বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইসি নিয়ে অস্বস্তি আওয়ামী লীগেও

  •    
  • ১৪ অক্টোবর, ২০২২ ০৮:৩৫

গাইবান্ধা-৫ এর উপনির্বাচন স্থগিত করার পর আওয়ামী লীগের নেতারা তাৎক্ষণিক বৈঠকে বসেন। তারা কমিশনের এ সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রশ্ন তোলেন, নির্বাচন কমিশন সিসি ক্যামেরায় কয়েকটি কেন্দ্রে অনিয়ম দেখেই যদি ভোট বন্ধ করবে, তাহলে তারা অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিল?

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে দেখা দিয়েছে অস্বস্তি। বিশেষ করে বড় ধরনের অভিযোগ ছাড়াই গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত করার সিদ্ধান্তে দলের নেতারা কমিশনের ওপরে অসন্তুষ্ট।

নির্বাচন কমিশনের এ পদক্ষেপ নিয়ে দলের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বুধবার এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগ নেতারা। দলীয় ও অন্যান্য সূত্রে পাওয়া ওই নির্বাচনের খুঁটিনাটিসহ সব খবর দলের সভাপতিকে বৈঠক থেকেই অবহিত করেন নেতারা।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, গাইবান্ধা-৫ এর উপনির্বাচন স্থগিত করার পর দলটির নেতারা তাৎক্ষণিক বৈঠকে বসেন। দলের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নেতা যারা উপস্থিত ছিলেন, তারা এতে যোগ দেন। এ বৈঠকে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আনোয়ার হোসেন, মারুফা আক্তার পপি ও শাহাবুদ্দিন ফরাজী এ নিয়ে আলোচনা করেন।

‘গাইবান্ধা-৫ আসনের নির্বাচনে কোনো কেন্দ্রেই নৈরাজ্য হয়নি। এই নির্বাচনে কোনো কেন্দ্রে গোলযোগ হয়নি, এমনকি ন্যূনতম মারামারির ঘটনাও ঘটেনি। তারপরেও কমিশন ভবনে বসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এতগুলো কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিতের সিদ্ধান্ত ইসি কীভাবে নিল, তা বোধগম্য নয়।’

নেতারা কমিশনের এ সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আলোচনায় নেতারা প্রশ্ন তোলেন, কোথাও বড় ধরনের সংঘর্ষ বা নাশকতার ঘটনা ঘটেনি। শক্তি প্রয়োগের খবরও আসেনি কোনো গণমাধ্যমে। নির্বাচন কমিশন সিসি ক্যামেরায় কয়েকটি কেন্দ্রে অনিয়ম দেখেই যদি ভোট বন্ধ করবে, তাহলে তারা অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিলো? নেতারা বলেন, প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতা কমিশন পেয়েছিল। ইসি ভোট বন্ধের জন্য যে যুক্তি তুলে ধরেছে, তা একটি সংসদীয় আসনের নির্বাচন বন্ধের জন্য যথাযথ নয়।

ধানমন্ডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

ওই বৈঠক থেকে বেরিয়ে গতকাল গণমাধ্যমে তাৎক্ষণিক বক্তব্য দেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। তার কাছে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, গাইবান্ধা-৫ এর নির্বাচন নিয়ে তাদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। এটি কোনো নির্ধারিত বৈঠক ছিল না। যা বলার আগের দিনের বক্তব্যেই তিনি তা বলেছেন।

আগের দিন মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘গাইবান্ধা-৫ আসনের নির্বাচনে কোনো কেন্দ্রেই নৈরাজ্য হয়নি। এই নির্বাচনে কোনো কেন্দ্রে গোলযোগ হয়নি, এমনকি ন্যূনতম মারামারির ঘটনাও ঘটেনি। তারপরেও কমিশন ভবনে বসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এতগুলো কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিতের সিদ্ধান্ত ইসি কীভাবে নিল, তা বোধগম্য নয়।’

হানিফ বলেন, নির্বাচন কমিশনের ওই সিদ্ধান্তে অবাক হয়েছেন তারা। তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে কিছু কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করে আবার সব কেন্দ্রে স্থগিত, এরপর নির্বাচন কেন স্থগিত করা হলো? আমরা খুব অবাক হলাম। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেটা পারিনি।’

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। ফাইল ছবি

বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং অন্যতম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্য মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ওবায়দুল ইসির সিদ্ধান্তের আইনি ভিত্তি নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। তিনি ঢাকায় বসে গোপন বুথের ছবি দেখে কেন্দ্র বন্ধ করা কতটুকু যৌক্তিক ও আইনসম্মত তা ভেবে দেখতে কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা আমাদেরকে বলেছেন, ভোট সুষ্ঠু হয়েছে, ডিসি বলেছেন, ভোটে কোনো অনিয়ম হয়নি। অথচ নির্বাচন কমিশন ভোট বন্ধ করে দিল। এ কারণে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়।’

গাইবান্ধা-৫ আসনের ভোট নিয়ে নির্বাচন কমিশন হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি বলে মন্তব্য করেছেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ছবি: নিউজবাংলা

তবে নির্বাচন স্থগিত করার সিদ্ধান্তের মধ্যে ইতিবাচক কিছু খুঁজে পেয়েছেন ড. হাছান মাহমুদ। দলের অপর দুই নেতার সঙ্গে একমত পোষণ করলেও তিনি বলেন, ‘ইসির (নির্বাচন কমিশন) সিদ্ধান্তে এটা প্রমাণ হয়েছে এতে সরকারের ভূমিকা নাই। তাদের সিদ্ধান্তই সবার ওপরে। এর মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে যে, বিএনপি যে তত্ত্বাবধায়কের কথা বলে সেটার প্রয়োজন নেই।’

গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে অনিয়ম দেখে ভোট বন্ধ করে দেয়ার ঘটনায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের পদত্যাগের দাবিতে ফুলছড়ির বেশ কিছু স্থানে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করেন নৌকা মার্কার প্রার্থী মাহমুদু হাসান রিপনের পক্ষের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। ছবি: নিউজবাংলা

বৃহস্পতিবারের বৈঠকে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দায়িত্বশীল নেতা নিউজবাংলাকে জানান, তারা নির্বাচন বন্ধের পেছনে যুক্তিগুলো বুঝতে চেয়েছেন। সব ধরনের তথ্য সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করেছেন, যা থেকে তাদের মনে হয়েছে, নির্বাচন স্থগিত করার আগে আরও যেসব সতর্কতা এবং অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজন ছিল, তা নেয়া হয়নি।

ওই নেতা আরও জানান, বৈঠক থেকে দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোনে সব আপডেট জানানো হয়। তবে, তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

এ বিভাগের আরো খবর