আদি বুড়িগঙ্গা দখলমুক্ত করে সেখানে নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় কালুনগর স্লুইস গেইট এলাকায় আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রম উদ্বোধন শেষে মেয়র এ কথা বলেন।
মেয়র তাপস বলেন, ‘আজকে আমরাসহ সরকারের আরও কয়েকটি সংস্থা উপস্থিত হয়ে এই কালুনগরের আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের সীমানা চিহ্নিত করে স্থায়ী সীমানা পিলার স্থাপনের কাজ শুরু করেছি। আমরা আশাবাদী এই কাজ সফলভাবে শেষ করে আদি বুড়িগঙ্গাকে তার পূর্বের রূপে ফিরিয়ে নিয়ে আসব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা লক্ষ্য করেছেন এখানকার অনেক জায়গা দখল হয়ে গেছে। তাই আমি আপনাদের বলে যাচ্ছি দখলদাররা যত শক্তিশালীই হোক না কেন আমরা সব দখল উচ্ছেদ করবো। আমরা আদি বুড়িগঙ্গার সিএস ও অন্যান্য মানচিত্র অনুযায়ী নদীর সীমানা নির্ধারণ করছি। আপনারা লক্ষ্য করেছেন এখনকার একটি ১০ তলা ভবনের একটি অংশ নদীর সীমানায় পড়েছে আমরা সে অংশ ভেঙ্গে ফেলব, আগামী বুধবার আমি আবার এই জায়গা পরিদর্শন করব এবং দেখব কাজ সঠিকভাবে এগোচ্ছে কিনা।’
মেয়র তাপস বলেন, ‘এখানে দখলমুক্ত করে আমরা এমনভাবে নকশা করব যাতে এখানে মানুষ হেঁটে, সাইকেল চালিয়ে, খোলামেলা জায়গায় বিনোদন উপভোগ করতে পারে। অতীতে নদীর যে অববাহিকা ছিল আমরা এখানে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করব।’
মেয়র বলেন, ‘গতকালই প্রধানমন্ত্রী একনেকে আমাদের চারটি খালের প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন। ধাপে ধাপে সব খালেই আমরা কাজ করব। এই খালের প্রথমে আমরা দুই হাজার ৭০০ মিটারের কাজ ধরেছি। এটা শেষ করে বাকি অংশের কাজ ধরব। এভাবেই একদিন ঢাকাবাসী একটা বাসযোগ্য নগর পাবে।
এ সময় মেয়র নগরের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখনও শহরে বৃষ্টিপাত হচ্ছে যার কারণে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব এখনও রয়েছে। তবে আমি বলতে পারি তুলনামূলক ভাবে দক্ষিণ সিটিতে ডেঙ্গু এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অক্টোবরের ১০ তারিখে পুরো ঢাকায় ৬৪২ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে তার মধ্যে দক্ষিণ সিটিতে শনাক্ত হয়েছে মাত্র ৪০ জন।
‘ডেঙ্গু নিধনে আমাদের যেসব কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে তার কারণে আমি মনে করি আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি।’
এর আগে মেয়র তাপস সুইচগেট এলাকায় এসে সীমানা পিলারের স্থানগুলো ঘুরে দেখেন। এরপর একটি পিলার স্থাপন করে কাজের উদ্বোধন করেন। এ সময় মেয়র সবাইকে আইন ও ম্যাপ অনুসারে কাজ করার নির্দেশ দেন।
তবে কালুনগর স্লুইস গেইট এলাকায় বেড়ি বাধের মোহাম্মাদপুর এলাকায় বাসিন্দারা বলছে, এই সীমানা নির্ধারণ করে মূলত দখলদারদের বৈধতা দেয়া হচ্ছে। সিরাজুল আলম নামের একজন নিউজবাংলাকে বলেন, আমরা ছোটবেলায় দেখেছি এই বেড়িবাঁধের ঐ পাশটা পুরোটাই নদীর ছিল। বেড়িবাঁধ দেয়াই হয়েছিল নদীর পানি থেকে শহরকে বাঁচানোর জন্য। ফলে বাধের ঐ পাশের যা যা স্থাপনা হয়েছে সবই দখল করে হয়েছে। গত ২০ বছর বাঁধের ঐ পাশটা দখল হতে হতে এখন নদী হরিয়ে খালে পরিণত হয়েছে। আর নদীর জায়গায় সীমানা পিলার দিয়ে এখন সেই দখলদারদের বৈধতা দেয়া হচ্ছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, ঢাকা জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলামসহ অন্যান্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।