বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পার্চিংয়ে কমছে খরচ, বাড়ছে ফলন

  •    
  • ১৯ অক্টোবর, ২০২২ ১০:২৬

পার্চিং ইংরেজি শব্দ, যার অর্থ ফসলের ক্ষেতে বা মাঠে ডাল বা কঞ্চি পুঁতে দেয়া। এসব ডাল বা কঞ্চিতে পাখিরা বসে। এগুলো একদিকে ক্ষতিকর পোকা খেয়ে রক্ষা করে ফসল, অন্যদিকে কীটনাশকের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে বাঁচায় অর্থ ও পরিবেশ।

ফসলি জমিতে ক্ষতিকর পোকামাকড় দমনে কীটনাশক ব্যবহার করে থাকেন কৃষক। এতে ফসল উৎপাদনে ব্যয় বাড়ার পাশাপাশি ঝুঁকিতে পড়ে পরিবেশ। এমন পরিস্থিতি থেকে কৃষককে রেহাই দিতে ‘পার্চিং’ নামের পদ্ধতি বাতলে দিয়েছেন গবেষকরা।

এ পদ্ধতিতে কীটনাশক ছাড়া কম খরচে পোকা দমনের পাশাপাশি বাড়ানো যাচ্ছে ফসল উৎপাদনও, যেটি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায়।

পার্চিং কী

পার্চিং ইংরেজি শব্দ, যার অর্থ ফসলের ক্ষেতে বা মাঠে ডাল বা কঞ্চি পুঁতে দেয়া। এসব ডাল বা কঞ্চিতে পাখিরা বসে। এগুলো একদিকে ক্ষতিকর পোকা খেয়ে রক্ষা করে ফসল, অন্যদিকে কীটনাশকের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে বাঁচায় অর্থ ও পরিবেশ।

পার্চিং পদ্ধতির আরেক সুবিধা হলো পাখির বিষ্ঠা জমিতে পড়ার মধ্য দিয়ে উর্বরতা বৃদ্ধি, যা ফলন বাড়ানোয় সাহায্য করে।

আখাউড়া উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ফসল রোপণের পরপরই পার্চিং করতে হয়। ফসলের সর্বোচ্চ উচ্চতা থেকে কমপক্ষে এক ফুট ওপরে পার্চিং করা উচিত।

কী বলছেন কৃষকরা

চলতি মৌসুমে পৌর শহরসহ আখাউড়া উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ উপজেলা শতভাগ পার্চিংয়ের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। বর্তমানে প্রায় ৬৫ শতাংশ জমিতে পার্চিং হয়েছে।

পৌর শহরের তারাগন, দেবগ্রাম, উপজেলার মোগড়াসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, আমনের জমিতে স্থানীয় কৃষকরা বাঁশের আগা, কঞ্চি, গাছের ডাল পুঁতে দিয়েছেন। অনেক জমির আইলের পাশে এবং জমির মাঝখানে সারিবদ্ধভাবে ধইঞ্চা গাছ লাগানো হয়েছে। এসব পার্চিংয়ে ফিঙে, শালিকের মতো পাখি বসে থাকতে দেখা গেছে।

মোগড়া এলাকার কৃষক সুরুজ মিয়া জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ছয় বিঘা জমিতে আমনের চাষ করেছেন। আবাদকৃত জমিতে বাঁশের কঞ্চি ও গাছের ডাল পুঁতে রেখেছেন। সেখানে পাখি এসে বসছে; জমির ক্ষতিকর পোকামাকড় ধরে খাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, গত কয়েক বছর ধরে তিনি এ পদ্ধতিতে ধান চাষ করছেন; প্রয়োজনের কম কীটনাশক ব্যবহার করছেন।

এ পদ্ধতিতে চাষ করায় ফলনও ভালো হচ্ছে বলে জানান তিনি।

কৃষক আবদুল আলিম মিয়া জানান, জমিতে ধান আবাদ করে প্রতি বছরই তার লোকসান গুনতে হয়েছে। পোকামাকড়সহ নানা কারণে ফলন ভালো হতো না। এ অবস্থায় ধান চাষ থেকে অনেকটাই মুখ ফিরিয়ে নেন। একপর্যায়ে কৃষি অফিসের পরামর্শে পার্চিং পদ্ধতিতে চাষ করে সুফল পান।

আরেক কৃষক জমির খান জানান, পোকামাকড়ের হাত থেকে ধানের গাছ রক্ষায় চারা লাগানোর পর থেকেই তিনি গাছের ডাল ও কঞ্চি পুঁতে রাখেন। পাখিগুলো ক্ষতিকর পোকামাকড় ধরে খাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, গত ২ বছর ধরে তিনি পার্চিং পদ্ধতিতে ধান আবাদ করছেন। এতে তার উৎপাদনের খরচ কমার পাশাপাশি ফলনও ভালো হচ্ছে। অন্য বছর যেখানে তাকে তিন-চার দফা কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়েছে, এ বছর মাত্র একবার তিনি কীটনাশক ব্যবহার করেছেন।

কৃষি কর্মকর্তার ভাষ্য

আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, ‘ক্ষতিকর পোকা দমনে পার্চিং পদ্ধতি খুব কার্যকর। এই পদ্ধতি কাজে লাগালে কীটনাশকের ব্যবহার কমে যায়। সেই সঙ্গে কৃষকের উৎপাদন খরচও কম হয়। বালাইনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখা যায়।

‘প্রতি বছরই পার্চিং পদ্ধতির চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আশা করছি স্বল্প সময়ের মধ্যে পার্চিং পদ্ধতিতে চাষ শতভাগ হয়ে যাবে।’

এ বিভাগের আরো খবর