বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ফরিদপুরে আবার ফিরে এসেছে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ

  •    
  • ১৮ অক্টোবর, ২০২২ ০৯:৪৬

গত বছর পাথর নিক্ষেপে বেশ কয়েকজন যাত্রীর আহত হওয়ার ঘটনার পর জেলা প্রশাসন ও রেল কর্তৃপক্ষ নানা পদক্ষেপ নেয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী অভিযান চালায়। তখন এ প্রবণতা বন্ধ হয়। সেটি আবার ফিরে এসেছে।

ফরিদপুরে আবারও চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটছে। মাঝখানে বেশ কিছুদিন বিরতির পর আবারও এমন ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

বিশেষ করে রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে চলন্ত রেলে পাথর ছুড়ে মারায় যাত্রী আহত হচ্ছেন। বড় ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটলেও যেকোনো মুহূর্তে আশঙ্কাজনক কিছু ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এসব ঘটনার অধিকাংশই থানা কিংবা রেল পুলিশকে জানানো হয় না বলেও দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায় না।

গত ১৪ অক্টোবর রাতে ফরিদপুর থেকে ভাঙ্গা যাওয়ার পথে পুখুরিয়া স্টেশন ছাড়ার এক মিনিট পর চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুড়ে মারার ফলে গুরুতর আহত হন লুবনা বেগম (২০) নামের এক নারী।

সাম্প্রতিককালে ফরিদপুরের এই রেল রুটে কমপক্ষে ১০ জন রেলযাত্রী এভাবে পাথরের আঘাতে আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

আবু বকর সিদ্দিকী নামের এক রেলযাত্রী জানান, এর আগে ভাঙ্গা স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রেন তালমা স্টেশন ত্যাগ করার পরে তার সামনেই এভাবে পাথরের আঘাতে একজন যাত্রীর আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ওই যাত্রীর কপাল ফেটে যায়।

গত বছর এভাবে বেশ কয়েকজন যাত্রীর আহত হওয়ার ঘটনার পর জেলা প্রশাসন ও রেল কর্তৃপক্ষ নানা পদক্ষেপ নেয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী অভিযান চালায়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং স্থানীয়রাও সচেতনতামূলক প্রচারণা চালান। এর ফলে চলন্ত ট্রেনে এভাবে পাথর নিক্ষেপের প্রবণতা বন্ধ হয়।

সেটি আবার ফিরে এসেছে। রেললাইনের মাটির ধস রোধে রেললাইনের স্লিপারের নিচে রাখা পাথর কুড়িয়ে নিয়ে সেগুলো দুষ্কৃতকারীরা ট্রেনের জানালা লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করে। এতে অন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি যাত্রীর মৃত্যুও ঘটেছে।

রেলওয়ে পুলিশ পাথর ছুড়ে মারার সঙ্গে জড়িতদের ব্যাপারে তথ্য দিলে নগদ টাকা পুরস্কারেরও ঘোষণা দেয়। নানাভাবে এর বিরুদ্ধে প্রচার প্রচারণা এখনও চালু রয়েছে। তবুও ফিরে আসছে পাথর ছোড়ার প্রবণতা।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা রেলস্টেশন মাস্টার মো. শাহজাহান জানান, সম্প্রতি আবারও পাথর ছুড়ে রেলযাত্রীদের আহত করার কয়েকটি ঘটনার খবর জেনেছেন তিনি। ফরিদপুরের পুখুরিয়া থেকে তালমার মাঝামাঝি জানদি গ্রাম ছাড়িয়ে এ ঘটনা বেশি ঘটছে। এ ছাড়া পুখুরিয়া পেরোনোর পরে এবং বাখুন্ডার কাছাকাছি কিছু ঘটনার খবরও জানা গেছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার গাড়িতে এসব বেশি হয়।

তিনি জানান, এসব ঘটনার পরে আহতরা লিখিত অভিযোগ দেন না বলে নির্দিষ্ট করে এর সংখ্যার প্রকৃত হিসাব জানা থাকে না। তবে এসব ঘটনা মাঝেমধ্যে ঘটে। সিআরপি থেকে সংবাদ সম্মেলন করে এসব ঘটনার বিরুদ্ধে জনমত তৈরির অনুরোধ জানানো হয়েছে।

চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপকারীদের সম্পর্কে তথ্য দিলে কিংবা ধরিয়ে দিলে ১০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছে রেলওয়ে পুলিশ।

রেলওয়ে আইনের ১২৭ ধারা অনুযায়ী ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান আছে। ৩০২ ধারা অনুযায়ী পাথর নিক্ষেপে কারও মৃত্যু হলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। তবে বাস্তবে সাজার নজির খুব একটা নেই।

এ ব্যাপারে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইমদাদ হোসাইন বলেন, ‘এ রকম ঘটনা এখন পর্যন্ত রেল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায়নি। যদি রেল কর্তৃপক্ষ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সহকারে পুলিশের সহযোগিতা চায়, তবে পুলিশ এ ব্যাপারে সহযোগিতা করবে।’

রাজবাড়ী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদ আলম বলেন, ‘এ ধরণের ঘটনা মাঝেমধ্যে ঘটে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর অন্ধকারে পাথর ছুড়ে মারা হয়। বিশেষ করে পুখুরিয়ার ওই দিকটাতে বেশি হয়। তবে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা না হওয়ায় বেশির ভাগ সময়ই পুলিশকে জানায় না ভুক্তভোগীরা। আমরা মাঝেমধ্যে রেলের ডিউটিরত পুলিশের মাধ্যমে খবর পেলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেই।’

তিনি বলেন, ‘এর আগে ফরিদপুরের ডিবি পুলিশকে দিয়ে অভিযান চালানোর পর পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। তবে আমরা সোমবার আবার সেখানে যাব এবং স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানদের নিয়ে মিটিং করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।’

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। রেলযাত্রা নিরাপদ করতে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিভাগের আরো খবর