বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভোট বন্ধের ক্ষমতা আগে প্রয়োগ হলে রাজনীতি ভিন্ন হতো: সাখাওয়াত

  •    
  • ১৯ অক্টোবর, ২০২২ ১৫:০১

‘ওনারা (আউয়াল কমিশন) গাইবান্ধা-৫ সংসদীয় আসনে যে অ্যাকশনটা নিয়েছে, আমি তাদের ওয়েলকাম জানিয়েছি। এ পর্যন্ত ঠিক আছে। এরপরের ধাপগুলো যাতে আপনারা স্লিপ না করেন। যদি করেন তাহলে জাতির কাছে অন্য রকম একটা মেসেজ (বার্তা) যাবে যে আপনারা এটুকু দেখানোর জন্য করলেন, বাকিগুলো করলেন না। দেয়ারফোর, আইন আপনাদের যে শক্ত অবস্থানে যেতে বলেছে প্লিজ ডু ইট।’

ভোট চলাকালে অনিয়মের অভিযোগে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন বন্ধ করে দেয়ায় নির্বাচন কমিশনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সেনা-সমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন। বলেছেন, নির্বাচন কমিশন ৯০ দশক থেকে এই ক্ষমতা প্রয়োগ করলে আজকের রাজনৈতিক পরিবেশ ভিন্নও হতে পারত।

বুধবার সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বর্তমান কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

পরের নির্বাচনেও সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন সাখাওয়াত। সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতা না থাকলে কী হবে, সেটি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাহলে কিন্তু জাতির কাছে অন্য রকম একটা মেসেজ (বার্তা) যাবে যে আপনারা এটুকু দেখানোর জন্য করলেন। বাকিগুলো করলেন না।’

১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনে উপনির্বাচনের ভোট চলাকালে কেন্দ্রে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সরাসরি পর্যবেক্ষণ করে প্রথমে ৫১ কেন্দ্র ও পরে ১৪৫ কেন্দ্রের সবগুলোর ভোট বাতিল করে নির্বাচন কমিশন।

অনিয়ম হলে ভোট বাতিলের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের থাকলেও এর আগে কখনও এর প্রয়োগ দেখা যায়নি। এ নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে।

সেদিন কেন্দ্রে কেন্দ্রে কী হয়েছিল, তার তদন্ত করে স্থানীয় প্রশাসনকে প্রতিবেদন দিতে বলেছে নির্বাচন কমিশন। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে তারা।

এ ঘটনায় মতামত নিতে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও কমিশন সচিবদের আমন্ত্রণ জানায় আউয়াল কমিশন।

১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনাকারী আব্দুর রউফ, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনাকারী কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন পরিচালনাকারী কে এম নূরুল হুদা নির্বাচন কমিশনের ডাকে সাড়া দিয়ে আলোচনায় আসেন।

সাংবাদিকদের সাখাওয়াত বলেন, ‘ওনারা (আউয়াল কমিশন) গাইবান্ধা-৫ সংসদীয় আসনে যে অ্যাকশনটা নিয়েছে, আমি তাদের ওয়েলকাম জানিয়েছি। এই পর্যন্ত ঠিক আছে। এরপরের ধাপগুলো যাতে আপনারা স্লিপ না করেন।

‘যদি করেন তাহলে জাতির কাছে অন্য রকম একটা মেসেজ (বার্তা) যাবে যে আপনারা এটুকু দেখানোর জন্য করলেন, বাকিগুলো করলেন না। দেয়ারফোর, আইন আপনাদের যে শক্ত অবস্থানে যেতে বলেছে প্লিজ ডু ইট।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে অ্যাটমোসফিয়ার (পরিবেশ) ঠিক নাই, তাহলে ইলেকশন আপনারা বন্ধ করতে পারেন। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি মনে করবেন যে পরিবেশ ঠিক হয় নাই, ততক্ষণ পর্যন্ত বন্ধ রাখতে পারবেন, কোথাও কোনো বাধা নেই।’

১৯৯৪ সালে বিএনপি সরকারের আমলে মাগুরা ও ঢাকার মিরপুরের বিতর্কিত উপনির্বাচনের কথা তুলে ধরে সাখাওয়াত বলেন, ‘১৯৯৪ যদি এটা করা হতো, তাহলে আজকে পলিটিক্যাল ফিল্ডটা অন্য রকম হতে পারত।’

ওই দুটি উপনির্বাচনের পরেই সে সময়ের বিরোধী দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনে নামে।

এজেন্ডা ছাড়া আলোচনা

কমিশনের সঙ্গে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, এমন প্রশ্নে সাখাওয়াত বলেন, ‘ওনাদের কাছে কোনো এজেন্ডা পাই নাই। এজেন্ডাভিত্তিক ছিল না, এজেন্ডা হলে ভালো হতো। যে যার মতন কথা বলছে।’

বরিশালে মেয়র আর ইউএনওর ঘটনা টেনে তিনি বলেন, ‘ইলেকশন কমিশনের ইউএনওকে সম্পূর্ণ প্রটেকশন দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।’

জেলা পরিষদ নির্বাচন চলাকালে বরিশালের একটি কেন্দ্রে ইউএনওকে ‘স্টুপিডের মতো কথা বলবেন না’ বলে আলোচনায় আসেন সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ।

বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে উপমহাদেশে সবচেয়ে বড় কমিশন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এর চাইতে বড় ইলেকশন কমিশন আর কোথাও নাই। তিন হাজার স্থায়ী লোক নিয়ে স্থায়ী অফিস নিয়ে আর কোনো লোকজন নেই। এই লোকগুলোকে ইউটিলাইজ করতে হবে।’

বর্তমানে ভোটারের সংখ্যা অনুযায়ী সংসদীয় আসনগুলোতে একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা দিয়ে কাজ হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ‘আইনে কোথাও বলা নাই একজনই রিটার্নিং কর্মকর্তা হতে হবে৷ সেই জায়গাতে আপনাদের নিজস্ব অফিসার যাতে কন্ট্রোল মেজারটা আপনাদের হাতে থাকে।’

ব্যালটে কারচুপি শনাক্ত সহজ

সাখাওয়াত হোসেন যে কমিশনে ছিলেন, সেই কমিশন বিতর্কহীন নির্বাচন করেছিল ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে। সেই নির্বাচন হয়েছিল ব্যালটেই।

তার কাছে প্রশ্ন ছিল ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমের প্রয়োজন আছে কি না।

তিনি বলেন, ‘ভালো হোক মন্দ হোক। দেড় শ আসনে ইভিএম না কিনে যতখানি পারেন তার চেয়ে বেটার সিসি ক্যামেরা কেনেন। এটা শুধু কেন্দ্র থেকে নয় ভাগ করে দেন পাঁচজন কমিশনার আছেন, এগুলো রেকর্ডেড থাকবে।’

পেপার ব্যালটে ভোট চুরি করলেই সহজেই শনাক্ত সম্ভব জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে ভোটার তালিকা আছে। স্বচ্ছ ভোটার তালিকা, সিগনেচার আছে। ম্যাচ করা যায়। সূক্ষ্ম কারচুপি যেটা আপনারা দেখলেন ইভিএমে কোনো ঝামেলা নাই। হইচই নাই। ভেতরে কী হচ্ছে। অন্য সিস্টেমে যেটা হবে বাইরেও হইচই হবে। একজন লোকও পারবে না। বুথ ক্যাপচার করতে পাঁচ-ছয়জন লোক লাগবে। তখন প্রতিপক্ষ হইচই করবে। সেটা আপনারা আরও ভালো করে দেখতে পারবেন।’

জাতীয় পরিচয়পত্র নির্বাচন কমিশনের হাতে থাকা উচিত

এই মত প্রকাশ করে সাখাওয়াত বলেন, ‘এনআইডিটা সরকার এখান থেকে কেন নিতে চাচ্ছে সেটা পরিষ্কার না। এটা যদি আলাদা হয়ে যায় তাহলে কোনো একসময়ে ভোটার লিস্ট নিয়ে কথা উঠবে, কারটা ঠিক।’

যেসব দেশে আলাদা আছে সেখানে ভোটার তালিকা নিয়ে বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই জায়গাতে বর্তমান কমিশনকে সরকারকে বুঝাতে হবে।

‘আলটিমেটলি গভর্নমেন্ট চাইলে আলাদা করে করতে পারে। কমিশনের এখান থেকে একেবারে এই কথা বলা আমাদের কী করার আছে। গভর্নমেন্টকে বোঝালে বোঝে। কারণ, এই সরকারের সময়েই ভোটার লিস্ট তৈরি করেছিলাম। তারা এটার মাধ্যমে ইলেকশন করেছিল। তাহলে এখন হঠাৎ এনআইডিটা কেন নিতে চায়? এর বোধগম্যতা আমার কাছে নাই।’

এ বিভাগের আরো খবর