বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রূপপুরের বিদ্যুৎপ্রাপ্তি পেছাতে পারে গ্রিডলাইনের কারণে

  •    
  • ১৮ অক্টোবর, ২০২২ ২১:৫৮

আগামী বছরের শেষভাগে গিয়ে ‘প্রি-অপারেশনাল কমিশনিং’ বা পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যেতে চায় রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গ্রাহক পর্যায়ে সেই বিদ্যুৎপ্রাপ্তিতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে গ্রিডলাইনের দুর্বলতা। সারা দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের সক্ষমতার ঘাটতির কারণে এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উৎপাদনের আসার সক্ষমতা অর্জন করলেও গ্রিডলাইনের কারণে তা পিছিয়ে যেতে পারে।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আসা শুরু হবে। ওই সময়ের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে পারমাণবিক চুল্লির প্রথম ইউনিটের নির্মাণ কাজ।

আর আগামী বছরের শেষভাগে গিয়ে ‘প্রি-অপারেশনাল কমিশনিং’ বা পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যেতে চায় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গ্রাহক পর্যায়ে সেই বিদ্যুৎপ্রাপ্তিতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে গ্রিডলাইনের দুর্বলতা। সারা দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের সক্ষমতার ঘাটতির কারণে এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্পে বুধবার দ্বিতীয় পারমাণবিক চুল্লির কাজ শুরু হচ্ছে। এ উপলক্ষে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান।

প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনকালে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে আমরা রেডি। তবে একটা কথা বলে রাখি। আমি তৈরি হলেই তো হবে না। আমি তো এখানে কারেন্ট বিক্রি করব। কিন্তু যারা কিনবে তাদের কথা তো বলতে পারব না।’

তাহলে কী হতে যাচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সেই অবস্থা আমি বলব না। তাদের ব্যাপারে আমি বলতে চাই না। কারণ তারা হচ্ছে আমাদের বায়ার (ক্রেতা)।’

তবে যারা এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনার কথা ভাবছে, তারা সব ধরনের অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করছে বলেও নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রী।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ চলছে। ছবি: নিউজবাংলা

রূপপুর প্রকল্পে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হলে তা গ্রিডে কবে নাগাদ দেয়া হতে পারে তার কোনও উত্তর নেই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রীর কাছে। তিনি বলেন, ‘গ্রিড তো আমার হাতে না।’

বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রস্তুত হয়ে যাবে, আর সেখানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ গ্রিডে দেয়া যাবে না?- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে রেগে যান ইয়াফেস ওসমান। তিনি বলেন, ‘সেজন্য কি আমাকে ফাঁসি দেবেন আপনি?

‘এটা আমার না, সারা দেশের লস। কিন্তু আমি এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না।’

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কিনা তা জানতে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার পক্ষ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি।

এদিকে অর্থনৈতিক লেনদেনে রাশিয়া তাদের নিজেদের মুদ্রা রুবল-এর ব্যবহার চেয়েছে। এ প্রসঙ্গটিও মন্ত্রী খোলাসা করেননি। তিনি বলেন, ‘আমি সে ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না। এটা ন্যাশনাল ইস্যু।

‘তারা (রাশিয়া) করতে চায়, কিন্তু আমি দিতে পারব কি পারব না, এটা তো আমার হিসাব না। এটা অর্থ মন্ত্রণালয় দেখে।’

অর্থ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে তাদের অবস্থান জানিয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা কি আমি বলতে পারি? আমার নলেজে এটা নেই। আমার কাছে নেই। আর থাকলেও বলব না।’

অর্থনৈতিক লেনদেনে কিছু জটিলতার কথা শোনা যাচ্ছিল, তাতে কোনো ধরনের সংকট তৈরি হতে পারে কীনা জানতে চাওয়া হয় মন্ত্রীর কাছে।

তিনি বলেন, ‘আমি বলতে পারি, আমরা দুই পক্ষই সেটা সমাধানের চেষ্টা করেছি। এটার জন্য কাজে কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি।’

তবে প্রকল্প ব্যয় বাড়ার যে গুঞ্জন তা উড়িয়ে দিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘একটা ফ্রেমের মধ্যে বাধা। তার মধ্যেই হবে।’

প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে প্রকল্প পরিচালক শৌকত আকবর বলেন, ‘প্রথম ইউনিটের ৭০ ভাগ এবং দ্বিতীয় ইউনিটের ৪০ ভাগ কাজ হয়ে গেছে। আর ফিজিক্যাল প্রোগ্রেস ফাইন্যান্সিয়াল থেকে বেশি।’

নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরের দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ শেষ হলে স্টার্টআপ কমিশনিং (উৎপাদন) করা হবে বলে জানান তিনি। বলেন, ‘এরপর আমরা জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করব। এই কমিশনিংয়ের কাজ ২০২৩ সালের শেষ দিকে শুরু হওয়ার কথা। আর গ্রিডে যাবে ২০২৪ সালে। দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে যাবে ২০২৫ সালে।’

রূপপুর থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল জ্বালানি ইউরেনিয়াম আমদানি শুরু হচ্ছে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে। রাশিয়া থেকে আমদানি করা হবে সেই জ্বালানি। এর নিরাপত্তা, পরিবহন ও ব্যবস্থাপনাবিষয়ক নানা অবকাঠামো তৈরির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ। এর পুরোটাই হবে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) নির্দেশনা মেনে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ চলছে। ছবি: নিউজবাংলা

এই প্রকল্পে পরমাণু বিকিরণ নিয়ে কোনো ঝুঁকি নেই জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘আমাদের কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। প্রকল্প এলাকার ৩০০ মিটার দূরত্বের পর থেকেই জনগণ বসবাস করতে পারবে।’

বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে প্রাথমিকভাবে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ ধরা হয়েছে। বাংলাদেশে একক প্রকল্প হিসেবে এটি সবচেয়ে বড় কোনো অবকাঠামো প্রকল্প। এটি তৈরিতে সহযোগিতা দিচ্ছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় আণবিক শক্তি করপোরেশন-রোসাটম।

প্রতিষ্ঠানটি প্রয়োজনীয় জ্বালানি হিসেবে ইউরেনিয়াম সরবরাহের পাশাপাশি জ্বালানি ব্যবহারের পর উৎপন্ন বর্জ্যও ফেরত নেবে।

এ বিভাগের আরো খবর