গাজীপুরের শ্রীপুরে লিচু গাছে অজ্ঞাত যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের দুই সপ্তাহের মধ্যে তার মৃত্যু রহস্য উদ্ঘানের কথা জানিয়েছে র্যাব। বাহিনীটি জানায়, বালু বিক্রির টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ওই যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা হলেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বেড়াইদেরচালা গ্রামের আবুল কাশেম গাজী, একই গ্রামের ফখরুল ইসলাম মাস্টার, ওই এলাকার ভাড়াটে ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার চাকুয়া গ্রামের মো. ফালান।
বৃহস্পতিবার র্যাব-১ পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার এ এস এম মাঈদুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, নিহত যুবকের নাম এনামুল হক। তিনি ময়মনসিংহ জেলার শম্ভুগঞ্জ চর লক্ষ্মীপুর ইসলাম উদ্দিনের ছেলে, পেশায় ছিলেন বালু ব্যবসায়ী।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর শ্রীপুরের টেপিরবাড়ি গ্রামের ইসমাইল মৃধার লিচু বাগান থেকে তার ঝুলন্ত যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। পরদিন পুলিশ শ্রীপুর থানায় অজ্ঞাতদের নামে মামলা করা হয়।
পরে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় সেই যুবকের পরিচয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ ও র্যাব কাজ শুরু করে।
র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার এ এস এম মাঈদুল ইসলাম জানান, বুধবার ময়মনসিংহের গৌরীপুর থেকে আবুল কাশেম গাজী, ময়মনসিংহের পাগলা থানার দত্তেরবাজার ঘাট পাগলীরচর এলাকার বালুর ট্রলার থেকে ফালান এবং শ্রীপুরের বেড়াইদেরচালা গ্রামের দুখলা এলাকা থেকে ফখরুল ইসলাম মাস্টারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আবুল কাশেম গাজী ও ফালান জানান, গত ২৯ সেপ্টেম্বর সকালে বালু বিক্রির টাকা আনতে ফখরুল ইসলামের কাছে যান এনামুল হক। এ সময় তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। তখন এনামুলকে মারধর করা হয়।
এক পর্যায়ে এনামুল পালিয়ে স্থানীয় খোরশেদ আলমের দোকানের সামনে আসলে আবুল কাশেম গাজী ও ফালান তাকে আটকান। তারা এনামুলের কাছে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে আবার ফখরুল ইসলাম মাস্টারের কাছে নিয়ে যান।
সেখানেও নিয়ে এনামুলকে ফের মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে এনামুল অচেতন হয়ে পড়লে অভিযুক্তরা এনামুলের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত হন।
পরে রাতে এনামুলকে চিকিৎসা করানোর কথা বলে পিকআপে তুলে নিয়ে টেপিরবাড়ি গ্রামের ইসমাইল মৃধার লিচু বাগানের লিচু গাছে গলায় কাপড় বেঁধে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়।
র্যাব কমান্ডার জানান, আসামি আবুল কাশেম গাজীর বাড়ি থেকে এনামুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে।