বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কমলাপুর: ধর্ষণের পরও নিরাপত্তা নিয়ে বিকারহীন সবাই

  •    
  • ১১ অক্টোবর, ২০২২ ১৬:২৬

ধর্ষণের অভিযোগ উঠে শনিবার প্রথম প্রহরে। নেত্রকোণা থেকে ট্রেনে আসা এক তরুণীকে দাঁড়িয়ে থাকা অন্য একটি ট্রেনের বগিতে তুলে ধর্ষণের তথ্য মিলেছে। পরে মেয়েটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ঘটনাটি জানাজানি হয়। রোববার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত স্টেশনটিতে অবস্থান করে নিরাপত্তার বিষয়ে জোর দিতে এতটুকু উদ্যোগ দেখা যায়নি কারও মধ্যে। বরং টিকিট কালোবাজারি ও বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা আদায়েই তৎপরতা চোখে পড়েছে।

রাজধানীর কমলাপুর রেল স্টেশনে থেমে থাকা একটি ট্রেনে এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার পরে স্টেশনে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ধর্ষণে জড়িত সন্দেহভাজন ছয়জনের মধ্যে স্টেশন এলাকা থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে রেলওয়ে পুলিশ।

গ্রেপ্তার পাঁচজনের মধ্যে সুমন ও নাঈম কমলাপুর স্টেশনেরই পরিচ্ছন্ন কর্মী যারা ট্রেন ধোয়া মোছার কাজ করেন; নাজমুল রেলের নিরাপত্তা বাহিনী আরএনবি অস্থায়ী ক্লিনার; রোমান প্রকাশ কালু ও আনোয়ার স্টেশনের পানি বিক্রেতা।

অপর সন্দেহভাজন ইমরানের স্টেশনের বাইরে পানির দোকান আছে।

এ ঘটনায় ইতোমধ্যে সুমন ও নাঈম ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন আদালতে। আর ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে মেডিক্যাল পরীক্ষা শেষে আদালতের মাধ্যমে তার পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়েছে।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে তিন ধরনের নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করে। এগুলো হলো রেলওয়ে পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) ও আনসার বাহিনী।

এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে রয়েছে আরএনবির নিরাপত্তা চৌকি। সেখানে সর্বক্ষণ একজন ডিউটি অফিসার থাকার কথা। তবে রোববার রাত ১০টার দিকে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।

আরএনবির নিরাপত্তা চৌকি থেকে একটু সামনেই এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে স্পষ্ট যে এই ধর্ষণের অভিযোগের পরও স্টেশনের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে না।

আরএনবির নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুললে তারা বলছে, যাত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পুলিশের। তাদের দায়িত্ব হচ্ছে রেলের মালামাল দেখা।

এক নম্বর প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে ঘটেছে ধর্ষণের ঘটনাটি। এর পাশেই আছে রেলের নিরাপত্তা বাহিনী আরএনবির চৌকি

ধর্ষণের অভিযোগ উঠে শনিবার প্রথম প্রহরে। নেত্রকোণা থেকে ট্রেনে আসা এক তরুণীকে দাঁড়িয়ে থাকা অন্য একটি ট্রেনের বগিতে তুলে ধর্ষণের তথ্য মিলেছে। পরে মেয়েটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ঘটনাটি জানাজানি হয়।

রোববার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কমলাপুর রেল স্টেশনের নিরাপত্তার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে নিউজবাংলা।

টার্মিনালে ঢুকতেই ভেতরে সামনের ফুটপাতে প্রথমে চোখে পড়ে ভাসমান কিছু নারী-পুরুষ গাঁজা ও ড্যান্ডি সেবন করছে। তার বিপরীত পাশেই পুলিশের গাড়ি। তবে তারা চুপ।

টার্মিনালের ভেতরে প্রবেশ মুখে দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মের সঙ্গেই পুলিশ তথ্যকেন্দ্র। সন্ধ্যায় সেখানে তিন জন পুলিশ সদস্য দেখা গেলেও রাত আটটার পর আর কেউ ছিলেন না। তথ্যকেন্দ্রে তখন বসে থাকতে দেখা যায় সাধারণ যাত্রীদের।

এক নম্বর টার্মিনালের ভেতরে ঢুকে একে একে আট নম্বর টার্মিনাল ঘুরে একজন আনসার সদস্য বাদে অন্য কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে টার্মিনালে দেখা যায়নি।

টার্মিনালের উত্তর পাশে সংরক্ষিত এলাকার পুরাটা ঘুরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। অগুনতি ভবঘুরে নারী-পুরুষকে টার্মিনালে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়।

প্ল্যাটফর্মে প্রকাশ্যে নেশা

স্টেশনে মালামাল টানার কাজ করা কুলিদের একজন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুলিশ টার্মিনালের মুখে বক্সে বসে থাকে। রাতে টার্মিনালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ থাকে না। ট্রেন না থাকলে সবাইকে রাত ১২টায় টার্মিনাল থেকে বের করে দেয়। তখন কুলি আর ক্লিনাররা থাকে। এই ক্লিনাররা প্রায় সবাই নেশা করে, স্টেশনের ভেতরেই করে। এরা সব খারাপ পোলাপাইন।’

তিনি বলেন, ‘সাড়ে আট হাজার টাকা বেতনে কে কাজ করবে এই জমানায়? মিটারগেজের ক্লিনারগুলোই সব থেকে খারাপ। এইগুলো বেশিরভাগ চোর। ভাদাইম্মার মতো ঘোরা পোলাপানগুলো এখানে অঘটন ঘটিয়ে পালায়। এখানে তারা কেউ পারমানেন্ট না। এদের কোনো ঠিকানা নেই। একটা ছবি দিয়েই কাজে ঢুকে যায় এরা।’

রাতে স্টেশন চত্বরে প্রকাশ্যে চলে নেশা

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রেল পুলিশ, রেলের নিরাপত্তা বাহিনী এরা আসলে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে মাথা ঘামায় না। যে যাত্রীরা বিনা টিকিটে আসে তাদের ধরে টাকা নিয়ে নিজেদের পকেটে ঢুকাবে।

‘বিশেষ করে আরএনবির লোকেরা ব্লাকে টিকিট বিক্রির কাজ করে। এটাই এখানে আরএনবি আর পুলিশের কাজ। কে ধর্ষণ হলো, কার মাল চুরি হলো এটা তাদের দেখার বিষয় না। উত্তর পাশের বিশাল সংরক্ষিত এলাকায়ও কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোক খুঁজে পাবেন না।’

মামলার পর কী করল পুলিশ

ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলার সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে চাইলে কমলাপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদাউস আহম্মেদ বিশ্বাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় পাঁচজন আসামি গ্রেপ্তার আছে। এর মধ্যে দুইজন ১৬৪ এ জবানবন্দি দিয়েছে। ভিকটিমের মেডিক্যাল হয়েছে এবং কোর্টের মাধ্যমে তার পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়েছে। পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

যাত্রীদের নিরাপত্তায় প্ল্যাটফর্মের কোথাও কোনো পুলিশ সদস্যকে দেখা না যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জনবল সংকটের বিষয়টি তুলে ধরেন।

বলেন, ‘আমাদের প্রয়োজনের তুলনার পুলিশ সদস্য অনেক কম। আটটা প্ল্যাটফর্মে ২০ জন দরকার, আমরা দিতে পারি তিন জন। আবার অভ্যর্থনার ওখানে সব সময় পুলিশ প্রয়োজন। তাই প্ল্যাটফর্মে পুলিশ দেখেন নাই। মাঝে মাঝে ঘুরে এসে অভ্যর্থনার ওখানে বসে।

ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার পাঁচ জনের মধ্যে তিন জন কমলাপুরে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন। দুই জন ট্রেনে পানি বিক্রি করেন

‘আমাদের ৪৩ জন কনস্টেবল আছে। এসআই আছে পাঁচজন। এর মধ্যে এক জন আগামীকাল চলে যাবেন। এএসআই আছে এক জন। টিএসআই আছে তিনজন। আর পরিদর্শক আমি একা। পরিদর্শক তদন্ত ও অপারেশন দুই পদই খালি।

‘আমার অফিসার লাগে ২৪ জন আছে নয় জন। এই ২৪ জন থাকলেও তারা ছুটি কাটাতে পারবে না। তাই অফিসার প্রয়োজন ৩০ জন।’

চলন্ত ট্রেনেও নিরাপত্তায় ঘাটতি

নিরাপত্তার পাশাপাশি ছয়টা ট্রেনে টিজে পার্টি (চলন্ত ট্রেনের নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ সদস্য) পাঠাতে হয় কমলাপুর রেলওয়ে থানা থেকে। এক ট্রেনে দুইজন কনস্টেবল ও একজন অফিসার পাঠানোর কথা থাকলেও সব সময় সেটা সম্ভব হয় না।

ফেরদাউস আহম্মেদ বিশ্বাস বলেন, ‘অনেক সময় আমরা তিনজন দিতে পারি না। একজন টিজে পার্টির ডিউটি করে আসলে তাকে তো আবার পাঠানো যায় না। তার রেস্ট প্রয়োজন। দুই শিফটে ডিউটি করলে আমার কনস্টেবল লাগে ২৪ জন। অফিসার লাগে ১২ জন। প্ল্যাটফর্মে লাগে চারজন অফিসার। কনস্টেবল তিনজন করে দিলে লাগে ছয়জন। থানায় ডিউটি অফিসার লাগে দুইজন। সেন্ট্রি তিনজন। গ্যারেজে তিনজন। এছাড়া আরও অনেক ডিউটি করা লাগে।

‘সব মিলিয়ে যত কনস্টেবল আছে তার তিনগুণ প্রয়োজন। আমরা আট ঘণ্টা ডিউটি কল্পনাই করতে পারি না। আমরা ১২ ঘণ্টা করে ডিউটি করি। আমাদের যে জনবল আছে সেই অনুযায়ী সিকিউরিটি দেই।’

রাতে প্লাটফর্ম থাকে পুরোপুরি অরক্ষিত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দেখাও যায় না

বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা আদায় আর টিকিট কালোবাজারিতে বেশি মনযোগের যে অভিযোগ পাওয়া গেছে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে সব অস্বীকার করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। দায় দেন আরএনবি সদস্যদের।

তিনি বলেন, ‘পুলিশ দৌড়িয়েই কুল পায় না। এর পরে থাকে ভিআইপিদের নিরাপত্তার চাপ। এগুলো করবে কখন?

‘এই অভিযোগগুলো এখানে অন্যদের আছে। টিকিট চেক করে আরএনবি। পুলিশ চেক করে না। এমন কোনো দিন নাই আরএনবির অভিযোগ না আসে আমাদের কাছে।’

অস্থায়ী পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগে অসাবধানতা

বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে মেসার্স ফেমাস ট্রেডার্স ইজারা নিয়ে রেলের পরিচ্ছন্নতার কাজ করে। স্টেশনে তাদের ৫০ জন কর্মী কাজ করে। এখানে কাজ করা অন্তত ৮ জনের সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলার।

চাকরি পেতে কী করতে হয় জানতে চাইলে একজন বলেন, ‘ছবি, আর নাম ঠিকানা দিলেই চাকরি পাওয়া যায়।’

যার ঠিকানা নাই তিনি কী দেন?

জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানে কাজ করে এমন অনেকে আছে অন্য একজনকে নিয়ে আসছে তার জিম্মায়। অনেক দিন কাজ করার কারণে বিশ্বাস অর্জন হয়েছে তাই নাম ঠিকানা নিয়ে চাপ নেই। তার কথাতেই চাকরি হয়।’

আবার নিয়োগ দেয়া হয়নি- এমন মানুষদের দিয়েও কাজ করানো হয় বলে জানান সেই পরিচ্ছন্নতা কর্মী। তিনি বলেন, ‘এখানে যারা কাজ করে তারা একেকজন একেক এলাকা থেকে এসেছে। অনেকে আছে আজকে কাজ করল, কালকে তার কোনো খবর থাকে না। এখন কাজ তো চালিয়ে নিতে হবে। এ কারণে স্টেশনে কেউ ঘোরাফেরা করছে তাকে বলে তুই কাজ করবি। এভাবে অনেকে কাজ করে। অনেকে এক দুই দিনের জন্য কন্ট্রাকে কাজ করে।’

ধর্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে ক্লিনারদের আরেকজন বলেন, ‘যখন ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে তখন ডিউটি সবার শেষ। রাত তখন একটা বা দেড়টা। আমরা অনেকে চলে গেছি তখন। আর আমরা এক নম্বর টার্মিনালে যাইও না। ওই মেয়েটা আসছে ওকে ফুসলিয়ে ট্রেনের ভেতরে নিয়ে গেছে। পরে নিরাপত্তার লোক উদ্ধার করছে। রাতে আমাদের সবাইকে থানায় নিয়ে গেছিল পুলিশ। পরে আমাদের ছেড়ে দিছে।’

তিনি বলেন, ‘নাঈম (গ্রেপ্তার পাঁচজনের একজন) ছেলেটা একটু পাগল টাইপের। ও মাঝে মাঝে কাজ করত। কোম্পানি ওকে পারমানেন্ট হিসেবে কাজ দেয়নি। যেদিন লোক শর্ট থাকে ওকে ডাক দিলে কাজ করে যায়। এখানে যে বেতনে কাজ করতে হয় এই বেতনে কাজ করে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকা যায় না। তাই অনেকে এখানেই (টার্মিনালে) ঘুমায়।’

নিয়োগ কর্তৃপক্ষের বিকার নেই

ক্লিনিংয়ের তিনজন ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেসার্স ফেমাস ট্রেডার্সের ম্যানেজার গোলাম মোস্তফা প্রথমে স্বীকার করেননি।

তিনি বলেন, ‘এই তিন জনের একজনও আমাদের লোক না। গত চার তারিখে আমি এদের গাঁজা খেতে দেখে বের করে দিয়েছি।’

তিনজনের মধ্যে একজন আপনাদের এখানে অনিয়মিত কাজ করেন এমন তথ্য প্রমাণ আছে জানালে তিনি কোনো উত্তর দেন নাই।

তিনি বলেন, ‘সাড়ে আট হাজার টাকা বেতনে আমার স্টাফ আছে প্রায় ১৪০ জনের মতো। তারা সবাই কি খারাপ?’

টার্মিনালে গিয়ে ক্লিনারদের নেশা করতে দেখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুই একটা এমন থাকতে পারে। আমার জানা মতে নাই। আপনারা শুধু আমাদের উপরে চাপাচ্ছেন। স্টেশনে আসেন, টোকাই পোলাপান কী পরিমাণে আছে দেখেন। এখানে যারা জব করতেছে, খারাপ পোলাপান ভালো করার চেষ্টা করতেছে, এখন এদের নিয়ে সবাই টানাটানি করতেছে। এরা খারাপ পথ থেকে ভালো পথে আসতেছে এদের নিয়েই যত সমস্যা। স্টেশনে দেখেন কত হাজার টোকাই পোলাপান আছে। ওইগুলো নিয়ে তো কেউ মাথাব্যথা করে না।’

চাকরি দেয়ার সময় কর্মীদের নাম-ঠিকানা যাচাই না করার বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবার বায়োডাটা আমাদের কাছে জমা আছে। আমরা ওদের জন্মনিবন্ধন, ছবি রাখি।’

যারা চাকরি করতেছে তাদের অনেকের জন্মনিবন্ধন নাই- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যাদের জন্মনিবন্ধন নাই, তাদের হয়ত গার্জিয়ান থেকে অনুমতিপত্র লাগে।’

আরএনবির দাবি, যাত্রীর নিরাপত্তার দায় পুলিশের

এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে আরএনবির নিরাপত্তা চৌকি থাকার পরও সেখানে ধর্ষণের ঘটনা কীভাবে ঘটল- জানতে চাইলে বাহিনীটির চৌকির ওসি নূর মোহাম্মদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার অফিসের সামনে না, একটু পাশে। ইলেকট্রিক অফিসের সামনে। আমাদের লোক ছিল বলেই তো তাড়াতাড়ি ওদের ধরতে পারছে। এমনিতেও আমাদের জনবল সংকট। আমরা এই জনবলে নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছি। প্ল্যাটফর্মে আমাদের তিনজন ডিউটি করে।’

রোববার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আরএনবির কোনো সদস্যকে টার্মিনালে না দেখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা সিসি ক্যামেরা দেখলেই বুঝবেন।’

বিনা টিকিটের যাত্রীদের থেকে টাকা আদায় ও টিকিট কালোবাজারিতে ব্যস্ত থাকার অভিযোগ নিয়ে কিছু বলতে রাজি হননি নূর মোহাম্মদ। বলেন, ‘এগুলো মিডিয়ার কাছে মন্তব্য করার বিষয় না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে দেবেন। আমরা ব্যবস্থা নেব।’

যে টার্মিনালে আপনার অফিস সেই টার্মিনালে সিকিউরিটি দিতে পারেন না তাহলে আটটা টার্মিনালে কীভাবে সিকিউরিটি দেবেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজ হলো রেলের মালামাল প্রোপার্টিজ দেখা। নিরাপত্তার কাজ পুলিশের। আমরা এই ধর্ষণের ঘটনার পুলিশকে সাহায্য করেছি।’

নিরাপত্তা নিয়ে ক্ষুব্ধ খোদ স্টেশন ম্যানেজার

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার নিজেই স্টেশনের নিরাপত্তা নিয়ে ক্ষুব্ধ। স্টেশন থেকে নিজের মোবাইল ফোন চুরির বিষয়টি তুলে ধরে তিনি এ কথা বলেন।

আরএনবির চৌকির পাশেই ধর্ষণ হলে রেলের নিরাপত্তা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার নিজের কক্ষ থেকেই আমার মোবাইল চুরি হয়েছে এটা সবাই জানে। তখন আমি পুলিশকে বলেছি আমার রুম থেকে মোবাইল চুরি হলে রেলের নিরাপত্তা কোথায়? তারা বলে তাদের জনবল সংকট।

‘সত্য কথা বলতে রেলে নিরাপত্তার ঘাটতি আছে। পুলিশও ঠিকমতো থাকে না। আমরা অনেকবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে চিঠি দিয়েছি। আমাদের চিঠি দেয়া ছাড়া আর কিছু করার নাই।’

রেলের নিরাপত্তার নামে পুলিশ ও আরএববির সদস্যদের বিনা টিকিটের যাত্রীদের থেকে টাকা নিয়ে নিজেদের পকেট ভারি করা ও ব্লাকে টিকিট বিক্রির অভিযোগ জানালে মাসুদ বলেন, ‘এ রকম অভিযোগ যাত্রীরা আমার কাছে দেন।’

এ বিভাগের আরো খবর