খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে বাস-ট্রলার বন্ধের পর এবার নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এই অভিযোগ করেন।
খুলনায় বিভাগীয় গণসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয়ক শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ২২ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। নদীপথে ট্রলার বন্ধ করেও জনসমাগম বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে প্রচারে হামলা করা হয়। এ পর্যন্ত ছয়টি মাইক ভাঙচুর এবং দুইটি লুট করা হয়। প্রচারকাজে অংশ নেয়া কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। এখন দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘যেকোনো পরিস্থিতিতে গণসমাবেশ হবে। নেতাকর্মীরা যতই আঘাতপ্রাপ্ত হোক, জন-উৎসাহ কোনোক্রমেই ঠেকানো যাবে না। খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং পাঁচ সহকর্মীকে হত্যার বিচার আদায় করেই আমরা ঘরে ফিরব।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, এই বাহিনী বাংলাদেশের। কোনো দলের না। নিজের স্বার্থে, দলের স্বার্থে তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে। বিএনপি স্বৈরতন্ত্রকে বিদায় জানিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম করছে। যারা স্বৈরতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান করছেন, তাদের এই দিনই শেষ দিন না, আরও দিন আছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। কর্মসূচি সফল করতে আমরা সবার সহযোগিতা কামনা করছি। নেতাকর্মীরা লাঠি বহন করবে না, তবে তারা প্ল্যাকার্ড বহন করবে।’
প্রেস ব্রিফিংয়ে খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা বলেন, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহের সমাবেশের সফলতা দেখে শাসক দল ও প্রশাসন ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তারা খুলনার কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করতে চায়। ইতোমধ্যে সব পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তারা খেয়াঘাট বন্ধ করে দিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে।
খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব শফিকুল আলম তুহিন বলেন, বিভাগীয় কর্মসূচি বানচাল করতে পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে। মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জাবির আলী, ৩০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নেতা বুলবুল মোল্লার বাড়িতে পুলিশ বুধবার রাতে অভিযান চালিয়েছে। সদর ও সোনাডাঙ্গা থানার কয়েকজন দারোগা মোটরসাইকেলবহর নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালিয়েছেন। এসব অপতৎপরতা চালিয়ে গণসুনামি রুদ্ধ করা যাবে না।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আজিজুল বারী হেলাল, রকিবুল ইসলাম বকুল, জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, তারিকুল ইসলাম জহির।
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল-মামুন বলেন, পুলিশ কাউকে কখনও হয়রানি করে না। পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করে। বিএনপির অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক।