গোপালগঞ্জে ভুয়া চিকিৎসকের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। এসব চিকিৎসক জেলাজুড়ে বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
নামের সঙ্গে নামি-দামি ডিগ্রি লাগিয়ে এসব চিকিৎসক সাধারণ রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন বলে অভিযোগ।
গত দুই মাসে এমন অন্তত তিন ভুয়া চিকিৎসককে আটক করে সাজা দিয়ে জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সবশেষ শুক্রবার দুপুরে জেলা শহরের কলেজ মসজিদ রোডে সিটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে গোলাম মাসুদ মৃধা নামে একজনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে এ আদালদের বিচারক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মামুন খান ওই ভুয়া চিকিৎসককে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে জেলা কারাগারে পাঠান।
দণ্ড পাওয়া গোলাম মাসুদ মৃধার বিরুদ্ধে অভিযোগ- তিনি ইন্টিগ্রেটেড, চর্ম, যৌন, কুষ্ঠ, অ্যাজমা ও এলার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ পরিচয় দিয়ে সিটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রতি শুক্রবার রোগী দেখতেন। আসতেন খুলনা থেকে এবং প্রত্যেক রোগীর কাছ থেকে ৬০০ টাকা ভিজিট নিতেন। পিএইচডিসহ অসংখ্য ডিগ্রি তিনি নামের সঙ্গে জুড়ে রেখেছেন। যদিও এসবের কোনোটিই তার নেই বলে প্রমাণ পেয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এ ছাড়া রোগীদের অযথা স্টেট ও ওষুধ লিখে দেয়ারও অভিযোগ আছে গোলাম মাসুদের বিরুদ্ধে।
এর আগে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর শহরের চৌরঙ্গী এলাকায় অবস্থিত দেশ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভ্রাম্যামাণ আদালত পরিচালনা করে মো. সামসুদ্দিন নামে আরেক ভুয়া চিকিৎসককে আটক করে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এ ছাড়া, গত ৮ সেপ্টেম্বর শহরের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল রোডের সেতু ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও মাহমুদুল আলম বাবুল নামে এক ভুয়া চিকিৎসককে আটক করে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
তিনটি অভিযানই পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মামুন খান।
ওই বিচারক জানান, সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা প্র্যাকটিস করার মতো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০ এর পরিপন্থি হওয়ায় ওই তিন ব্যক্তিকে সাজা প্রদান করা হয়।
বিচারক বলেন, ‘তারা নামের সঙ্গে বিভিন্ন ডিগ্রি লাগিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন।’
আগামীতে ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।