বিভাগীয় সমাবেশের আগে বাস বন্ধ থাকা নিয়ে বিএনপির কেমন লাগে, সেটি জানতে চেয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
১৯৯১ থেকে ৯৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি সরকারের আমলে জাতীয় পার্টি রাজপথে নামতে গেলেই তাদেরকে মারধর করা হতো অভিযোগ করে তিনি বলেছেন, ‘বিএনপির ভাইয়েরা, এ্যাহন কেমন লাগে?’
বৃহস্পতিবার দলীয় চেয়ারপারসনের বনানী কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন চুন্নু। এ সময় তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার প্রসঙ্গটি টানেন।
চুন্নু বলেন, ‘আজকে পত্রিকায় দেখলাম যে, বিএনপি খুলনায় বিভাগীয় সম্মেলন করবে, সেখানে বাস বন্ধ। সরকারি দল আসতে দেয় না। এতে বিএনপির খুব মন খারাপ। গণতান্ত্রিক দেশে আমরা চাই না এ রকম কেউ করুক। কিন্তু সমস্যা হলো- এই কালচারটা বিএনপিই কিন্তু আরম্ভ করছে।’
বিএনপির আমলে রাস্তায় দাঁড়ানো যেত না উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ‘৯১ থেকে ৯৬ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতায়, বিরোধী দল মিছিল করলেই পুলিশের মাইর….। পুলিশ খালি পিটায়। আরে ভাই কেন মারেন? বলে ওপর থেকে নির্দেশ।’
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে প্রশ্নে রেখে ব্যাঙ্গাত্মকভাবে চুন্নু বলেন, ‘বিএনপির ভাইয়েরা এ্যাহন কেমন লাগে! এখন কেমন লাগে?’
গত ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগের রাতে আচমকা বাস বন্ধ করে দেয়ায় ব্যাপক ভোগান্তিকে পড়ে যাত্রীরা। এক সপ্তাহ পরে খুলনায় বিএনপির সমাবেশের আগে বাস বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা এসেছে চার দিন আগে। মঙ্গলবার রাতেই পরিবহন মালিকদের পক্ষ থেকে ঘোষণা আসে শনিবার তাদের বাস চলবে না।
বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, তাদের সমাবেশে লোকসমাগমে বাধা দিতেই সরকার এটি করেছে।
আওয়ামী লীগের মহাসচিব ওবায়দুল কাদের অবশ্য দাবি করেছেন, এতে সরকার বা আওয়ামী লীগের হাত নেই। তিনি বলেন, ‘ধর্মঘট ডেকেছে পরিবহন মালিক সমিতি, তারা যদি তাদের পরিবহন ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার অভাব বোধ করে তাহলে সরকার বা আওয়ামী লীগের কী করার আছে?’
জাতীয় পার্টির মহাসচিব চুন্নু মনে করেন, বিএনপি ক্ষমতায় ফিরলেও এসব কাজ বন্ধ হবে না। তিনি বলেন, ‘উনারা যদি ক্ষমতায় যায় তাহলেও উনারা এই কামই করবে। কারণ তাদের চরিত্রই এটা। ক্ষমতায় যাওয়ার পরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের চরিত্রের মধ্যে কোন পার্থক্যই আমরা দেখি না।
‘ক্ষমতায় থেকে বিএনপিও আওয়ামী লীগের মত টাকা পাচার করেছে, লুটপাট করেছে, হাওয়া ভবন তৈরী করে তারা। বরং তারা দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিকরণ করেছিল।’
আগামী এক বছরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কাও করছেন জাপা মহাসচিব। বলেন, ‘কারণ, এক দলের যা কামাইছে এটা রক্ষার জন্য ক্ষমতার প্রয়োজন। আর এক দল কামাইছিল, এখন তা কমে গেছে। আবার কামাইতে চায় এ জন্য তারা ক্ষমতা চায়।’