গালি দেয়াকে কেন্দ্র করে বগুড়ার শাজাহানপুরে ১০ বছরের শিশু বুলবুল হোসেন বিজয়কে হত্যা করা হয়েছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন সুজন সরকার নামে এক যুবক।
বুধবার বিকেলে আদালত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
২৮ বছর বয়সী সুজন শাজাহানপুর উপজেলার লক্ষ্মীকোলা গ্রামের জাফর সরকারের ছেলে। স্থানীয় একটি ইটভাটায় তিনি শ্রমিকের কাজ করেন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন শাজাহানপুর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রউফ।
জবানবন্দির বরাতে আব্দুর রউফ জানান, নিহত বিজয় ও আসামি সুজনের বাড়ি পাশাপাশি। গত ৫ অক্টোবর বিজয় সুজনের বাড়িতে যায়।
তারা বসে গল্প করার এক পর্যায়ে ফুটবল খেলার উদ্দেশে সুজনের বাড়ি থেকে বের হয়। একসঙ্গে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় বিজয় আসামি সুজনের মাকে জড়িয়ে গালি দেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিজয়ের গলাচেপে ধরে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন সুজন। পরে বিজয়ের মরদেহটি লক্ষ্মীকোলা গ্রামের একটি কবরস্থানের পাশে বাঁশবাগানে রেখে নিজ বাড়িতে চলে যান তিনি।
পুলিশ পরিদর্শক বলেন, ‘বিকেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে সুজন শুনতে পারে- বিজয়কে সবাই খুঁজছে। এতে সে ভয় পেয়ে যায়। পরে ওই রাতেই বিজয়ের মরদেহটি দেখতে আবার সেই বাঁশবাগানে যায়।’
জবানবন্দিতে সুজন জানান, বাঁশবাগানে বিজয়ের মরদেহটি পড়ে থাকতে দেখে বাড়ি থেকে ধারালো চাকু এনে এর গলাসহ হাত-পায়ের রগ কেটে দেন তিনি।
এ সময় বিজয়ের মরদেহটি গুম করার উদ্দেশে পাশের বন্ধ থাকা এসএএম ইটভাটার চুল্লির ভেতর ফেলে দেন সুজন। পরে চুল্লির ঢাকনা বন্ধ করে আবার বাড়িতে চলে আসেন।
পরে বন্ধ ইটভাটার পাশ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সেই চাকু উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রউফ জানান, টানা ৬ দিন নিখোঁজ থাকার পর মঙ্গলবার ভোরে লক্ষ্মীকোলা গ্রামের সেই ইটভাটার চুল্লি থেকে বিজয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে বিষয়টির তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
তদন্তে সুজনকে সন্দেহ হলে গত মঙ্গলবার তাকে আটক করা হয়। পরে সেদিন রাতেই বিজয়কে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি।
পরদিন বুধবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন সুজন।