স্থানীয় সরকার ও সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনের মতো ৫৭টি জেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
সোমবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমের মাধ্যমে নেয়া এই ভোট ঢাকায় বসে পর্যবেক্ষণও করা হবে।
রোববার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) যুগ্ম সচিব আসাদুজ্জামান আরজু এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করেই গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের ভোট বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।
তিন পার্বত্য জেলা বাদে দেশের ৬১ জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। তবে হাইকোর্টের আদেশে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নোয়াখালী জেলার ভোট স্থগিত করা হয়েছে। ভোলা ও ফেনী জেলায় চেয়ারম্যানসহ সব পদে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছেন। তাই সেখানেও ভোটের প্রয়োজন পড়বে না।
বাকি জেলাগুলোর ৪৬২টি ভোটকেন্দ্রের ৯২৫টি ভোটকক্ষ রয়েছে। স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরাই এ নির্বাচনে ভোট দেন। ৫৭ জেলার ৬০ হাজার ৮৬৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২৭ জন, সংরক্ষিত পদে ১৯ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৬৮ জন এবং তিন পদে সব মিলিয়ে ১১৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।
বাকি জেলাগুলোতে চেয়ারম্যান পদে ৯২ জন, সদস্য পদে ১ হাজার ৪৮৫ জন ও সংরক্ষিত পদে ৬০৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোটার রয়েছে ৬০ হাজার ৮৬৬ জন।
জেলা পরিষদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা প্রশাসক ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। আর প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারের দায়িত্বে রয়েছেন অন্য নির্বাচন কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ ওঠায় তাকে পরিবর্তন করে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এক বিজ্ঞপ্তিতে ইসি জানায়, সিসিটিভি ও ইভিএম মেশিন যথাযথভাবে সচল রাখার স্বার্থে এবং ভোটাররা যাতে সুষ্ঠুভাবে তাদের ভোট প্রয়োগ করতে পারেন, সে জন্য ভোটকেন্দ্রসংশ্লিষ্ট উপজেলা সদরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
দেশে ১৯৮৯ সালে তিন পার্বত্য জেলায় একবারই সরাসরি নির্বাচন হয়েছিল। আর কোনো জেলা পরিষদ নির্বাচন হয়নি। এরপর ১৯৮৮ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সরকারের সময় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে সরকারের নিয়োগ দেয়ার বিধান ছিল। পরে আইনটি কার্যকারিতা হারায়।
আওয়ামী লীগ সরকারে এসে ২০০০ সালে জেলা পরিষদ আইন করে। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের পাঁচ বছর আইনটি অকার্যকর থাকে। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এলে ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর ৬১ জেলায় নিজ দলের নেতাদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় আওয়ামী লীগ। এদের মেয়াদ শেষ হলে ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো সারা দেশের ৬১ জেলায় নির্বাচন দেয়া হয়।
দ্বিতীয় জেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলে আইনি অধিকতর সংশোধনের উদ্যোগ নেয় সরকার।