রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কাজের ধারা ও গতি একই রকমভাবে এগিয়ে চলার জন্য বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিকাশেভ।
বুধবার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় চুল্লির প্রেশার ভেসেল প্রতিস্থাপনের সময় তিনি রূপপুরের কাজের অগ্রগতি ও বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে প্রেশার ভেসেল প্রতিস্থাপনের উদ্বোধন করেন।
লিকাশেভ বলেন, ‘আমি এ কথা বলতে চাই যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অব্যাহত না থাকলে কাজের এত উচ্চগতি অর্জন করতে পারতাম না।’
কোভিড মহামারির সময়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এমন দুর্যোগ উপেক্ষা করে আমাদের নির্মাণকারীরা নিয়মিতভাবে ফ্লাইট করে আসা-যাওয়া করেছে আর তার জন্য বাংলাদেশের সহকর্মীদের প্রতি আমি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমাদের প্রকল্প নির্মাণের গতি একই রকম রয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে।’
আধুনিক বাংলাদেশের মহান স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান একবার বলেছিলেন, ‘আমি আপনাদের স্বাধীনতা দিয়েছি সর্বদা সংরক্ষণ করুন’- এ কথা স্মরণ করে রোসাটমের মহাপরিচালক বলেন, ‘তার (বঙ্গবন্ধু) কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। যার ফলে জ্বালানি স্বাধীনতার মাধ্যমেও নিজের দেশের রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব আরও মজবুত হবে।’
কাজের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে লিকাশেভ বলেন, ‘হুবহু এক বছর আগে একই রকম একটি পাওয়ার প্ল্যান্ট উদ্বোধনের সাক্ষী আমরা হয়েছি। আর এক্ষুনি আমরা দেখছি রোসাটমের মাধ্যমে কত কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আমরা কত এগিয়ে গিয়েছি। সব বাধ্যবাধকতা পূরণ করে আমরা এই প্রকল্পের গুরুত্ব নির্ধারণ করেছি।’
প্রথম ইউনিটেও অনেক কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে টারবাইন ফলের ফলার ক্রেইন স্থাপন করা হয়েছে। এপ্রিলে জেনারেটর স্ট্যাটর স্থাপন করা হয়েছে। তা ছাড়া এপ্রিলে ইউনিট বিল্ডিং স্থাপন ডেডলাইনের আট মাস আগেই শেষ করা হয়েছে।’
চারটি কুলিং টাওয়ার নির্মাণের জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছি। আমরা নিরলস প্রচেষ্টা চালাচ্ছি আগামী বছর ফ্রেশ পারমাণবিক জ্বালানির প্রথম বেইজ উৎপাদন করার জন্য সাইট তৈরি হয়।’
বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে জানিয়ে লিকাশেভ বলেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্রে যারা বিশেষ কাজ করবে আমরা ইতিমধ্যে তাদের প্রস্তুত করছি। ৬০৬ জন বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষণ শুরু করেছে। প্রশিক্ষণ পেয়েছে প্রায় ৩০০ মানুষ। ২৪০ জন রাশিয়া থেকে শিক্ষা নিয়ে এসেছে। আজ আমরা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ট্রেনিং সেন্টার উদ্বোধন করেছি। সেখানে প্রশিক্ষণ পাবেন ১৭ জন বিশেষজ্ঞ। যারা ভবিষ্যতে এখানে কাজ করবেন।’