বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘এনআইডি সরকারের কাছে গেলে গণ্ডগোল হতে পারে’

  •    
  • ১৯ অক্টোবর, ২০২২ ২২:০৯

সাবেক সিইসি বিচারপতি আব্দুর রউফ বলেন, ‘একজনের ভোট যখন আরেকজন দেয়, তখন নির্বাচন কমিশন বসে থাকবে কেন? স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের এই অধিকার আছে। তাদের চোখের সামনে ধরা পড়েছে, কারচুপি হচ্ছে। তারা গাইবান্ধার নির্বাচন বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা বলেছি, দরকার হলে বার বার বন্ধ করবেন। জাতিকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন।’

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন অনুবিভাগ নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে সরকারের কাছে গেলে ভোট দেয়াসহ বিভিন্ন কাজে গণ্ডগোল হতে পারে বলে মনে করেন সাবেক তিনজন সিইসিসহ কর্মকর্তারা।

বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এমন অভিমত জানান সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনের সাবেক কর্মকর্তারা।

এনআইডি অনুবিভাগ ইসির কাছ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে নেয়ার জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য আইন প্রণয়নের কাজ চলছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

এ সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন মহলের আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে সাবেক সিইসি, নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিবরা বুধবার নেতিবাচক প্রভাব তুলে ধরেন।

এনআইডি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সাবেক তিনজন সিইসি। ছবি: নিউজবাংলা

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আব্দুর রউফ বলেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য বিভিন্ন অফিসে থাকতে পারে, এতে অসুবিধা নেই। কিন্তু নির্বাচন কমিশন যেহেতু এর প্যারেন্ট, মূল কাজটা তারাই করবে। এটা তাদের কাছে না থাকলে অনেক অসুবিধা। ভোট কেন্দ্রে গিয়ে যদি দেখেন এনআইডিতে একটা, ভোটার লিস্টে অন্যটা; তখন গণ্ডগোল লাগবে। বেইজটা ইসির হাতে থাকবে, অন্যদের লাগলে সেটা নেবে।’

সাবেক সিইসি কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ভোটার তালিকা থেকেই এনআইডি এসেছে। এনআইডি ইসির কাছে না থাকলে লোকজন ভোটার হতে চাইবে না। মানুষের ভোটার হওয়ার অতটা আগ্রহ নেই। এখন এনআইডির জন্যই আগ্রহ বেশি। এই অ্যাডভাটেন্সটা এখান থেকে সরানো উচিত নয়। এতে গণ্ডগোল হতে পারে।

‘এনআইডি নিবন্ধন ইসিতে থাকা উচিত। সিস্টেমে দুর্বলতা থাকলে সেটা ঠিক করতে হবে। ইসির অনেক বড় ডাটাবেজ এবং সেটা সুরক্ষিত আছে। এটা ভালো সিস্টেম হয়ে আছে, এটাকে আরো মজবুত করা উচিত।’

এনআইডি নির্বাচন কমিশনের তৈরি জানিয়ে সাবেক সিইসি কেএম নূরুল হুদা বলেন, ‘এটা নির্বাচন কমিশনের হাতে থাকলে সরকারের কোন অসুবিধা হয় না। এনআইডির সাথে জাতীয় নির্বাচন, ভোটার তালিকার পুরোপুরি সম্পর্ক। এটাকে মাঝখান থেকে নিয়ে গেলে নির্বাচন কমিশনের কাজ করতে অসুবিধা হবে।’

এনআইডির উদ্যোক্তা কমিশনের সদস্য সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এনআইডি সরকার কেন নিতে চাচ্ছে, সেটা পরিস্কার নয়। এতোগুলো বছর সিস্টেম ডেভেলপ করেছে নির্বাচন কমিশন, এখন এটা যদি আলাদা হয়ে যায় তাহলে সমস্যা হবে।

‘এনআইডি ঠিক, না ভোটার তালিকা ঠিক তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। কারণ, কালকে আপনি বলবেন আমার বয়স ৩০ না, আমার বয়স ১৯; ভুল হয়েছে জানিয়ে ঠিক করে ফেললেন। তখন ভোটার লিস্টের কী হবে? আল্টিমেটলি এটা নিয়ে একটা গণ্ডগোল হবে।’

এনআইডি ও ভোটার তালিকা পরস্পর সম্পর্কযুক্ত জানিয়ে সাবেক ইসি সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, ‘আপনি ডাটা শেয়ার করতে পারেন, প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডাটা নিয়ে যাক। সিস্টেমটা সরিয়ে নেয়া ঠিক হবে না।’

এদিকে ভোট বন্ধ প্রসঙ্গে সাবেক সিইসি বিচারপতি আব্দুর রউফ বলেন, ‘একজনের ভোট যখন আরেকজন দেয়, তখন নির্বাচন কমিশন বসে থাকবে কেন? স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের এই অধিকার আছে। তাদের চোখের সামনে ধরা পড়েছে, কারচুপি হচ্ছে। তারা গাইবান্ধার নির্বাচন বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা বলেছি, দরকার হলে বার বার বন্ধ করবেন। জাতিকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন।’

তার সময়কালে মাগুরার উপনির্বাচনে কেন ব্যবস্থা নিতে পারেননি জানতে চাইলে বিচারপতি রউফ বলেন, ‘আমরা সামনের দিকে তাকাতে চাই। পেছনেরটা টেনে এনে জাতিকে আর আন্ধার মধ্যে ফেলবেন না।’

মতবিনিময় বিষয়ে সাবেক সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সংবিধান ও আইন মোতাবেক কাজ করে যাবে, আমরা এই পরামর্শ দিয়েছি। ইভিএম নিয়ে ইতিবাচক প্রচারণার দরকার আছে বলেও জানিয়েছি।’

আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বেলা ১১ থেকে তিনঘণ্টা চলে এ মতবিনিময় সভা। সেখানে সাবেক সিইসি আব্দুর রউফ, কে এম নূরুল হুদা, কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রি.জে (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, মো. শাহনেওয়াজ, সাবেক ইসি সচিব ড. মোহাম্মাদ সাদিক, মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ, সিরাজুল ইসলাম, হেলাল উদ্দীন আহমেদ, এমএম রেজা এবং ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলী ও মোখলেছুর রহমান অংশ নেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা, আনিছুর রহমান ও মো. আলমগীর সভায় উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর