বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তত্ত্বাবধায়ক: বাকি বিরোধী দলগুলো কী ভাবছে

  •    
  • ১৪ অক্টোবর, ২০২২ ১১:২৫

জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি বলছে, তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারে বিশ্বাস করে না। আ স ম রব চান দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট থেকে নির্বাচনকালীন সরকার পরিচালনা। সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স মনে করেন, সরকার পদত্যাগ করলে আন্দোলনকারী শক্তিদের সঙ্গে কথা বলে অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখা সুনির্দ্দিষ্ট করা হবে।

বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির সঙ্গে পুরোপুরি একমত নয় তাদের জোটের বাইরে থাকা উল্লেখযোগ্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। আগামী নির্বাচন কোন পদ্ধতির সরকারের অধীনে হবে, এ নিয়ে প্রতিটি দলের আলাদা মতামত রয়েছে। আগামী নির্বাচনের আগে উপযুক্ত সময়ে দলগুলো নির্দলীয় সরকারের বিষয়ে যার যার রূপরেখা তুলে ধরবে। তবে, কেউ কেউ উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্যেও এর সমাধান দেখছেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন মতামত পাওয়া যায়।

দেশের অন্যতম বড় দল বিএনপি আগামী নির্বাচন নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। বিপরীতে শাসক দল আওয়ামী লীগ বলছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আদালতের রায়ে বাতিল হয়ে গেছে। আগামী নির্বাচন সংবিধান সম্মতভাবে যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে দলটির নেতারা বলছেন, পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এভাবেই নির্বাচন হয়।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি বলছে, তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারে বিশ্বাস করে না। দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার দল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় বিশ্বাসী নয়, তাই আমরা এ সরকার ব্যবস্থা যেমন সমর্থন করি না, তেমনি এ সরকার আবার ফিরে আসুক, সেটাও চাই না। পাশাপাশি বর্তমান সরকারের ওপরও আমাদের আস্থা নেই। বর্তমান কর্তৃত্ববাদি সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে আমি মনে করি না।’

বনানীর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, সমাজে এখনও বৈষম্য ও বঞ্চনা বিদ্যমান। বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেলেও মুক্তি পায়নি । ফাইল ছবি

তিনি বলেন, ‘আমরা একটি বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবছি। নির্বাচনের এখনও অনেক দেরি। দলের বিভিন্ন পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা করে আমরা নির্বাচনকালীন একটি বিকল্প সরকারের রূপরেখা যথাসময়ে জাতির সামনে তুলে ধরব।’

দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বাম ধারার দলগুলোর মধ্যে নেতৃস্থানীয় দল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের কাছে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বড় দুই দল জনগণের রাজনীতি করে না। যে কোনোভাবে ক্ষমতায় যাওয়াটাই তাদের কাছে বিষয়।

‘এখন নির্বাচন নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যায় যে, এখানে আন্ডারহ্যান্ড নির্বাচন এবং ক্ষমতার ভাগাভাগি অনেকে করতে চায়। সুতরাং কারা কী বলল না বলল, আমার দল বা বামপন্থি জোটের কাছে সেটা আলোচ্য বিষয় নয়। আমাদের মূল কথা হলো বাংলাদেশে নির্বাচন হাইজ্যাক হয়ে গেছে, দ্রুত একটি নির্বাচনি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যার জন্য দ্রুত এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। কমিউনিস্ট পার্টি সে দাবিতেই লড়াই করছে।’

যুবদলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এ দেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না। ফাইল ছবি

সেই সরকারের ধরণ বা রূপরেখা কেমন হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকার পদত্যাগ করলে আন্দোলনকারী শক্তিদের সঙ্গে কথা বলে সুনির্দ্দিষ্ট করা হবে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হবে। তবে, এই সরকারের কাজ কী হবে, তা সুনির্দিষ্ট করে দিতে হবে এবং তা সংবিধানের অংশ করতে হবে। আমরা এমনভাবে সে সরকারের কাজ সীমাবদ্ধ করে দিতে চাই, যাতে এক-এগারোর মতো ঘটনা না ঘটতে পারে। তারা শুধু একটি সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করবে এবং সে সময় প্রশাসন তাদের অধীনে থাকবে।’

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (রব) জেএসডি-এর সভাপতি আ স ম আব্দুর রব আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনার জন্য দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠন করার দাবি জানান। এবং সেই পার্লামেন্ট থেকেই নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আ স ম রব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচনি ব্যবস্থা ধ্বংসপ্রাপ্ত। জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের ন্যূনতম সুযোগ নেই। নির্বাচন এখন কেবলমাত্র আনুষ্ঠানিকতা। দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না, দেশের সমস্ত বিরোধী দল এবং জনগণ তা বিশ্বাস করে। সুতরাং ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, বিদ্যমান সংসদ ভেঙে দিতে হবে এবং অন্তবর্তীকালীন নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।’

জেএসডি সভাপতি বলেন, ‘ইতিপূর্বে আমরা জাতীয় সরকারের প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম। পরবর্তীতে নির্দলীয় সরকারের দাবিতে গণতন্ত্র মঞ্চ আত্মপ্রকাশ করেছে, তবে এটা একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত, কোনো স্থায়ী সমাধান নয়।’

এ বিষয়ে নিউজবাংলার কাছে মতামত তুলে ধরেন গণফোরামের (ড. কামাল) একাংশের সাধারণ সম্পাদক ডা. মিজানুর রহমানও। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র এবং সংবিধানের স্বার্থে নির্বাচন হতে হবে। আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল হয়ে গেছে। আবার অনেক দল বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে আগ্রহী নয়। তাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ উল্লেখযোগ্য সবগুলো রাজনৈতিক দলের আলোচনা সাপেক্ষে একটি সমাধানে আসতে হবে। মতৈক্যের ভিত্তিতে একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করে তার অধীনে নির্বাচন হতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর