মানসম্পন্ন নয়। কিন্তু এসব বিষয়ে কেউ যদি অভিযোগ করতে চান, সে সুযোগ খুব একটা নেই।

পর্যটন মৌসুমে হোটেলগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ভাড়া নির্ধারণ করে বলে অভিযোগ পর্যটকদের। দেশে একটি তারকা মানের হোটেলের ন্যূনতম ভাড়া শুরু হয় প্রতিরাতের জন্য ৫ হাজার টাকা থেকে। কক্ষের রকম বা সুযোগ-সুবিধা ভেদে ৫০ হাজার টাকা প্রতি রাত ভাড়া এমন কক্ষও রয়েছে হোটেলগুলোতে।

পর্যটকদের সেবার মান নিশ্চিত করতে এবং মনিটরিং বাড়াতে হোটেল-রিসোর্টের নিবন্ধন প্রক্রিয়ার কর্তৃপক্ষ হিসেবে ক্ষমতা পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড (বিটিবি)।

বিটিবির প্রধান নির্বাহী আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা শুনেছি হোটেল-মোটেল যেহেতু মনিটর হচ্ছে না, তাই এ দায়িত্ব বিটিবিকে দেয়া হতে পারে। যদি এ দায়িত্ব আমাদের হাতে থাকে, তাহলে আমরা এগুলো মনিটর করতে পারব।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হোটেল-রিসোর্ট নিবন্ধনের ক্ষমতা বিটিবির হাতে গেলে এ ধরনের দুরাচার রোধ করা সম্ভব হবে।

পর্যটনবিষয়ক পাক্ষিক দ্য বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহেদুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন যে যার মতো করে ভাড়া ঠিক করছে। এটার কোনো মার্কেট এনালাইসিস নেই। পর্যটনশিল্পের উন্নয়নে যদি এটা ঠিক করে দেয়া হয় যেকোনো ধরনের হোটেলে কী ধরনের রেট হবে, সেটা হলে সবাই উপকৃত হতে পারে। এটা এখন প্রয়োজন।

‘বিদেশি যারা আসেন, তারাও ভাড়া নিয়ে সমালোচনা করে থাকেন। একেক হোটেলে ডলারের রেটও একেক রকম। একটি কন্ট্রোলিং অথরিটি থাকলে মনিটরিংয়ের মধ্যে আসবে।’

তিনি বলেন, ‘এ ক্ষমতা বিটিবিকে দেয়াটাই সঠিক সিদ্ধান্ত, এটাই হওয়া উচিত। পৃথিবীর সব দেশে পর্যটন বোর্ডই এটা করে থাকে। মন্ত্রণালয় এটার সঠিক অথরিটি নয়। এ রকম ক্ষেত্রে সর্বজনীন অথরিটি থাকা প্রয়োজন, তারাই নিবন্ধন, রেটিং এবং মনিটরিংয়ের কাজটি করবে।

‘পর্যটন বোর্ড একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে কোন হোটেল কীভাবে রেটিং হবে, এগুলো ঠিক করবে। এখানে এই সেক্টরের যারা আছে, তাদেরও রাখতে হবে। আরেকটি বিষয়: আমাদের এখানে হোটেলগুলোর কোনো ডেটাবেইস নাই। কেন্দ্রীয়ভাবে এ কাজগুলো হলে ডেটাবেইস তৈরি হবে। কোন এলাকায় কতগুলো হোটেল প্রয়োজন, সেটা নিশ্চিত করা যাবে।’

বিটিবির প্রধান নির্বাহী আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, ‘আমরা দুভাবে কাজ করছি। আমাদের পুরো নিবন্ধন প্রক্রিয়াটা হবে অনলাইনে। আমাদের তখন লোকবল লাগবে, আমরা এখন সেটা নিয়ে কাজ করছি। এ ছাড়া আরও কয়েকটি বিষয় পর্যটন বোর্ডে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এগুলো এলে লোকবল অনেক লাগবে।

‘হোটেলগুলো এখনও আমাদের দায়িত্বে যেহেতু পড়ে না, এ জন্য আমরা তাদের এখনই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। আমরা শুধু মটিভেশনাল কাজ করছি। হোটেল-মোটেলের কর্মীদের কিন্তু আমরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছি, যাতে করে তারা পর্যটকদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে এবং সেবা ভালোভাবে দেয়।’

এরই মধ্যে ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইডদের নিবন্ধনের ক্ষমতা হাতে পেয়েছে বিটিবি। খুব শিগগিরই নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানান সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।

তিনি বলেন ‘ট্যুর অপারেটর ও গাইডদের মনিটর করার জন্য আমরা ২০২১ সালে একটি আইন করেছি। সেটা সংসদে পাস হয়েছে। এর ভিত্তিতে আমরা দুটি বিধিমালা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এটা স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে সংসদে পাঠানো হয়েছে। আশা করি, খুব দ্রুত এটা অনুমোদন হবে। এর মধ্যে মন্ত্রণালয় বিটিবিকে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ হিসেবে অথরিটি দিয়েছে ট্যুর অপারেটর ও গাইডদের নিবন্ধন দেয়ার জন্য।

‘ট্যুর অপারেটর ও গাইডদের নিবন্ধন যখন আমরা করব, তাদের আমরা একটি ইউনিক আইডি নম্বর ও আইডি কার্ড দেব। তাকে আমরা পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণও দেব। তখন তার বিরুদ্ধে যখন কেউ কোনো অভিযোগ করবে, আমরা সে ব্যবস্থা নিতে পারব।’

হোটেল নিবন্ধনের ক্ষমতা পাওয়ার আগে পর্যটন এলাকায় পর্যটকদের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে কাজ করার কথা জানান তিনি। আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, ‘আমরা একটি উদ্যোগ নিয়েছি, সেটা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা একটি এমওইউ করেছি, যাতে করে পর্যটকদের জন্য নিরাপদ খাবার নিশ্চিত করা যায়।

‘আমরা প্রাথমিকভাবে পর্যটন এলাকায় যে রেস্টুরেন্টগুলো আছে, সেখানে যারা কাজ করেন বা মালিক, তাদের আমরা মটিভেট করার চেষ্টা করব। আইন প্রয়োগ বা মোবাইল কোর্ট বাদ দিয়ে প্রথমে আমরা বিশেষ করে পর্যটন এলাকায় এটা শুরু করব, যাতে করে তারা নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করে। এরপর যদি কাজ না হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর