বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মিরপুরে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পেছনে কী?

  •    
  • ১৪ অক্টোবর, ২০২২ ১৮:১৯

যে ফার্মাসি লক্ষ করে বৃহস্পতিবার রাতে দুটি ককটেল ছোড়া হয় সেটির নাম ‘স্বপ্নডাঙ্গা মেডি পয়েন্ট’। এর মালিক মো. সেলিম উদ্দিন ৯৯৯-এ কল করে পুলিশের সাহায্য চান। পরে ঘটনাস্থলে যায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট।

পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা বৃহস্পতিবার রাত ৩টায় রাজধানীর মিরপুর ৬ নম্বরের একটি রাস্তায় নিজেরাই বোমা রেখে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন- এমন একটি দাবি ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাজ্য থেকে পরিচালিত একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে শুক্রবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে পাঁচটি ছবি যুক্ত করে দাবি করা হয়, ‘দেশে জঙ্গি তৎপরতা প্রমাণের জন্য রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে অপতৎপরতা শুরু হয়েছে।’

এই প্রতিবেদনটি শেয়ারের পাশাপাশি ছবি ও লেখা কপি করে আলাদা পোস্টও দিয়েছেন অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী।

তবে স্থানীয় বাসিন্দা, পুলিশ ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের দাবি, বৃহস্পতিবার রাতে ওই এলাকায় জঙ্গিবিরোধী কোনো অভিযানই পরিচালিত হয়নি। সেখানে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে অবিস্ফোরিত ককটেল নিষ্ক্রিয় করা হয়।

জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে ৯৯৯ এ ফোন করে স্থানীয়রাই পুলিশের সাহায্য চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় থানা। পুলিশকে সহায়তার জন্য পরে ঘটনাস্থলে যায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি বলেও নিশ্চিত করেছে পুলিশ।

এলাকাবাসী জানান, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের দিকে পল্লবী ৬ নম্বর সেক্টরের বড় মসজিদ গলিতে একটি ফার্মেসি লক্ষ করে স্কচটেপ মোড়ানো দুটি বস্তু ছোড়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা।

প্রথমটি ফার্মেসির ভেতরে পড়লেও বিস্ফোরিত হয়নি, তবে আরেকটি ফার্মাসির বাইরে বিস্ফোরিত হয়। এরপর ওই ফার্মেসির মালিক ৯৯৯-এ কল করে পুলিশের সাহায্য চান।

পল্লবী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবিস্ফোরিত বস্তুটি যাচাই করে। এরপর তারা ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেয়।

এই ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পায় ওই বস্তুটি বোমা নয়, একটি ককটেল। পরে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সেটি নিষ্ক্রিয় করা হয়।

যে ফার্মাসি লক্ষ করে ককটেল দুটি ছোড়া হয় সেটির নাম ‘স্বপ্নডাঙ্গা মেডি পয়েন্ট’। এর মালিক মো. সেলিম উদ্দিনই বৃহস্পতিবার রাতে ৯৯৯-এ কল করে পুলিশের সাহায্য চান।

সেলিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি তখন ফার্মেসিতে ছিলাম না। কর্মচারীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে শুনি, কে বা কারা স্কচটেপ মোড়ানো একটি বস্তু ছুড়ে মেরেছে।

‘ভেতরে থাকা লোকজন কিছু সময় সেটি নাড়াচাড়া করে বাইরে রেখে দেয়। এর কিছুক্ষণ পর আরেকটি বস্তু ছোড়া হয় দোকানে সামনে। সেটি ফেটে বিকট শব্দ হয়। আমি ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশকে জানাই। পুলিশ এসে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়।’

দোকানের কর্মচারীসহ আশপাশের অনেকের সামনেই ককটেলটি নিষ্ক্রিয় করা হয় বলে জানান সেলিম।

পল্লবী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আহাদ আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা রাত ১২টার দিকে ৯৯৯-এ কল পেয়ে জানতে পারি ৬ নম্বর সড়কে বড় মসজিদের পাশে একটি ফার্মেসির সামনে বোমার মতো একটা বস্তু পড়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা ঘটনাস্থলে যাই, ঊর্ধ্বতন স্যারদের জানাই।

‘স্যাররা বিষয়টি কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে জানায়। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনাস্থলে এসে যাচাই-বাছাই করে জানায় এটি ককটেল। এরপর বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা ককটেলটি ডিসপোজ করেন।’

বিষয়টি নিয়ে একটি চক্র মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘এখানে বোমা রেখে বিস্ফোরণ ঘটানোর কিছু নেই। সব কিছুই স্থানীয়দের উপস্থিতিতে হয়েছে। আর সবকিছু ডকুমেন্টেড, কিছু মানুষ এটাকে ভিন্নভাবে ছড়াচ্ছে। তারা অসৎ উদ্দেশ্যে এটি করছে।’

একই তথ্য দিয়েছেন কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ-পুলিশ কমিশনার (স্পেশাল এ্যাকশন গ্রুপ বিভাগ) মিশুক চাকমা।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওটা আমাদের কোনো অভিযান ছিল না। লোকাল পুলিশ স্টেশন থেকে আমাদের কাছে একটা বম্ব কল এসেছিল। যেটার ক্ষেত্রে আমরা রেগুলার রেসপন্স করে থাকি। ওখানে একটি ককটেল পড়েছিল। আমাদের একটি টিম গিয়ে সেটা ডিফিউজ করেছে।’

‘সাজানো ঘটনা’র অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘ওখানে যেহেতু লোকজনের চলাচল আছে, তাই সেটা সরানো বা ডিফিউজ করা দরকার ছিল। এ ঘটনাটি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অন্যান্য মাধ্যমে কিছু মানুষ গুজব ছড়াচ্ছে। এগুলো চক্রান্ত ছাড়া কিছু নয়।‘

মিশুক চাকমা বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পোশাকে পুলিশ ছিল, ওপেন প্লেস। এমন জায়গায় তারা যেভাবে বলছে (সাজানো ঘটনা), সেটা তো বোকারাও করবে না।’

ককটেল ছোড়ায় কারা জড়িত তা এখনও জানতে পারেনি পুলিশ।

পল্লবী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আহাদ আলী নিউজবাংলাকে শুক্রবার বিকেলে বলেন, ‘ফার্মেসির সামনে কারা ককটেল ছুড়েছে তা নিয়ে তদন্ত চলছে। সিসিটিভি ফুটেজসহ প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে আমরা জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।’

এ বিভাগের আরো খবর