‘জাতীয় সংসদের গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচনে সর্বশক্তি নিয়োগ করেও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অবশেষে নিজেরাই নির্বাচন বন্ধ করে দিয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে কোনোভাবেই যে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় তা এর মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
ঠাকুরগাঁওয়ে দলীয় কার্যালয়ে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগদানের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কী হলো না হলো সে বিষয়ে বিএনপির খুব বেশি আগ্রহ নেই। আমাদের চাওয়া একটাই- যারা পুরো দেশকে বিকলাঙ্গ করে ফেলেছে ও গণতন্ত্র হরণ করেছে তাদেরকে সরে যেতে হবে। তাদেরকে সরিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনই একমাত্র পথ বলে আমরা মনে করি। আর সে লক্ষ্যেই আমরা আন্দোলন শুরু করেছি।’
চট্টগ্রামে বুধবার অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশ থেকে সরকার পতনের তৃতীয় পর্যায়ের আন্দোলন শুরু হয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বন্দর নগরীর পলোগ্রাউন্ডের ওই সমাবেশে লাখো মানুষের সমাগম হয়েছে। এ আন্দোলন এখন দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে এবং সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে।’
ঢাকার সমাবেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া উপস্থিত থাকবেন- এমন তথ্যকে অযথা বক্তব্য উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘নেতৃস্থানীয় কোনো ব্যক্তি বা পার্টি স্ট্যান্ড থেকে এ ধরনের কথা বলা হয়নি। এটি সম্পূর্ণভাবে ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনাদের ওপর একটা বিরাট খড়্গ নেমে এসেছে। আপনারা এটা নিয়ে কেউ কথা বলেন না। একটা নতুন সার্কুলার দিয়েছে যে, ২৯টি বিভাগ ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের ১৫ ধারায় নিয়ে আসা হয়েছে।
‘এই সার্কুলারের অর্থ হলো, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগগুলো সম্পর্কে আপনারা ইচ্ছা করলেই কোনো প্রশ্ন করতে পারবেন না। প্রতিষ্ঠানগুলোর যে ওয়েব পেজ আছে বা এর ভেতরে যে খবর আছে সাংবাদিকরা সেখানে যেতে পারবেন না। এর মধ্য দিয়ে গণমাধ্যম ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। এটা নিয়ে আপনারা কেউ কিছু বলছেন না। জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন একটা স্টেটমেন্ট দিয়েছে মাত্র।’
সামনে দুর্ভিক্ষ আসছে- এমন বক্তব্য বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এ বিষয়ে জানতে আপনারা বরং প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করুন। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। পানি কম খান, ভাত কম খান, বিদ্যুৎ কম জ্বালান- তাহলে ওনার তো প্রধানমন্ত্রী থাকার কোনো প্রয়োজন নেই।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, মহিলা দলের নেতৃবৃন্দসহ দলের অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।