জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ইউক্রেন ইস্যুতে ১১তম জরুরি অধিবেশনে রাশিয়ার বিপক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ। ইউক্রেনের টেরিটরিয়াল ইন্টিগ্রিটি: ডিফেন্ডিং দ্য প্রিন্সিপলস অফ দি ইউএন সনদ’ শিরোনামে জাতিসংঘের প্রস্তাবে বাংলাদেশের এই ভোটের ব্যাখ্যা দিয়েছে ঢাকা।
১০ অক্টোবর জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আব্দুল মুহিত তার ভাষণে রাশিয়াবিরোধী অবস্থানের ব্যাখ্যা দেন।
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের টেরিটরিয়াল ইন্টিগ্রিটি: ডিফেন্ডিং দ্য প্রিন্সিপলস অফ দি ইউএন সনদ’ শীর্ষক প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ। আমরা তা করেছি কারণ আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মান এবং সব বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তিসংক্রান্ত জাতিসংঘ সনদের উদ্দেশ্য এবং নীতিগুলো অবশ্যই সবার জন্য সর্বত্র, কোনো ব্যতিক্রম ছাড়াই মেনে চলতে হবে।’
‘আমরা এটাও বিশ্বাস করি যে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমানার মধ্যে যেকোনো দেশের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করা উচিত। এই প্রসঙ্গে আমরা বিশেষভাবে ইসরায়েলের মাধ্যমে ফিলিস্তিনসহ এবং অন্যান্য আরব ভূমি দখলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনুরূপ অভিন্ন অবস্থান নেয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের সংঘাতের ধারাবাহিকতা এবং এর বৈশ্বিক আর্থসামাজিক প্রভাব নিয়ে বাংলাদেশ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা বিশ্বাস করি যুদ্ধ বা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার মতো বৈরিতা কোনো জাতির জন্য মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। সংলাপ, আলোচনা ও মধ্যস্থতা হলো সংকট ও বিরোধ সমাধানের সর্বোত্তম উপায়।’
‘বহুপাক্ষিকতাবাদে দৃঢ় বিশ্বাসী হিসেবে, আমরা জাতিসংঘ এবং এসজি অফিসের পাশে দাঁড়াব এবং আমাদের সাধ্যমতো তাদের সমর্থন করব। আমরা আহ্বান জানাই যে, সর্বস্তরের জনগণের আস্থা ও আস্থা অর্জনের জন্য জাতিসংঘ এবং এসজি অফিসকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে এবং সবার প্রত্যাশা পূরণে কাজ করতে হবে।
তাই বাংলাদেশ, বিরোধের সব পক্ষকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সব বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তাকে বিপন্ন করতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে কূটনৈতিক সংলাপ পুনরায় শুরু করার জন্য ইতিবাচক ভূমিকা পালন করার জন্য আহ্বান জানায়।’
‘মানবজাতির মঙ্গলের জন্য যুদ্ধের অবসান এবং অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করার জন্য আমাদের কাজ করা উচিত। জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে, শান্তি ও উন্নয়নের জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।’
বৃহস্পতিবার সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জাতিসংঘে রাশিয়ার বিপক্ষে দেয়া ভোটের এই ব্যাখ্যা জানায়।