ময়মনসিংহে বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে গণপরিবহন।
শনিবার দুপুরের ওই সমাবেশ ঘিরে শুক্রবার রাত থেকে জেলার ভেতর ও জেলা থেকে বাইরে পরিবহন যাওয়া-আসা বন্ধ আছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ।
মোটরযান মালিক বাস মালিক সমিতি জানিয়েছে, নিরাপত্তার শঙ্কায় গণপরিবহন বন্ধ করা হয়েছে।
বিএনপি নেতারা বলছেন, তাদের কর্মসূচিতে জনসমাগম ঠেকাতেই সরকারের নির্দেশে এই সিদ্ধান্ত। তবে পরিবহন আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, এতে তাদের হাত নেই।
জেলা মোটর মালিক সমিতির মহাসচিব মাহবুবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গণপরিবহনেরও নিরাপত্তার প্রয়োজন আছে। কারণ সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘাত না হলে সড়কে থাকা গণপরিবহন ভাঙচুর হতে পারে। এ জন্য শনিবার ময়মনসিংহে বাস, ট্রাক অটোরিকশার চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
নগরীর পাটগুদাম বাসটার্মিনালে দাঁড়িয়ে থাকা সামাদ মিয়া নামের একজন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাসসহ সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ করে সড়কপথে ময়মনসিংহকে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এতে সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।’
আসলাম হোসেন নামের আরেকজন বলেন, ‘আমার শ্বশুর অসুস্থ থাকায় বৃহস্পতিবার তাকে দেখতে শেরপুর থেকে ময়মনসিংহে এসেছিলাম। শুক্রবার সন্ধ্যায় আমার ভাই, মা ও ভাতিজাও ময়মনসিংহে আসতে চেয়েছিল। কিন্তু গণপরিবহন বন্ধ থাকায় তারা আসতে পারেনি।’
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি, জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং পুলিশ ও দুর্বৃত্তদের গুলিতে বিএনপি কর্মীদের মৃত্যু, হামলা ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে শনিবার দুপুর ২টায় ময়মনসিংহে বিভাগীয় সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি।
এই সমাবেশ উপলক্ষে নগরীর সার্কিট হাউস মাঠে গত ৬ অক্টোবর প্রশাসনের অনুমতি চেয়ে না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
শুক্রবার দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সমাবেশ করার অধিকার আমাদের রয়েছে। আর মাত্র এক দিন বাকি থাকলেও প্রশাসন অনুমতি দেয়নি।’
পরে নির্ধারিত স্থানে প্রশাসনের অনুমতি না পেয়ে ময়মনসিংহ পলিটেকনিকাল ইনস্টিটিউট মাঠে গণসমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি।
জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাস-ট্রাক কিছুই ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। এ জন্য শত শত নেতা-কর্মী হেঁটে ময়মনসিংহে এসেছে। আওয়ামী লীগ শহরজুড়ে মহড়া দিয়ে উসকানি দিচ্ছে।’
মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এহতেশামুল আলম বলেন, ‘বিএনপি সমাবেশ করতেই পারে। এটি তাদের অধিকার। কিন্তু নৈরাজ্য হলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। এ জন্য শনিবার মোড়ে মোড়ে থাকবে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।’
ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মো. মাছুম আহাম্মদ ভুঁঞা বলেন, ‘কাউকে লাঠি-বাঁশ নিয়ে আসতে দেওয়া হবে না। নিরাপত্তায় শহরজুড়ে পুলিশ থাকবে। যেকোনো অপ্রতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে থাকবে পুলিশ।’
সর্বশেষ ২০১৮ সালে ময়মনসিংহে বিভাগীয় সমাবেশ করেছিল বিএনপি। তবে সেবার রাতের বেলায় রেলওয়ের কৃষ্ণচূড়া চত্বরের মতো ছোট স্থানে সমাবেশ হয়।