লক্ষ্মীপুরে বৃদ্ধ দম্পতির গলায় কাপড় প্যাঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এমনটি প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহতরা হচ্ছেন ৭০ বছর বয়সী মো. সিদ্দিক উল্যাহ ও তার স্ত্রী ৬০ বছরের আতরের নেছা।
সোমবার রাত ১২টার দিকে সদর উপজেলার শাকচর এলাকায় নিজ ঘরের দরজার তালা ভেঙে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ওই দম্পত্তির কোনো সন্তান ছিল না। শাহজাহান নামের দত্তক নেয়া এক ছেলে রয়েছে।
তবে সম্পত্তির লোভে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। এ ঘটনায় পালিত ছেলে শাহজাহান ও প্রতিবেশী গিয়াস উদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
বৃদ্ধ দম্পতির স্বজনদের আহাজারি। ছবি: নিউজবাংলা
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘এটি একটি হত্যাকাণ্ড। সম্পত্তির লোভে তাদের গলায় কাপড় প্যাঁচিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। নিহত দুজনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, ‘জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে। কারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। তদন্ত চলছে। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত শুক্রবার দুপুরে সিদ্দিক উল্যাহ ও তার স্ত্রী আতরের নেছাকে ঘরে দেখতে পেয়েছে স্থানীয়রা। এরপর থেকে তাদের আর কোনো খোঁজ ছিল না। কিন্তু ঘরের বাইরের দরজা লাগানো ছিল।
সোমবার রাত ১০টার দিকে পালিত ছেলে শাহজাহান ঘরের দরজার সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করে তাদের দুজনের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে স্থানীয়দের খবর দেন। এ সময় ঘরের ভেতর থেকে দুগন্ধ বের হলে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা।
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে খাটের ওপর স্বামী-স্ত্রীর গলায় কাপড় প্যাঁচিয়ে থাকা অবস্থায় দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে।
তবে শুক্রবার বিকেল থেকে রাতের কোনো একসময় তাদের দুজনকে গলায় কাপড় প্যাঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ ছাড়া ঘরের ছাদের দরজা খোলা ছিল। পাশাপাশি মূল্যবান দলিলপত্র নিয়ে যায় বলে জানায় পুলিশ।
তবে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, যেহেতু বৃদ্ধ দম্পতির ঘরে কোনো সন্তান নাই। এ কারণে সম্পত্তির লোভে স্বজন বা অন্য কেউ পরিকল্পিতভাবে তাদের দুজনকে গলায় কাপড় প্যাঁচিয়ে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ ও স্থানীয়রা। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানায় এলাকাবাসী। নিহত দম্পত্তির কোনো শত্রু ছিল না। কারও সঙ্গে কোনো বিরোধ ছিল না। কেন এমন ঘটনা ঘটল সেটা নিয়ে নিবার্ক এলাকাবাসী।
নিহতদের স্বজন কামাল উদ্দিন বলেন, ‘জমি রেজিস্ট্রি করার বিষয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য রাতে এই বাড়িতে আসি। পরে ঘরের দরজা তালাবদ্ধ দেখে ডাকাডাকি করেও তাদের সাড়াশব্দ না পেয়ে স্থানীয়দের খবর দিই। পরে পুলিশ এসে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।