মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, আওয়ামী লীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রৌফ চৌধুরীর ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ শুক্রবার। এ উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন দোয়া ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
আব্দুর রৌফ চৌধুরী ছিলেন বৃহত্তর দিনাজপুরের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনের সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন ভাষা আন্দোলনে একজন সক্রিয় সংগঠক। এজন্য তাকে কারাবরণও করতে হয়।
ঢাকা কলেজে পড়া অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দিনাজপুরে ফিরে ছাত্রলীগকে সংগঠিত করেন। বৃহত্তর দিনাজপুর (দিনাজপুর-ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড়) জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নেতৃত্ব দেন তিনি।
দিনাজপুর জেলা কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন ছাড়াও কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ছিলেন দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য। বাংলাদেশ সমবায় ফেডারেশন ও বিআরডিবির প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।
১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ৬ দফা আন্দোলন পরবর্তীতে ছাত্র সমাজের ১১ দফাসহ আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে আব্দুর রৌফ চৌধুরী ছিলেন প্রথম সারিতে। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে পূর্বাঞ্চলীয় জোনে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ও কামরুজ্জামানের দূত হিসেবে তিনি কাজ করেন।
পঁচাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন এবং পঁচাত্তর-পরবর্তী সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনে আব্দুর রৌফ চৌধুরীর ভূমিকা ছিল অসামান্য।
১৯৯৬ সালে দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আব্দুর রৌফ। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সরকারের ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০২ সালে জাতীয় শোক দিবসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখায় বিএনপি-জামায়াতের পুলিশি হামলায় তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার হয়ে নির্যাতনের শিকার হন। ২০০৭ সালের ২১ অক্টোবর নিজ বাড়িতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।