যুদ্ধ এবং খাদ্য নিয়ে রাজনীতি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের গ্রহে খাদ্যের অভাব নেই, অভাবটা কেবলই মনুষ্য-সৃষ্ট।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দফতরে সোমবার সন্ধ্যায় আয়োজিত ‘বিশ্ব খাদ্য সম্মেলন-২০২২’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কি-নোট স্পিকার হিসেবে দেয়া বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।
ইতালির রোমে এফএও-এর সদর দফতরে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকৃত অর্থে আমাদের গ্রহে খাদ্যের কোনো অভাব নেই। অভাব কেবলই মনুষ্য-সৃষ্ট। খাদ্য নিয়ে রাজনীতি ও ব্যবসায়িক স্বার্থ, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ এবং কীটপতঙ্গ ও রোগের আক্রমণ- এসব কিছু আমাদের কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।’
তিনি বলেন, ‘অস্ত্র তৈরিতে বিনিয়োগ করা অর্থের ছোট একটি অংশও যদি খাদ্য উৎপাদন ও বিতরণে ব্যয় করা হয়, তবে এই পৃথিবীতে কেউ ক্ষুধার্ত থাকবে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অনুরোধ করছি- যুদ্ধ থামান, খাদ্য নিয়ে রাজনীতি বন্ধ করুন, খাদ্যের অপচয় রোধ করুন। এসবের পরিবর্তে খাদ্য ঘাটতি ও দুর্ভিক্ষকবলিত এলাকায় খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করুন। মানুষ হিসেবে আমাদের অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে প্রত্যেকেরই খাদ্য নিয়ে বেঁচে থাকা এবং সুন্দর জীবনযাপনের অধিকার রয়েছে।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘বিভিন্ন হিসাবে অনুমান করা হয় বিশ্বের ৮০০ মিলিয়নের বেশি মানুষ বা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশের বেশি মানুষ প্রতিদিন ক্ষুধা নিয়ে ঘুমাতে যায়। ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পাল্টা-পাল্টি নিষেধাজ্ঞায় পরিস্থিতি এখন আরও খারাপ হয়েছে। এটা বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহ ব্যাহত করছে এবং খাদ্যের দাম বাড়িয়েছে।
‘প্রচুর সম্পদে পরিপূর্ণ এই বিশ্ব। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উল্লেখযোগ্য অবদান সেই সম্পদকে আরও বাড়িয়েছে। এরকম বিশ্বে এই বঞ্চনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের।’
ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত পৃথিবী কামনা করে প্রধানমন্ত্রী ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে দেয়া বঙ্গবন্ধুর ভাষণ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘আসুন আমরা একসঙ্গে এমন একটি বিশ্ব তৈরি করি যা দারিদ্র্য, ক্ষুধা, যুদ্ধ ও মানুষের দুর্ভোগ দূর করতে পারে এবং মানবতার কল্যাণের জন্য বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।’