জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলা সদরের সাথে মাহমুদপুর ইউনিয়নের অধিবাসীদের যোগাযোগ সহজ করতে বন্ধরৌহা গ্রামের কাটাখালী নদীর উপর ৯০ মিটার একটি সেতু নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। তবে সেতুর দুই পাশে কোনো সড়ক না থাকায় দেখা দিয়েছে বিড়ম্বনা। প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু স্থানীয় জনগণের কোনো কাজে আসছে না।
স্থানীয়রা বলছেন, এক বছর নির্মাণকাজ চলার পর চলতি বছরের শুরুর দিকে এটি শেষ হয়। তবে ৯ মাসেও দুই পাশে কোনো সড়ক নির্মাণ না করায় সেতুটি কোনো কাজে আসছে না। কয়েক কিলোমিটার ঘুরে জমির ফসল আনতে হয় স্থানীয়দের।
বন্ধরৌহা গ্রামের বাসিন্দা মো. মাহবুবুর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্রিজ হওয়ার পরে এহন তো রাস্তা ঘাট নাই। এহন সরকার যদি রাস্তা-ঘাট দেয়, তাহলে ব্রিজটা কাজে লাগবে।’
সেতুর অপর পাশে মাহমুদপুর ইউনিয়নের পুঠিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা মো. খোকন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বন্দের ফসল নিয়ে আসা আঙ্গর জন্য খুব কষ্ট হয়। তিন চার কিলোমিটার ঘুইরে আওন লাগে। আঙ্গের মেলা কষ্ট। এই কষ্টে আর কতদিন থাকমু।’
একই গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আঙ্গর বন্দের ফসল নিয়ে আইতে হইলে পাঁচ কিলোমিটার ঘুইরে ফসল আনা লাগে। আমাদের গ্রামে ৫ হাজার লোকের সমাবেশ। আমরা ব্রিজ পাইছি, রাস্তা পাই নেই। আঙ্গর মাটির দরকার, রাস্তার দরকার।’
বন্ধরৌহা গ্রামের ওমর ফারুক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্রিজ হয়ছে। এহন রাস্তা দরকার। আঙ্গরে চলা ফেরা করা দরকার। এলাকার উন্নয়ন হবো। রাস্তা হইলে সব দিক দিয়েই ভালা। আবাদ মৌসুম, ঘোরাফেরা। সব দিক দিয়েই সুবিধা হবো।’
সড়ক ছাড়াই সেতু নির্মাণ করায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। স্থানীয়দের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই এটি হয়েছে। দুর্ভোগ কমাতে দ্রুত সড়ক নির্মাণ করা হবে বলে আশা করছে স্থানীয়রা।
পুঠিয়ারা গ্রামের মো. মিনহাজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্রিজ করছে ঠিক আছে। কিন্তু রাস্তা ছাড়া যে ব্রিজটা করছে এডে বোকামি করছে। এহন আমরা রাস্তা চাই। রাস্তার জন্যে এপার থেকে ওপারে যাইতে পারি না।’
বন্ধরৌহা গ্রামের ষাটোর্ধ জহুরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জানি যে আগে রাস্তা হয়, তারপরে ব্রিজ হয়। এহন ব্রিজ হইছে রাস্তা নাই।’
এ বিষয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সায়েদুজ্জামান সাদেক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অ্যাপ্রোচ রোডের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতা থাকায় কিছুটা সময় ব্যয় হয়েছে। আমরা খুব দ্রুত গতিতে অ্যাপ্রোচের কাজটি শেষ করব।’