একুশে পদকপ্রাপ্ত ফটো সাংবাদিক আফতাব আহমেদ হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির সাজা বহাল রেখেছে হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো.বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারানুম মিতি, তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আঞ্জুমান আরা বেগম, কাজী শামসুন নাহার ও সায়েম মো.মোরসেদ। আর আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো.মিজানুর রহমান খান ও আরিফুল ইসলাম।
মৃতুদণ্ড বহাল থাকা পাঁচ আসামি হলেন নিহত আফতাব আহমেদের গাড়িচালক মো. হুমায়ুন কবীর মোল্লা, বিলাল হোসেন কিসলু, হাবিব হাওলাদার, মো. রাজু মুন্সী ও মো. রাসেল।
একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক আফতাব আহমেদকে হত্যার দায়ে পাঁচ আসামিকে ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন ঢাকার চার নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সরদার।
এরপর মামলায় ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি তিন আসামি আপিল আবেদন করেন। ওই আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বুধবার রায় দেয়।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৬ সালে একুশে পদক পাওয়া আফতাব আহমেদ ইত্তেফাকের জ্যেষ্ঠ আলোকচিত্রী ছিলেন। ২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাতে নিজের বাসায় খুন হন ৭৮ বছর বয়সী এই সাংবাদিক। পরদিন সকালে পুলিশ তার হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে। নিহতের শ্যালক মনোয়ার আহমদ সাগর ওই ঘটনায় রামপুরা থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
তদন্ত চলাকালে আফতাবের গাড়ি চালক মো. হুমায়ুন কবীরসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে আসামি হাবিব, বিল্লাল ও হুমায়ুন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। জবানবন্দিতে তারা বলেন, টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করার সময় বাধা দেয়ার কারণেই আফতাবকে হত্যা করা হয়।
২০১৪ সালে ঢাকা তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েস আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন।
১৯৬৪ সালে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার মাধ্যমে আফতাব আহমেদ সাংবাদিকতা শুরু করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ ও পরবর্তী সময়ে অনেক দুর্লভ ছবি তোলেন। আলোকচিত্র সাংবাদিকতায় অনন্য অবদানের জন্য ২০০৬ সালে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন।
রায়ে পরিবারের সন্তুষ্টি
হাইকোর্টের রায় শুনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক আফতাব আহমেদের মেয়ে আফরোজা আহমেদ বন্যা।
রায়ের পর আদালত চত্বরে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। আলহামদুলিল্লাহ রায়টা আমরা পেলাম। আদালত যে রায় দিয়েছেন এ জন্য আমরা সন্তুষ্ট। হাইকোর্ট যে রায়টা দিলো এটা যেন ভবিষ্যতে বহাল থাকে এবং কার্যরকর হয় আমি সে কামনা করছি।’