বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রধানমন্ত্রীর নামে পৌর মেয়রের লটারি বাণিজ্য!

  •    
  • ১৭ অক্টোবর, ২০২২ ২০:১৩

বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবুর আলী বলেন, ‘প্রবেশ টিকেটের কথা বলে লটারির টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে বলে শুনেছি। এ ধরনের লটারির আইনত সুযোগ নেই।’

পাবনার বেড়ায় প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে অবৈধ লটারি বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে বেড়া পৌরসভার মেয়র আসিফ শামস রঞ্জনের বিরুদ্ধে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর ৭৬তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে মেয়র গোল্ডকাপ আন্তঃজেলা ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করে তরুণ সমাজকে মাদক থেকে দূরে রাখার বার্তা দিলেও এর আড়ালে অবৈধ লটারি বাণিজ্যের চালাচ্ছেন আয়োজকরা।

এ ধরনের লটারি পরিচালনায় প্রশাসনের কোনো অনুমোদন নেই বলেও নিশ্চিত করেছেন বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবুর আলী।

সরেজমিনে সোমবার বেড়া সিএনবি মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়- চটকদার বিজ্ঞাপনে মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, টিভি, ফ্রিজসহ বিভিন্ন পুরস্কারের প্রলোভন দেখিয়ে অটোরিকশায় করে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে লটারির টিকিট। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে ফুটবল টুর্নামেন্টের পোস্টার দিয়ে সাজানো সেই ভ্যান।

বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে লটারির টিকিট কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ। ২০ টাকা মূল্যের এই লটারি কেউ কেউ ৪/৫টি করেও কিনছেন। কেউ কিনছেন ১০ কিংবা ততোধিক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পৌরবাসী দাবি করেছেন, র‌্যাফেল ড্র এর নামে প্রতিদিন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন মেলার সংশ্লিষ্টরা। এতে আর্থিকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ।

মজিদ শেখ নামে এক ভ্যানচালক জানান, একটা ফ্রিজের আশায় তিনি প্রতিদিন ১০/১২টি লটারি কেনেন। এতে তার প্রতিদিন দুই শতাধিক টাকা খরচ হয়। যা আয় করছেন তার বেশিরভাগই লটারির টিকিট কিনতে ফুরিয়ে যাচ্ছে।

মজিদ বলেন, ‘লটারির টিকিট কেনা এখন আমার নেশার মতো হয়ে গেছে।’

টিকেট বিক্রেতা উজ্জল জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অর্ধশতাধিক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় বেড়াসহ পার্শ্ববর্তী সাঁথিয়া উপজেলা, সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় টিকিট বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি অটোরিকশায় গড়ে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ টিকেট বিক্রি হয়।

এ হিসেবে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪ লাখ টাকার টিকেট বিক্রি হলেও নামমাত্র পুরস্কার দিয়ে বাকি টাকা লুটপাট করছেন আয়োজকরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক টিকিট বিক্রেতা জানান, লটারি পরিচালনা করতে পৌর মেয়রের সঙ্গে চুক্তি করেছে একটি সংস্থা। টিকিট বিক্রি করে যে টাকা আয় হচ্ছে তা মেলার আয়োজক ও লটারি কোম্পানি ভাগাভাগি করে নেয়।

গায়ে প্রবেশমূল্য লেখা থাকলেও এটি আসলে একটি লটারির টিকিট

এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর নামে লটারি বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এক সহ-সভাপতি বলেন, ‘আসিফ শামস রঞ্জন ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু এমপির ছেলে। নানা বিতর্কিত কাজ করেও তারা বার বার পুরস্কৃত হন। তাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিলে এলাকায় টিকে থাকাই মুশকিল। তবে, প্রধানমন্ত্রী আমাদের আবেগের জায়গা। তার নামেও যে এরা ব্যবসা করবে তা কখনো কল্পনা করিনি।’

এ বিষয়ে কথা বলতে টুর্নামেন্টের আয়োজক বেড়া পৌর মেয়র আসিফ শামস রঞ্জনের মুঠোফোনে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও তার কোনো প্রতিউত্তর মেলেনি।

তবে, খেলার আড়ালে লটারি পরিচালনার কোনো অনুমোদন দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবুর আলী।

তিনি বলেন, ‘প্রবেশ টিকেটের কথা বলে লটারির টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে বলে শুনেছি। এ ধরনের লটারির আইনত সুযোগ নেই। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর