বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে চাষাবাদ বৃদ্ধি, সঞ্চয়ের তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

  •    
  • ১৩ অক্টোবর, ২০২২ ১১:৫৯

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কাজেই এখন থেকে আমাদের অত্যন্ত সচেতন থাকতে হবে। যেহেতু আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে ২০২৩-এ সারা বিশ্বে হবে দুর্ভিক্ষের সময়, কিন্তু বাংলাদেশ যেন এই দুর্ভিক্ষ কবলিত না হয়, তাই আমাদের নিজেদের ভূমিতে নিজেদের খাদ্য উৎপাদন করে নিজেদের সঞ্চয় করে এবং কৃচ্ছ্রতাসাধন করে আমাদের চলতে হবে। আমি আশা করি সবাই সেভাবে চলবেন। আমাদের যে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা, সেটা অব্যাহত থাকবে।’

২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে দুর্ভিক্ষের যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে, তা থেকে বাংলাদেশকে রক্ষায় চাষাবাদ বাড়ানোর পাশাপাশি সঞ্চয়ী হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকার সাভার সেনানিবাসের সিএমপিসি অ্যান্ড এস প্যারেড গ্রাউন্ডে বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৭১ মেকানাইজড ব্রিগেড ও মেকানাইজড ইউনিটগুলোর পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তাগিদ দেন।

গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান যার যেখানে জমি আছে, সেটা চাষ করতে হবে; ফসল উৎপাদন করতে হবে। ফলমূল তরিতরকারি করতে হবে; মাছ-মুরগি যা হোক, করতে হবে।

‘এই কারণে যে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও স্যাংশনের (নিষেধাজ্ঞা) কারণে উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে এবং সেখানে খাদ্যমন্দা দেখা দিচ্ছে। সেখানে বাংলাদেশেও একই অবস্থা। তারই আঘাত বাংলাদেশে এসে পড়েছে। তারপরেও আমরা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।’

বক্তব্যে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে এক কোটি পরিবারকে স্বল্পমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দেয়া হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘কাজেই এখন থেকে আমাদের অত্যন্ত সচেতন থাকতে হবে। যেহেতু আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে ২০২৩-এ সারা বিশ্বে হবে দুর্ভিক্ষের সময়, কিন্তু বাংলাদেশ যেন এই দুর্ভিক্ষ কবলিত না হয়, তাই আমাদের নিজেদের ভূমিতে নিজেদের খাদ্য উৎপাদন করে নিজেদের সঞ্চয় করে এবং কৃচ্ছ্রতাসাধন করে আমাদের চলতে হবে। আমি আশা করি সবাই সেভাবে চলবেন। আমাদের যে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা, সেটা অব্যাহত থাকবে।’

বাংলাদেশ দুর্যোগপ্রবণ দেশ হলেও তা মোকাবিলায় সিদ্ধহস্ত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি চাই বাংলাদেশ এগিয়ে যাক। বাবা-মা-ভাই সব হারিয়েছি। স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে এ দেশে ফিরে এসেছি শুধু বাংলাদেশের মানুষের দিকে তাকিয়ে; শুধু তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে।

‘মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে শোকরিয়া আদায় করি, দেশের জনগণের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই এ জন্য যে, বারবার আমাকে নির্বাচিত করে জনগণের সেবা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। তাই আজকে আর্থ-সামাজিকভাবে উন্নয়নের পথে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।’

‘বাংলাদেশকে যেন হেয় করতে না পারে’

সেনাবাহিনীসহ সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

সেনাবাহিনীর প্রত্যেক সদস্যকে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতার আদর্শে উজ্জীবিত হওয়ার আহ্বান রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নেতৃত্বের প্রতি অবিচল আস্থা ও পরিপূর্ণ অনুগত থেকে কঠোর অনুশীলন, পেশাগত দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সময়নিষ্ঠার সঙ্গে দেশের সেবায় সবসময় নিজেকে নিয়োজিত রাখবেন।

‘এই দেশ আমাদের; এই মাতৃভূমি আমাদের। কাজেই এই মাতৃভূমিকে আমরা এমনভাবে গড়ে তুলব বিশ্বে কেউ যেন বাংলাদেশকে হেয় প্রতিপন্ন করতে না পারে। বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে সম্মানের সঙ্গে বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা চলব।’

তিনি বলেন, ‘…একটা কথা। আমরা কারও সঙ্গে যু্দ্ধ করব না। আমরা যু্দ্ধ করতে চাই না। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি জাতির পিতা দিয়ে গেছেন—আমরা সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়; এটাই আমরা বিশ্বাস করি।’

শান্তিরক্ষা মিশনসহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি চাই আমাদের সেনাবাহিনী বা সশস্ত্রবাহিনী কখনও কোনো দিক থেকে পেছনে থাকবে না। আধুনিক যত রকম যুদ্ধ সরঞ্জামাদি আছে তার সঙ্গে পরিচিতি যাতে হয়, সেগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সমানভাবে তারা যেন চলতে পারে, সেইভাবে আমাদের সশস্ত্রবাহিনীকে আমরা গড়ে তুলতে চাই।’

আধুনিক বিমান, বিমান বিধ্বংসী মিসাইল, ট্যাংকসহ নানা সরঞ্জাম সেনাবাহিনীতে যুক্ত করা হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আবহমান কাল থেকে যুদ্ধের ময়দানে জাতীয় পতাকা একটা মর্যাদার প্রতীক। আর পতাকা বহন করার রীতি প্রচলিত আছে। তা ছাড়া প্রত্যেক রেজিমেন্টে যার যার নিজস্ব পতাকা রয়েছে। যেকোনো পতাকা প্রাপ্তি একটা বিরাট সম্মানের ব্যাপার। কাজেই আমি মনে করি যে, এই পতাকার মর্যাদা সবসময় সমুন্নত রাখতে হবে। পতাকার মর্যাদা রক্ষা করা, সেই সঙ্গে সঙ্গে দেশের মর্যাদা রক্ষা করা প্রতিটি সৈনিকের দায়িত্ব।

‘কাজেই আমি মনে করি যে আমাদের দেশের সেনাবাহিনীর পদাতিক ব্রিগেড ও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পদাতিক ব্যাটালিয়নকে মেকানাইজড হিসেবে রূপান্তরিত করা হয়েছে। আজকে পতাকা উত্তোলন করা হলো, যা অনেক সম্মানের। এ কথাটা সবসময় মনে রাখতে হবে। আমরা চাই, আমাদের দেশটা এগিয়ে যাবে।

‘জাতীয় নিরাপত্তা ও ঝুঁকি মোকাবিলায় এই মেকানাইজড ইউনিটগুলোর সংযোজন একটা নতুন মাত্রা আমাদের জন্য যুক্ত হলো, যা আমাদের দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কাজেই সবাই এর মর্যাদা রেখে এগিয়ে যাবেন।’

দেশে ধারাবাহিক গণতন্ত্র রয়েছে বলে সব ক্ষেত্রে সার্বিক উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। বাংলাদেশ আজকে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।’

‘জনগণের পাশে সশস্ত্র বাহিনী’

সিলেট ও নেত্রকোণায় বন্যার সময়ে দুর্গম এলাকাতে সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে যাওয়ায় ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের যেকোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকে জনগণের পাশে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী থাকে।’

এ বিভাগের আরো খবর