শূন্য ঘোষণার পর নির্ধারিত ৯০ দিনে গাইবান্ধা-৫ আসনে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে না পারায় সময়সীমা আরও ৯০ দিন বাড়াতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এ ক্ষেত্রে সংবিধানে থাকা ‘দৈবদুর্বিপাক’-এর সুযোগ নিয়েছে তারা।
১২ অক্টোবর ভোটের দিন গোপন কক্ষে অনাকাঙ্ক্ষিত লোকজনের উপস্থিতি দেখে ভোট বাতিল করার পর নতুন তারিখ ঘোষণা না করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। সেদিন যা ঘটেছে, তাকেই দৈবদুর্বিপাক গণ্য করেছে তারা।
বুধবার নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান।
সংবিধানের ১২৩(৪) অনুচ্ছেদে অনুযায়ী, সংসদের কোনো সদস্যপদ শূন্য হলে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে তা পূরণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০ অক্টোবর। কিন্তু ১২ তারিখ বন্ধ করে দেয়া নির্বাচনের তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। ফলে এই সময়মীসার মধ্যে ভোট করা সম্ভব হচ্ছে না।
সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদের (৪) দফা অনুযায়ী, নির্ধারিত ৯০ দিনে ভোট করা না গেলে দৈবদুর্বিপাকের কারণে আরও ৯০ দিন সময় বাড়ানো যায়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এতে বলা হয়, চলতি অক্টোবর মাসের ২০ তারিখের পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে তথা আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে গাইবান্ধা-৫ আসন নির্বাচনের নতুন মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে।
১২ অক্টোবর উপনির্বাচনে সবগুলো কেন্দ্র সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে ঢাকার নির্বাচন ভবনে বসে পর্যবেক্ষণ করে নির্বাচন কমিশন। এ সময় দেখা যায় ইভিএমে ভোটারের পরিচয় শনাক্তের পর তিনি স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারছেন না। গোপন কক্ষে উপস্থিত অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি তার হয়ে ভোট দিয়েছেন বা ভোট দিতে চাপ দিয়েছেন।
অভিযোগ স্পষ্টত আওয়ামী লীগের নোত-কর্মীদের দিকে। তবে নির্বাচন কমিশন তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত না নিয়ে কার দোষে এই ঘটনা ঘটল, সেটি তদন্ত করে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছে। এখনও এই প্রতিবেদন আসেনি, ফলে নির্বাচন কমিশন তার করণীয়ও ঠিক করেনি।
নির্বাচন কমিশন বিষয়টি নিয়ে সাবেক চারটি কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে। ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনাকারী কমিশনের প্রধান আব্দুর রউফ, ২০০৮ সালে সেনা-সমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন, ২০১৪ সালের সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ ও ২০১৮ সালের সিইসি কে এম নূরুল হুদা এবং আরও কয়েকজন কমিশনার ও সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব আসেন এই মতবিনিময়ে।
তাদের সঙ্গে আলোচনার শেষে ১২ অক্টোবরের ঘটনাটিকে দৈবদুর্বিপাক ধরে ভোটের সময়সীমা আরও ৯০ দিন বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তি আসে।