মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের দ্রুত সার্কসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাভুক্ত দেশে পাঠাতে ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মাহমুদুল হাসান রেজিস্ট্রি ডাকযোগে স্বরাষ্ট্র সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক এবং শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার বরাবর এ নোটিশ পাঠান।
এতে বলা হয়, সার্ক, বিমসটেক, আসিয়ান রাষ্ট্রগুলোতে ভাগাভাগী করে রোহিঙ্গাদের পাঠাতে হবে। ১০ দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ১২ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছে। প্রতিবছর প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গা সন্তান গ্রহণ করছে। এই রোহিঙ্গাদের প্রতিপালন করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি বছর প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা খবর হচ্ছে । বাংলাদেশের জনগণের কষ্টার্জিত অর্থ রোহিঙ্গাদের জন্য খরচ করা হচ্ছে।
এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি অনুযায়ী তিনটি শর্তের যেকোনো একটি পূরণ করলে কোনো নির্যাতিত জনগোষ্ঠীকে অন্য রাষ্ট্র আশ্রয় দিতে পারে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় এই যে, বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের ক্ষেত্রে উল্লিখিত আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি মানা হয়নি।
নোটিশে বলা হয়, প্রথমত, বাংলাদেশ ১৯৫১ সালের শরণার্থীবিষয়ক কনভেনশন ও ১৯৬৭ সালের প্রটোকলের স্বাক্ষরিত রাষ্ট্র নয়। তাই বাংলাদেশ আইনগতভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বাধ্য নয় । দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গারা স্বাধীনতাকামী জনগোষ্ঠী নয় । তারা স্বাধীনতার জন্য কোনো সংগ্রামে লিপ্ত নয়। তাদের কোনো প্রবাসী সরকার নেই । তাই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী অন্য কোনো রাষ্ট্রের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের অধিকারী নয় । তৃতীয়ত, রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে আঞ্চলিক কোনো সংস্থা যেমন সার্ক, বিমসটেক, আসিয়ানের কোনো চুক্তি নেই । এসব কারণে এককভাবে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে পারে না ।
এতে বলা হয়, এ অবস্থায় বাংলাদেশ কোনোভাবেই এককভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে পারে না । আঞ্চলিক সংস্থাগুলোকে এই রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব নিতে হবে । এক্ষেত্রে যে রাষ্ট্রগুলো আয়তনে বড় তাদেরকে বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থী নিতে হবে। এটাই আন্তর্জাতিক রীতি।