মাদারীপুর সদরে রাজনৈতিক বিরোধের জেরে চেয়ারম্যানের ভাইকে প্রকাশ্যে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যার দায়ে তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। মামলা থেকে খালাস দেয়া হয়েছে পাঁচজনকে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস বুধবার দুপুরে ১৯ বছর আগের মামলার এই রায় দেন। এ সময় আদালতে ছিলেন চার আসামি। সাজা পাওয়া সবাই পূর্ব বাংলা সর্বহারা দলের সদস্য।
মামলার প্রধান আসামি লুৎফর খালাসী ও তার দুই ভাই ওবায়দুর খালাসী, খায়রুল খালাসীসহ ৫ জন আগেই ক্রসফায়ারে নিহত হয়।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সিদ্দিকুর রহমান সিং এসব নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন, মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের উত্তর শিরখাড়া এলাকার মাজাহারুল ইসলাম, একই ইউনিয়নের পশ্চিমমাঠ এলাকার মাছিম শেখ ও তার ভাই জসিম শেখ।
উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নে ২০০৩ সালের ১৯ অক্টোবর এই হত্যাকাণ্ড হয়।
এজাহারে জানা গেছে, ঘটনার দিন দুপুরে শিরখাড়া ইউনিয়নের পুরাতন রাজারহাটে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান মজিবর হাওলাদারের বড় ভাই টিন ব্যবসায়ী রাজ্জাক হাওলাদারকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হামলার নেতৃত্ব দেন তৎকালীন শিরখাড়া ইউনিয়নের নির্বাচনে অংশ নেয়া ও সর্বহারা পার্টির আঞ্চলিক কমান্ডার লুৎফর খালাসী।
এ ঘটনায় সদর থানায় ১৫ জনের নামে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী সেলিমা বেগম। সদর থানার তৎকালীন ওসি এমএ হাশেম ২০০৪ সালের ১৫ জুলাই ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন। এরপর ২০০৫ সালে তৎকালীন এএসপি সার্কেল মিজানুর রহমান ১৯ জনকে অভিযুক্ত করে ও আরও ৩ জনকে অভিযুক্তের সুপারিশ করে ফের চার্জশিট দেন।
রায়ে ২০ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক।
মামলার বাদী ও নিহতের স্ত্রী সেলিনা বেগম বলেন, ‘র্দীঘদিন পরে রায় পেয়ে আমার পরিবার খুশি। তবে আরও বেশি খুশি হবো যদি আসামিদের ফাঁসি দ্রুত কার্যকর হয়।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী জাফর আলী মিয়া বলেন, ‘উচ্চ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আবেদন করব। আশা রাখি রায়ে সেখানে নির্দোষ প্রমাণিত হবে আসামিরা।’