বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মরিয়ম বললেন মা নিখোঁজ, আদুরীর দাবি তার জিম্মায়

  •    
  • ১৭ অক্টোবর, ২০২২ ২০:১৮

সোমবার মরিয়মই নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, তার মা রহিমাকে পাওয়া যাচ্ছে না; আদুরীর খুলনা শহরের বাড়ি থেকে দুই-এক দিন আগে নিখোঁজ হয়েছেন তিনি। তবে আদুরীর দাবি, রহিমা বেগম তার জিম্মাতেই আছেন। তবে কোথায় আছেন তা তিনি জানাতে রাজি হননি। 

খুলনা থেকে আত্মগোপনে যাওয়ার পর উদ্ধার হয়ে রহিমা বেগমের ফের বাড়ি ছাড়ার যে তথ্য তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান দিয়েছেন, সেটি সত্য নয় বলে দাবি আরেক মেয়ে আদুরী আক্তারের।

তিনি জানান, রহিমা বেগম তার জিম্মাতেই আছেন। তবে কোথায় আছেন তা তিনি জানাতে রাজি হননি।

এর আগে মরিয়ম জানিয়েছিলেন, আদুরীই তাকে মায়ের ফের নিখোঁজ হওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে আদুরীর দাবি, এমন কোনো কথা তিনি মরিয়মকে বলেননি।

রহিমার ফের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি রোববার রাত থেকে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তবে সে তথ্যের সত্যতা যাচাই করা যায়নি। সোমবার মরিয়মই নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, তার মা রহিমাকে পাওয়া যাচ্ছে না; আদুরীর খুলনা শহরের বাড়ি থেকে দুয়েকদিন আগে নিখোঁজ হয়েছেন তিনি।

নিউজবাংলাকে মরিয়ম সোমবার দুপুরে ফোনে বলেন, ‘আমার ভাই সাদী আমাকে জানিয়েছিল যে মাকে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে আদুরীর কাছে ফোন করে জানতে পারি মাকে পাওয়া যাচ্ছে না। কোথায় গেছে, কেউ জানি না। এবার আর মাকে খুঁজবো না।’

মরিয়ম জানান, ফরিদপুর থেকে উদ্ধার হওয়ার পর আদালত থেকে রহিমাকে আদুরীর জিম্মায় দেয়া হয়। তবে সব ভাই-বোনদের সিদ্ধান্তে রহিমা ও আদুরীকে তিনি ঢাকায় নিয়ে আসেন।

ঢাকায় রহিমার চিকিৎসা চলছিল জানিয়ে মরিয়ম বলেন, ‘মা আদালতে দাবি করেছিল, তাকে অপহরণের সময়ে মারধর করা হয়েছিল। তাই ঢাকাতে নিয়ে তাকে আমরা চিকিৎসকের কাছে যাই। তবে চিকিৎসক জানিয়েছেন তার গায়ে কোনো স্পট নেই। পরে মানসিক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাই। তারা জানিয়েছেন কোনো সমস্যা নাই।

‘তিনি কান্নাকাটি করতেন, বিশৃঙ্খলা করতেন, আমাদের সঙ্গে থাকতে চাইতেন না। পরে ১ অক্টোবর ছোট বোন আদুরী ও মাকে খুলনায় পাঠানো হয়। আজ আদুরী জানিয়েছে মা দুই বা এক দিন আগে নিখোঁজ হয়েছে। কখন নিখোঁজ হয়েছে, সঠিক টাইম বলতে পারব না।’

তবে মরিয়মের এই অভিযোগ সত্য নয় জানিয়ে আদুরী সোমবার সন্ধ্যায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এসব নিউজ কোথা থেকে আপনার পান আল্লাহ জানেন। মা আমাদের কাছে না থাকার কি আছে। মাকে আমরা এত কষ্ট করে নিয়ে এসেছি। আমাদের কাছে থাকবে না তো কোথায় থাকবে।

‘মাকে আদালত আমার জিম্মায় দিয়েছে। সে যেখানেই আছে আমার জিম্মায় আছে। সে ভালো আছে। মরিয়ম হয়ত বা ভুলে বলেছে। আমি মরিয়মকে এমন কোনো কথা বলিনি। কোথাও কেউ ডায়েরিও করিনি। আর মা আমার সঙ্গে আছে। এটা আপনারা বিশ্বাস না করলেও আমার কিছু যায় আসে না।’

আদুরীর এই বক্তব্যের পর মরিয়মের সঙ্গে আবারও যোগাযোগের চেষ্টা করে নিউজবাংলা। তবে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। যোগাযোগ করা যায়নি রহিমার ছেলে মিরাজ আল সাদীর সঙ্গেও।

তবে সোমবার দুপুরে মায়ের নিখোঁজের বিষয়ে মিরাজ নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘মা বোনদের কাছে আছে, নাকি অন্য কোথাও আছে জানি না। সে যদি কোথাও চলে যায় তো যাক। সে মারা গেলেও আমি তাকে খুঁজব না।’

খুলনা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, মায়ের বিরুদ্ধে সোমবার বিকেলে খুলনা মে‌ট্রোপ‌লিটন ম‌্যা‌জি‌স্ট্রেট মো. স‌রোয়ার আহ‌ম্মেদের আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন মিরাজ।

যা ঘটেছিল

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে রহিমাকে উদ্ধার করে খুলনার দৌলতপুর থানায় নেয় পুলিশের একটি দল।

পুলিশ জানায়, রহিমার খুলনার বাড়িতে বেশ কয়েক বছর আগে কুদ্দুস মোল্লা নামের এক ব্যক্তি ভাড়া থাকতেন। তার বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুরে। ওই বাড়িতেই রহিমা বেগম আত্মগোপনে ছিলেন।

এর এক দিন আগেই ময়মনসিংহে ১২ দিন আগে উদ্ধার করা একটি মরদেহকে মায়ের বলে দাবি করেন মরিয়ম মান্নানসহ রহিমা বেগমের তিন মেয়ে।

দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে রহিমা নিখোঁজ হন বলে অভিযোগ করে তার পরিবার। রাত সোয়া ২টার দিকে দৌলতপুর থানায় অপহরণের অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রহিমার ছেলে মিরাজ আল সাদী।

সে জিডি থেকে জানা যায়, নিখোঁজের সময় রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বেল্লাল হাওলাদার বাড়িতে ছিলেন। পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নেমেছিলেন রহিমা। দীর্ঘ সময় পরও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।

মাকে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে ২৮ আগস্ট দৌলতপুর থানায় মামলা করেন রহিমার মেয়ে আদুরী।

রহিমা অপহৃত হয়েছেন দাবি করে ১ সেপ্টেম্বর খুলনায় সংবাদ সম্মেলন করেন মরিয়ম। তিনি অভিযোগ করেন, রহিমার সঙ্গে জমি নিয়ে প্রতিবেশীদের মামলা চলছে। এ কারণে তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে তাদের ধারণা।

এরপর অপহরণের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বেল্লাল হাওলাদার এবং প্রতিবেশী মঈন উদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, রফিুকল ইসলাম পলাশ, মোহাম্মাদ জুয়েল ও হেলাল শরীফ।

আদালত ১৪ সেপ্টেম্বর রহিমা অপহরণ মামলা পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেয়। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর নথিপত্র বুঝে নেয় পিবিআই।

রহিমাকে উদ্ধারের পর গত ৪ অক্টোবর অপহরণ মামলার ৪ আসামি আদালত থেকে জামিন পান। তবে মামলার রহিমার স্বামী বেলাল হাওলাদার ও আরেক আসামি হেলাল শরীফ এখনও কারাগারে।

এ বিভাগের আরো খবর