মুন্সীগঞ্জ সদরে ছাত্রলীগ কর্মী আবির হোসেনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করার ঘটনা ঘটেছে। তিনি এখন হাসপাতালের আইসিইউতে জীবন-মৃত্যুর মাঝামাঝি। অভিযোগ উঠেছে,মীরকাদিম পৌরসভার সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম শাহিন ও তার লোকজন এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
গুরুতর আহত আবির রাজধানীর বাংলাদেশ-জাপান মৈত্রী হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মারধরের ঘটনায় করা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম শাহিনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। শহিদুল মীরকাদিম পৌর আওয়ামী লীগের একাংশের সভাপতি।
শনিবার বিকালে আবিরের বাবা নাছির মিয়া বাদী হয়ে শহিদুলসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে মীরকাদিমের কালিন্দিপাড়া এলাকায় আবিরকে তুলে নিয়ে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে এলোপাতাড়ি কোপানোর ঘটনা ঘটে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মীরকাদিমের পূর্বপাড়া এলাকার বাবুল আহাম্মেদ, মাসুদ ফকির খোকন, টেংগর এলাকার সম্পদ মিয়া, পূর্বপাড়ার সাগর, তিলার্দিচর শরীয়তনগরের ইমতিয়াজ সানি, মো. নাজিম এবং নৈদিঘিরপাথর এলাকার খশরু নোমান।
মামলার এজাহারে বলা হয়, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রিকাবিবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন শেষে আবির হোসেন মীরকাদিমের সাবেক মেয়র শহিদুল ইসলাম শাহিনের বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় পূর্ব শত্রুতার জেরে আবিরের পথরোধ করেন আসামিরা। শহিদুল এক পর্যায়ে আবিরের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে তার পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে তারা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আবিরের মাথা, বুক, কোমরসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করেন।
আবিরকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেন স্থানীয়রা। সেখানকার চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। ঢাকা মেডিক্যাল থেকে তাকে জাপান-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তিনি আইসিইউতে আছেন।
আবিরকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে শহিদুল ইসলাম শাহীন বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। শুনেছি হেরোইনসেবীদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।
‘আমি ১০ বছর মেয়র ছিলাম, কারও সঙ্গে এমন আচরণ করিনি। যাকে মারধর করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে ২-৩ দিন আগে থানায় মামলা হয়েছে। আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার।’
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি মো. তারিকুজ্জামান বলেন, ‘মারামারির ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ছাত্রলীগের মীরকাদিম পৌর ইউনিটের সভাপতি খালেদ মোহাম্মদ রকি বলেন, ‘আবির ছাত্রলীগের কোনো পদে নেই। তবে তিনি মীরকাদিম ছাত্রলীগের কর্মী। ছাত্রলীগের সব প্রোগ্রামে তিনি নিয়মিত অংশ নেন। শুক্রবার রাতে তিনি হামলার শিকার হন। এখন ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।’