বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গোপন কক্ষে ‘ডাকাত’ ঠেকাতে না পেরে গাইবান্ধায় ভোট বন্ধ

  •    
  • ১২ অক্টোবর, ২০২২ ১৪:২৬

গত ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেয়া নির্বাচন কমিশন বারবার বলছিল, তারা ভোটে অনিয়ম রুখতে বদ্ধপরিকর। অনিয়ম হলে ভোট বন্ধ করে দেয়া হবে, এই ঘোষণা আগেই ছিল। বর্তমান কমিশনের অধীনে প্রথম ভোট হয় গত ১৫ জুন। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনসহ শতাধিক ইউনিয়ন পরিষদে সেই ভোটের আগে আগে বেশ কিছু এলাকায় নির্বাচন স্থগিত করা হয় আওয়ামী লীগের প্রার্থী বা তাদের সমর্থকদের আচরণে। তবে ভোট চলার দিন নির্বাচন স্থগিত করার ঘটনা এই প্রথম ঘটল।

গোপন কক্ষে ‘ডাকাত’ রুখতে না পেরে ৫১ কেন্দ্রে ভোট স্থগিতের পর গাইবান্ধা-৫ আসনের ভোটই বন্ধ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘আমাদের কাছে মনে হয়েছে ভোটগ্রহণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। একটি পক্ষ বা একজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ভোট প্রভাবিত করতে পারছেন। আমাদের দৃষ্টিতে মনে হয়েছে-সুষ্ঠু নির্বাচন গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় আমরা ৫১টি ভোট কেন্দ্র বাতিল হয়ে যাওয়ার পর আইন কানুন পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিলাম।’

সিইসি জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ আইনের ৯১ অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশনকে ভোট বন্ধের ক্ষমতা দেয়া আছে। যদি কমিশনের পক্ষে মনে হয় ভোট সঠিকভাবে হচ্ছে না, তখন যে কোনো কেন্দ্রে বা পুরো এলাকায় ভোট বন্ধ করে দিতে পারবে কমিশন।

গত ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেয়া নির্বাচন কমিশন বারবার বলছিল, তারা ভোটে অনিয়ম রুখতে বদ্ধপরিকর। অনিয়ম হলে ভোট বন্ধ করে দেয়া হবে, এই ঘোষণা আগেই ছিল। বর্তমান কমিশনের অধীনে প্রথম ভোট হয় গত ১৫ জুন। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনসহ শতাধিক ইউনিয়ন পরিষদে সেই ভোটের আগে আগে বেশ কিছু এলাকায় নির্বাচন স্থগিত করা হয় আওয়ামী লীগের প্রার্থী বা তাদের সমর্থকদের আচরণে। তবে ভোট চলার দিন নির্বাচন স্থগিত করার ঘটনা এই প্রথম ঘটল।

বুধবার সকাল থেকে গাইবান্ধা-৫ আসনে উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার পর বিভিন্ন কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ আসতে থাকে।

গাইবান্ধায় ভোটকেন্দ্রে কী হচ্ছে, সেটি নির্বাচন কমিশনে বসেই দেখেন কর্মকর্তা ও কমিশনাররা

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে ভোটারের পরিচয় শনাক্তের পর গোপন কক্ষে থাকা ব্যক্তি নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে দেয়ার অভিযোগ আসতে থাকে। নির্বাচন কমিশন একাধিকবার এই ব্যক্তিদের ‘ডাকাত’ উল্লেখ করে বলেছে, ডাকাত ঠেকানোই তাদের চ্যালেঞ্জ।

তবে এই ডাকাত ঠেকানো যায়নি। ১৪৫টি কেন্দ্রে স্থাপন করা এক হাজারের বেশি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ করা ফুটেজ ঢাকায় বসেই পর্যবেক্ষণ করে নির্বাচন কমিশন। এরপর একে একে ৫১টি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়।

এর মধ্যে নৌকার প্রার্থী মাহমুদুল হাসান রিপন ছাড়া বাকি চার জন জাতীয় পার্টির এ এইচ এম গোলাম শহীদ রনজু, কূলা প্রতীকে বিকল্পধারা বাংলাদেশের জাহাঙ্গীর আলম, আপেল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ (আপেল) ও ট্রাক প্রতীকে আরেক নির্দলীয় প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

ভোট চলার সময় অনিয়মের অভিযোগ এনে নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী চার প্রার্থী একযোগে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন

দুপুরের আগে আগে সিইসি বলেন, ভোটের পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এর ঘণ্টা দুয়েক পরে তিনি ভোট বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানান।

কাজী হাবিবুল আউয়ার বলেন, ‘আমরা পরিশেষে এ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সমগ্র কন্সটিটিউয়েন্সি… পুরো নির্বাচন… গাইবান্ধা-৫ নির্বাচনী এলাকার ভোট কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছি। সে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হয়েছে (রিটার্নিং কর্মকর্তাকে)।

‘ওখানে এখন আর ভোট হচ্ছে না। পরবর্তীতে বিধি-বিধান অনুযায়ী কী করতে হবে দেখব। কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেব।’

এক আসনে এই দশা, ৩০০ আসনে কী হবে

একজন গণমাধ্যমকর্মীর এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘এটা সময় বলে দেবে। একটি আসনে ঠিক হয় নাই, তিন শ আসনে ঠিক হবে না এটা বলা সমীচীন হবে না। এই আসনের নির্বাচন দিয়ে আমরা কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে পারব। আমাদের জন্য আগামীর নির্বাচন যাতে আরো সুন্দরভাবে করতে পারি, সেটার একটা দিক নির্দেশনা এখান থেকে পাওয়া যাবে। ভবিষ্যতেরটা ভবিষ্যতে দেখা যাবে।’

পুনঃতফসিল হবে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আইন অনুযায়ী। আমরা বলেছি, যে বিধিবিধান আছে আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব, সেটি অবশ্যই জানানো হবে।’

বন্ধ করাটাই সমাধান কি না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘আমরা শুধু আপনাদের ফ্যাক্টটা জানিয়েছি। নির্বাচনে ম্যালপ্রাকটিস হয়েছিল। আমরা বন্ধ করে দিয়েছি।’

ইভিএমের কারণে এই দশা কি না-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইভিএম নয়, এখানে কতগুলো হিউম্যান এলিমেন্টস এখানে। যান্ত্রিক কিংবা মেকানিকাল সমস্যা আমরা দেখি নাই। মেশিন কাজ করছে না, তা নয়।

‘প্রিজাইডিং অফিসার আছে, পোলিং অফিসার আছে, তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। ইভিএম কোনো সমস্যার সৃষ্টি করে নাই।’

এই দশা কার জন্য হয়েছে- জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘কোনো প্রার্থী কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী- তাদের কোনো প্রভাব থাকততে পারে। তদন্ত ছাড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া অনুসন্ধান ছাড়া বলা যাবে না।’

যাদের কারণে ভোট বন্ধ করা হলো তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কাদের কারণে এটা হয়েছে এখনো আমরা সিদ্ধান্তে আসতে পারি নাই। এটা এখন বলা যাবে না। আমাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। নির্বাচন কেন বন্ধ হয়েছে আমরা পরীক্ষা নীরিক্ষা করে দেখব।’

এ বিভাগের আরো খবর