বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইসির ব্যাপারে মন গলেনি বিএনপির

  •    
  • ১৫ অক্টোবর, ২০২২ ১০:১২

বিএনপি মনে করছে, গাইবান্ধার নির্বাচন বন্ধ করে দেয়া আসলে সাজানো নাটক। এটিকে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের ছক হিসেবে দেখছে দলটি। এর নেতারা বলছেন, তারা এ ফাঁদে পা দেবেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবি থেকে তারা নড়ছেন না।

গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের ভোট বন্ধ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি), তবে বিষয়টিকে ‘নাটক’ হিসেবেই দেখছে বিএনপি। ফলে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার অবস্থানেই অনড় দলটি।

বিএনপি মনে করছে, এই নির্বাচন কমিশন আসলে সরকারেরই এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে এবং গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত করা নাটক। এটিকে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের ছক হিসেবে দেখছে দলটি। দলটির নেতারা বলছেন, নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ডের প্রতি নজর রাখা হচ্ছে।

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুর পর গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনে উপনির্বাচন হয়, কিন্তু ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় ভোট পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় ইসি।

ওই উপনির্বাচনে ইভিএমে ভোটারের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর গোপনকক্ষে ভোটারের হয়ে অন্যদের ভোট দিয়ে দেয়ার দৃশ্য সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখে প্রথমে ৫১ কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করে ইসি। এরপর পুরো নির্বাচনই বাতিল করা হয়।

নির্বাচনের দিন সকাল থেকেই সিসিটিভি ক্যামেরায় ভোটগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য কমিশনাররা। এতে গোপনকক্ষে অবৈধ ব্যক্তির অনুপ্রবেশ ও কারচুপি দেখতে পেয়ে একে একে ৫১টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ করেন তারা।

গাইবান্ধায় কী হচ্ছে, সেটি ঢাকায় বসেই দেখেছে নির্বাচন কমিশন। এরপর একের পর এক কেন্দ্রে ভোট স্থগিতের সিদ্ধান্ত আসতে থাকে। ফাইল ছবি

অনেকে এটিকে নির্বাচন কমিশনের নজিরবিহীন সক্রিয়তা হিসেবে দেখছেন। রাজনৈতিক মহলে অনেকে বলতে থাকেন নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে নতুন চিন্তার সময় এসেছে। অনেকে এই নির্বাচন কমিশন রকিবুল বা হুদা কমিশনের মতো নয় বলেও মন্তব্য করেন।

নির্বাচন বন্ধ করায় কমিশনকে ধন্যবাদ জানান সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। ওই উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী এ এইচ এম গোলাম শহীদ রনজু।

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহ্‌মুদ মন্তব্য করেন, নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তে জনগণ হতবাক হয়েছে। এতে নির্বাচন কমিশনের ওপর সরকারের কোনো প্রভাব না থাকার বিষয়টিও প্রমাণ হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

তার ভাষ্য, ভোট করতে আর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দরকার নেই।

বিএনপি নেতারা মনে করছেন, এ দৃষ্টান্ত দিয়ে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রমাণ হয় না। তারা এটিকে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের পাতানো নাটক হিসেবে দেখছেন এবং বলছেন এ ফাঁদে তারা পা দেবেন না।

গত বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘জাতীয় সংসদের গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনে সর্বশক্তি নিয়োগ করেও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অবশেষে নিজেরাই নির্বাচন বন্ধ করে দিয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে কোনোভাবেই যে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, তা এর মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কী হলো না হলো, সে বিষয়ে বিএনপির খুব বেশি আগ্রহ নেই। আমাদের চাওয়া একটাই, যারা পুরো দেশকে বিকলাঙ্গ করে ফেলেছে ও গণতন্ত্র হরণ করেছে, তাদের সরে যেতে হবে। তাদের সরিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনই একমাত্র পথ বলে আমরা মনে করি। আর সে লক্ষ্যেই আমরা আন্দোলন শুরু করেছি।’

গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনে ভোট বন্ধ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে তার দল বিএনপি কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা তো বোঝাই যাচ্ছে। আসলে এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কোনো দিন হবে না। এটা নাটকও হতে পারে। এই নির্বাচন কমিশন তো সরকারই তৈরি করছে। এই ব্যর্থ নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে আমরা কথা বলতে চাই না। আসলে গাইবান্ধার নির্বাচন একটি অন্য জিনিস।’

‘অন্য জিনিস’ কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা নাটকও হতে পারে। নির্বাচন কমিশন তো প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কারও কথা শুনবে না।’

তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে গাইবান্ধায় ভোটকেন্দ্রগুলোয় নজরদারি করা সম্ভব হয়েছে মর্মে প্রধান নির্বাচন কমিশনার যে দাবি করেছেন, সে বিষয়ে বিএনপির বর্ষীয়ান এ রাজনীতিক বলেন, ‘উনি উনার কথা বলেছেন, উনি বলতে থাকুন। আমরাও শেষ পর্যন্ত দেখব। আমরা তো পর্যবেক্ষণই করছি, নির্বাচন কমিশনের আর কত খেলা দেখব? খেলা তো দেখেই আসছি এত বছর। নতুন করে আর কোনো খেলা দেখতে চাচ্ছি না।’

বিএনপির নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে সরকারের তথ্যমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে সেলিমা রহমান বলেন, ‘আমাদের মহাসচিব পরিষ্কার বলেছেন আমরা কী বলতে চাচ্ছি। সরকার ইচ্ছা করলে সংসদ ডেকে অনেক কিছুই করতে পারে। আমরা আর কতবার বলব, আমরা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই?’

খুলনা প্রেস ক্লাবে শুক্রবার বিকেলে দলের সমন্বয় সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ও গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, ‘একটি আসনে নির্বাচন কমিশন ভোট সফল করতে না পারলে ৩০০ আসনে কী করবে?’

গয়েশ্বর উল্টো মনে করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির যৌক্তিকতার প্রমাণই মিলেছে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে।

তিনি বলেন, ‘গাইবান্ধার নির্বাচন প্রমাণ করেছে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এ কারণে সরকারের বিদায় ঘটাতে হবে। যারা গাইবান্ধার একটি আসনে ভোটারদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি, তারা ৩০০ আসনে পারবে না।

‘এমনকি আমাকে নির্বাচন কমিশনের প্রধান বানানো হলেও আমি নিজের ভোটটি দিতে পারব কি না সন্দেহ।’

এ বিভাগের আরো খবর