ঢাকার সাভারে ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামি ধরতে মধ্যরাতে তার বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় তাকে না পেয়ে পাশের বাসা থেকে পুলিশ একই মামলার আরেক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। পরে ভোরে বাড়ির পাশেই মেলে রাতে ‘পালিয়ে যাওয়া’ ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির মরদেহ।
জানা গেছে, আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ি এলাকায় হাজী আম্বিয়া কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজসংলগ্ন আসামি সুলতান বেপারীর বাড়িতে মঙ্গলবার রাত রাত ১টার দিকে অভিযান চালায় পুলিশ। পরে ভোরে বাড়ির পাশে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন।
পুলিশের ধারণা, অভিযানের সময় পালাতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে তার।
মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাচিব সিকদার।
বাড়ির পাশ থেকে মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করলেও ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলতে চাননি সুলতানের ছোট ভাই রোমান বেপারী। এ বিষয়ে জানতে তাৎক্ষণিক ওই পরিবারের আর কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রতিবেশী নিউজবাংলাকে বলেন, সুলতান বেপারী ও সম্পর্কে চাচা মিয়াজ উদ্দিনসহ কয়েকজন মিলে ইটভাটা দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রশাসন সেটি বন্ধ করে দিলে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন সুলতানসহ তার ব্যবসায়িক অংশীদাররা। এ নিয়ে টাকাপয়সা লেনদেন-সংক্রান্ত একটি মামলা হয়।
এই প্রতিবেশী আরও বলেন, মামলায় মঙ্গলবার মধ্যরাতে পুলিশ সুলতানকে ধরতে এসেছিল। এ সময় তিনতলা বাড়িতে পুলিশ ঢুকতে চাইলেও মূল ফটক খোলেনি সুলতানের পরিবার। এরপর দ্বিতীয় তলায় সুলতানের ফ্ল্যাটে ঢুকতে পারলেও তাকে পায়নি পুলিশ। এ সময় একই মামলায় সুলতানের চাচা মিয়াজ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় পুলিশ। তাদের বাসা পাশাপাশি।
পরে ভোরে বাড়ির পাশে সুলতানকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন তার পরিবারকে জানান। তার মাথায় রক্তাক্ত জখম ছিল।
এ বিষয়ে ওয়ারেন্ট তামিলকারী আশুলিয়া থানার এসআই হাচিব সিকদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাতের ঘটনা তো জানি না। সকালে শুনলাম। কিন্তু কীভাবে কী হলো বুঝতে পারলাম না। বিষয়টা হচ্ছে, রাতে আমরা গিয়েছিলাম ওয়ারেন্টের আসামি (সুলতান) ধরতে। বাসায় ঢুকে আমরা আসামিকে পাইনি। সকালে শুনলাম অ্যাক্সিডেন্ট করছে, মারা গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাদ দিয়ে পালাতে গিয়ে দুর্ঘটনাবশত পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। ওই সময় শুনলে তো আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতাম।’
এক প্রশ্নের জবাবে হাচিব সিকদার বলেন, ‘ওয়ারেন্ট হলে তো আমাদের তামিল করতেই হয়। একই মামলায় মিয়াজ উদ্দিন নামে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’