ফেনীর পরশুরামে ত্যাজ্যপুত্র করবে বলায় বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তার ছেলে। নিহতের নাম আবদুল মমিন। বয়স ৬৫ বছর।
নিহত মমিনের বাড়ি পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের পূর্ব আলকা গ্রামের তাজু কন্ট্রাকটরের পুরাতন বাড়ি।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে।
সেখান থেক উদ্ধার করে ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১২টার দিকে মারা যান তিনি।
এ ঘটনায় ওই বৃদ্ধের মেয়ে পানু আক্তার রাতেই পরশুরাম মডেল থানায় হত্যা মামলা করেছেন বলে জানায় পুলিশ। পরে পুলিশ বৃদ্ধের ছেলে মো. ফারুক রাজিব ও তার শ্যালক আবদুল মজিব সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, পরশুরামের চিথলিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব অলকা গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মমিনের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। ছেলে-মেয়েদের বিয়ে হয়েছে। ছেলে ফারুক ওরফে রাজিব পেশায় দলিল লেখক। ছেলের সঙ্গে বাবার ভালো সম্পর্ক ছিল না। আবদুল মমিন ও তার স্ত্রী গ্রামের বাড়িতে থাকতেন। ছেলে ফারুক স্ত্রী সন্তান নিয়ে পরশুরাম উপজেলা সদরে ভাড়া বাসা নিয়ে থাকতেন। দুই মেয়ে তাদের স্বামীর বাড়িতে থাকেন।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ছেলে ফারুক রাজিব ও তার শ্যালক আবদুল মজিব সুমনকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যান।
স্থানীয়রা জানান, বৃদ্ধ আবদুল মমিন তখন ঘুমানের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় ঘরে ঢুকেই ছেলে তার বাবার কাছে জানতে চায়-তার মাকে নির্যাতন কেন করা হয়। এ নিয়ে বাপ-ছেলের কথা কাটাকাটি ও তর্ক বিতর্কের একপর্যায়ে বাবা ক্ষুব্ধ হয় তাকে (ছেলে) ত্যাজ্যপুত্র করবে বলে জানায়। এরপর ছেলে রান্না ঘর থেকে লাকড়ি নিয়ে বাবাকে পিটিয়ে জখম করে। তার কিছু পর বাড়িতে ডাকাত পড়েছে বলে তার মা চিৎকার করতে থাকে। এ সময় ফারুক ও তার শ্যালক সুমন পালিয়ে যায়। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা গিয়ে মমিনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে দ্রুত ফেনী জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই মারা যান মমিন।
পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বাবাকে হত্যার ঘটনায় তার মেয়ে বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। রাতেই ছেলে ও তার শ্যালককে গ্রেপ্তার করা হয়ে। লাশ মর্গে রয়েছে। গ্রেপ্তার দুইজনকে শুক্রবার ফেনীর আদালতে পাঠানো হয়।’